সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগের শীর্ষ পদে একাধিক প্রার্থী বির্তকিতদের বাদ দিতে সোচ্চার নেতাকর্মীরা

0
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগের শীর্ষ পদে একাধিক প্রার্থী বির্তকিতদের বাদ দিতে সোচ্চার নেতাকর্মীরা

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সম্মেলন ঘিরে কর্মী সমর্থকদের মধ্যে উৎসবমুখোর পরিবেশ বিরাজ করছে। ইতমধ্যে সম্মেলন সফল করতে প্রস্তুতিমূলক সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে, শীর্ষ পদের জন্য একাধিক প্রার্থী ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় ও থানা নেতৃবৃন্দের কাছে তাদের বায়োডাটা জমা দিয়েছেন। শীর্ষ পদের জন্য বির্তকিতরাও চালিয়ে যাচ্ছেন জোর তদবির।

কিন্তু কারা আসছেন নতুন নেতৃত্বে তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। বিতর্কিত, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীরা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়ে নিতে মোটা অংকের টাকা খরচ করেছেন এবং করছেন। এদিকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিতর্কিত, ভুমিদুস্য, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ পাইয়ে দিতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের দুই শীর্ষ নেতা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের বিলুপ্ত কমিটির শীর্ষ এক নেতার মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।

ফলে পাল্টা পাল্টি প্রস্তুতি সভাও হচ্ছে। দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে দুটি গ্রুপ কমিটির শীর্ষ দুটি পদ বাগিয়ে নিতে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সূত্রমতে, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সম্মেলন সফল করতে সবশেষ গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিকালে প্রস্তুতিমূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় মিজমিজি টিসি রোডস্থ থানাআওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মো. মজিবুর রহমানের বাসভবনে। ওই সভায় বক্তারা বলেন, বর্তমানে দলে অনেক হাইব্রিড নেতার আবির্ভাব ঘটেছে।

তাই কমিটি গঠনের পূর্বে নেতাকর্মীদের সিএস, আরএস দেখে কমিটি গঠন করতে হবে। সিদ্ধিরগঞ্জে মোট দশটি ওয়ার্ড রয়েছে। প্রত্যেকটি ওয়ার্ড থেকে ত্যাগীদের সমন্বয়ে কমিটি করতে হবে। যাদের পরিবার আওয়ামীলীগ করে তাদেরকে নিয়েই কমিটি গঠন করার পরামর্শ দেন নেতৃবৃন্দ। তারা আরো বলেন, কোনভাবেই যেন জামাত-বিএনপির কেউ দলে বা কমিটিতে প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

মজার বিষয় হলো, ভুমিদস্যু, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, একাধিক মামলার আসামী কমিটিতে আসতে পারবে কিনা তা নিয়ে কোন বক্তব্য নেই। অথচ এমন একটি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি কাজী শাহানারা ইয়াসমিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য চৈতালী চক্রবর্তী, মিরাজ বিল্লাহ, প্রধান বক্তা ছিলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ মজিবুর রহমান, বিশেষ বক্তা ছিলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব ইয়াছিন মিয়া।

অপরদিকে শিমরাইল মোড়ের আরেক চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী সিব্বির আহম্মেদ। তার বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে। সেও থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগের শীর্ষ পদ বাগিয়ে নিতে মাঠে নেমেছে। গত বছরের ১২ ফেব্রুয়ারী দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শিব্বির আহমেদকে সাংগঠনিক শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মহানগর স্বেচ্ছোসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল আহমেদ ও সাধারন সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল প্রধানের যৌথ সিদ্ধান্ত ক্রমে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নারায়ণগ মহানগর শাখার সকল প্রকার সাংগঠনিক কর্মকান্ড থেকে অব্যহতি প্রদান পূর্বক সংগঠন থেকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়।

এদিকে স্থানীয় আওয়ামী কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মীরা জানান, শিব্বির আহমেদ ও তার ভাই জসিম চার দলীয় জোট সরকারের আমলে বিএনপি দলীয় সাবেক সাংসদ গিয়াস উদ্দিনের ক্যাডার ছিলো। বিএনপির আমলে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে শিমরাইল মোড়ে সরকারী জমি দখল করে মার্কেটও নির্মাণ করেছেন এ দুই সহোদর। তাদের দখলধারীত্ব টিকিয়ে রাখেতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর মিটিং মিছিলে অংশ নিয়ে তারা চলে আসে আওয়ামী লীগের ছায়া তলে। এবং বিএনপির কিছু ক্যাডার নিয়ে গড়ে তোলে সন্ত্রাসী বাহিনী।

দলীয় সূত্রমতে, রাজু ও জহির সম্মেলন সফল করতে প্রস্তুতি সভা করছেন, আবার সিব্বিরও আলাদাভাবে প্রস্তুতি সভা করছেন। ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল জোড়া ভবন এলাকায় সদস্য সংগ্রহ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ও মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে ওই সভা অনুষ্ঠিত হলেও নেতৃত্ব দিয়েছেন বহুল বিতর্কিত সিব্বির আহম্মেদ। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার স্বেচ্ছাসেবক লীগ হাজী জহিরুল হক বলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটি বিলুপ্তি হয়ে যাওয়ায় নিজের অবস্থান ধরে রাখতে সাবেক সভাপতি জুয়েল হোসেন বিতর্কিতদের নিয়ে সভা করেছে। জুয়েলের প্রতি ত্যাগী নেতাকর্মীদের আস্থা না থাকায় তিনি নব্য আওয়ামীলীগদের দলে স্থান করে দিয়ে নিজের অবস্থান শক্ত করার জন্য মাঠে নেমেছে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এক স্বেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষ পদের জন্য সিভি জমা দেয়া নোমান হোসেন টুটুল বলেন, আমি আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান দীর্ঘ সময় দলের জন্য কাজ করেছি মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সাহিত্য সংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। এখন দল যদি মনে করে আমি যোগ্য তাহলে দিবে। কিন্তু বির্তকিত যেন কাউকে দেয়া হয়। অভিযোগ সম্পর্কে মহানগর স্বেচ্ছানেবকলীগের সাবেক সভাপতি জুয়েল হোসেন বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ স্বেচ্ছাসেবকলীগের আগে ওয়ার্ড কমিটি আসবে তারপর থানা কমিটি আসবে। এরকমই বলছেন নেতৃবৃন্দরা। আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার প্রসঙ্গে বলেন, আসলে মানুষ কত কথাই বলে ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here