কুমিল্লায় খণ্ড খণ্ড মিছিলে সমাবেশস্থলে জড়ো হচ্ছে হাজারো নেতাকর্মী

0
কুমিল্লায় খণ্ড খণ্ড মিছিলে সমাবেশস্থলে জড়ো হচ্ছে নেতাকর্মী

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ জেলা সংবাদদাতা: কুমিল্লায় বিএনপির পূর্বনির্ধারিত গণসমাবেশ শনিবার (২৬ নভেম্বর)। সমাবেশ ঘিরে উৎসবের নগরী হয়ে উঠেছে কুমিল্লায়। সমাবেশের একদিন আগে বৃহস্পতিবার(২৪ নভেম্বর) থেকেই নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখর সমাবেশস্থল মাঠ। চারদিক থেকে আসছে বিএনপি নেতাকর্মীদের খণ্ড খণ্ড মিছিল।

বৃহস্পতিবার বিকালে সরেজমিনে টাউন হল মাঠ ঘুরে দেখা যায়, কুমিল্লার লাকসাম উপজেলা বিএনপির  প্রায় ২ হাজার নেতাকর্মী প্রথমে টাউন হল মাঠে অবস্থান নেন। পরে চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার বিএনপির প্রায় দু’শতাধিক নেতাকর্মী টাউন হল মাঠে গেইটের এক পাশে অবস্থান নিয়েছেন। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নেতাকর্মীরা এক এক করে মিছিল নিয়ে সন্ধ্যায় টাউন হল মাঠে গণসমাবেশ সফল করতে অবস্থান নিয়েছেন ।

টাউন হল মাঠে সন্ধ্যায় সমাবেশস্থল কথা হয় কুমিল্লা পৌঁছানো নোয়াখালীর জেলা বেশ কয়েকজননেতাকর্মীদের সঙ্গে। তারা জানান, পরিবহন ধর্মঘট না থাকলেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নানা ভাবে সমাবেশে আসতে বাধা সৃষ্টি করেছে। তারপর ও সমাবেশ আসতে  পেরে ভালো লাগছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি ও সরকারে পতনেই তাঁদের সমাবেশের মূল লক্ষ্য বলে জানান।এদিকে সমাবেশের আগে কুমিল্লায় আসা নেতাকর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করেছেন কুমিল্লা মহানগর ও জেলা বিএনপি।

তাদের খাবার পরিবেশনের সেখানে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে নেতাকর্মীদের খাবার পরিবেশন করছেন দায়িত্বশীলরা। অন্যদিকে সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু তার নিজ বাসা প্রায় ৭৮ টি ফ্ল্যাটে প্রায় ৪ হাজার নেতাকর্মীদের জন্য থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। সেখানে গিয়ে দেখা যায়,নেতাকর্মীদের জন্য রাতের চলছে রান্না । তবে ছয় জেলা বাইরে বিভিন্ন জেলা থেকে কেউ কেউ আবার শহরের বিভিন্ন হোটেল ও কমিউনিটি সেন্টারেও অবস্থান নেন।

বিভিন্ন নেতার অনুসারীরা রঙ-বেরঙের টি-শার্ট ও ক্যাপ (টুপি) পরে মিছিলসহ আসেন গণসমাবেশস্থলে। মিছিলে বহন করা হয় নিজ গ্রুপের নেতা এবং দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি।কুমিল্লা জেলা বিএনপির কয়েকজন নেতার সাথে আলাপ করে জানা গেছে, বিভাগের চাঁদপুর .ফেনী নোয়াখালী থেকে বৃহস্পতিবার রাতেই প্রচুরসংখ্যক নেতাকর্মী এসেছেন। এদের একটি অংশ সমাবেশস্থলে এসেছেন, বাকিদের কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন স্থানে ও আশপাশ এলাকায় রাখা হয়েছে।

শুক্রবার সকালে তারা মিছিলসহ তারা সমাবশেস্থলে এসে যোগ দেবেন। এছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভাগের বেশ কয়েকজন নেতা এবার  দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীরা শোডাউন করে সমাবেশে আসার প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন। এক রঙের টিশার্ট ও ক্যাপ পরিয়ে নিজেদের অনুসারীদের সমাবেশে এনে কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করবেন তারা।দলীয় সূত্র জানা যায়, খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, তারেক রহমানের ওপর থেকে মামলা প্রত্যাহার, সংসদ বিলুপ্ত করে সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি এবং নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিভাগে বিভাগে সমাবেশ করছে বিএনপি।এদিকে সমাবেশ সফল করতে কুমিল্লার বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সপ্তাহব্যাপী বিরামহীন প্রচারণা করেছেন স্থানীয় নেতারা।

অনেক জায়গায় প্রচারণায় গিয়ে হামলার শিকার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোথাও কোথাও হামলার ঘটনায় মামলাও হয়েছে।এছাড়া কুমিল্লা বিভিন্ন সড়কে সড়কে পুলিশি তল্লাশি শুরু অভিযোগ রয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা বলেন, বিভিন্ন  জেলার ও  উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা বাসে করে সমাবেশে আসার সময় রাস্তায় তাদের বাস আটকে তল্লাশি করছেন পুলিশ।চাঁদপুর কচুয়া উপজেলার বিএনপির নেতা শামীম চৌধুরী বলেন, ‘কচুয়া থেকে আসতে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ বাস আটকে তল্লাশি করেছে । মতলব উত্তর উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক নুরুল হক জিতু বলেন বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে হাজার হাজার নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেছে।

কুমিল্লা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান বলেন যে কোনো বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবে বিএনপি। এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। বাধা দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।’যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কুমিল্লা জেলা পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগীয়) মোস্তাক মিয়া বলেন সমাবেশ সফল করতে সকল প্রকার প্রস্তুতি এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। নগরীর প্রতিটি পয়েন্টে মাইক থাকবে। এছাড়া অন্তত আটটি স্থানে বড় পর্দায় সরাসরি সমাবেশের কার্যক্রম দেখা ও বক্তব্য শোনার ব্যবস্থা রাখা হবে। আমাদের প্রত্যাশা বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চলে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সমাবেশে আসবেন।

টাউন হলের সমাবেশ হবে স্মরণকালের বড় সমাবেশ। এরই মধ্যে আমাদের সকল নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here