প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ বিএনপির অন্যতম সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল যাকে বিএনপির ভ্যানগার্ড বলা হয়। অতীতের বিএনপির সকল আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্রদল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনে প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন্দ্রীয় কমিটি। ঢাকার পাশেই নারায়ণগঞ্জ সেই বিবেচনা করে আন্দোলন সংগ্রামকে জোড়ালো করতে রাজপথের ত্যাগী ও পরীক্ষিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করতে চায় কেন্দ্র।
আর সেই লক্ষ্যে আগামী নভেম্বর মাসেই এ কমিটি ঘোষণা করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা যায়।বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ চার বছর পর নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণা আসছে। নতুন কমিটি হবে বলেও হচ্ছে না। হঠাৎ করে নভেম্বর মাসের মধ্যেই আসছে জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নতুন কমিটির খবরে পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীরা দৌড়ঝাঁপ করছেন। তাঁরা লবিং-তদবিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন।নতুন কমিটিতে পদ পেতে যে যার সামর্থ মতো জোর লবিং শুরু করেছেন।
মাঠের ডিমান্ড অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি হবে। যদি ডিমান্ড অনুযায়ী সম্মেলনের প্রয়োজন হয় তাহলে সম্মেলন হবে।বিগত দিনের মতো এবারও বিবাহিত ও অছাত্র এদেরকে কমিটিতে স্থান দেওয়া হবে না। যারা মাঠের রাজনীতিতে থাকবে এবং হামলা মামলায় যারা নির্যাতিত তারাই ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে আসবে।তবে তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবী মাঠের রাজনীতিতে যারা থাকেন, বিগত দিনে একাধিক মামলা যাদের বিরুদ্ধে পাশাপাশি সংগঠন করতে গিয়ে বিভিন্ন ভাবে যারা হামলা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের নিয়েই যেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন করা হয়।
জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কার্যক্রম অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। মাঝে মধ্যে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী কিছু কর্মসূচী পালিত হলেও এসব কর্মসূচিতে সিনিয়রদের চাইতে জুনিয়র নেতাকর্মীদেরই বেশী উপস্থিতি দেখা যায়। এর কারণ হচ্ছে সিনিয়র অনেক নেতাই জায়গা করে নিয়েছেন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এমনকি মূল সংগঠন বিএনপিতে।নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান রনি কমিটি থাকা অবস্থায় জেলা যুবদলের সদস্য সচিব বনে যান।
জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহও আড়াইহাজার পৌরসভা বিএনপি’র সভাপতি বনে গেছেন।এরপর জেলা ছাত্রদলের ১ম সহ-সভাপতি আরিফুর রহমান মানিকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করে জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দীর্ঘ চার বছর পর ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটির অবস্থা বর্তমানে নাজুক। কারন জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম সজিব ছাত্রদলের চেয়ে যুবদলের ব্যানারে মিটিং মিছিল করছে।
এছাড়াও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীরা নিজ নিজ বলয় তৈরি করে জেলা ছাত্রদলের ব্যানারে মিটিং মিছিলে অংশগ্রহণ করছে।জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে আলোচনায় আছেন জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি সাগর সিদ্দিকী, সহ – সভাপতি সুলতান মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জুবায়ের আহমেদ জাবেদ, আড়াইহাজার উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জুবায়ের রহমান জিকো, রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নাহিদ হাসান ভূঁইয়া, ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান দোলনসহ আরও বেশ কয়েকজন।
এদিকে একই অবস্থা নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের কমিটিতেও নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি শাহেদ আহমেদ মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বনে গেছেন। আর সাধারণ সম্পাদক মমিনুর রহমান বাবু আর ছাত্রদলের রাজনীতি করবে বলে জানিয়েছেন। তিনি মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন। তারা দুজনেই বাধ্য হয়ে মহানগর ছাত্রদলের মিটিং মিছিল করতে হচ্ছে। কারন তারা এখনও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।তবে তাদের দাবি আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে জানিয়ে দিয়েছি যেন মহানগর ছাত্রদলের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করে নতুনদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা হোক।
যারা দীর্ঘদিন ধরে মহানগর ছাত্রদলের কমিটি থেকে আন্দোলন সংগ্রামে আমাদের সাথে থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তাদেরকে নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা হোক।মহানগর ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে আলোচনায় আছেন মহানগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মাগফুর ইসলাম পাপন, মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুর রহমান সাগর, কাজী নাহিসুল ইসলাম সাদ্দাম, রাহিদ শিকদারসহ আরও বেশ কয়েকজন।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৫ জুন মশিউর রহমান রনিকে সভাপতি ও খাইরুল ইসলাম সজীবকে সাধারণ সম্পাদক করে ১২ সদস্য বিশিষ্ট জেলা ছাত্রদলের অংশিক কমিটি ঘোষণা করেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন অর রশিদ মামুন ও সাধারন সম্পাদক আকরামুল হাসান।পরবর্তী দীর্ঘ প্রায় চার বছর পর গত ৩০ মার্চ আরিফুর রহমান মানিককে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও খাইরুল ইসলাম সজীবকে সাধারণ সম্পাদক করে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের ৫৯২ সদস্য বিশিষ্ট এই পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেন তাৎকালীন ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল।
আরও জানা গেছে, ২০১৮সালের ৫ জুন শাহেদ আহমেদকে সভাপতি ও মমিনুর রহমান বাবুকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর ছাত্রদলের আংশিক কমিটি অনুমোদন দেন তাৎকালীন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন অর রশিদ মামুন ও সাধারন সম্পাদক আকরামুল হাসান।পরবর্তীতে একই বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর ২২৫ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটির অনুমোদন করেছেন ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান।
