হেফাজতের কাঁধে বসে নৈরাজ্য ও সহিংস তাণ্ডব চালাচ্ছে জামায়াত!

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ ডেস্ক রিপোর্ট : আদর্শিক বিরোধ থাকলেও ‘অরাজনৈতিক’ দাবিদার হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিতে সমর্থনকে রাজনীতির অংশ বলছে জামায়াতে ইসলামী। দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জাতীয় স্বার্থ এবং ইমান-আকিদার প্রশ্নে যে কর্মসূচি দেবে; জামায়াত তাতে সমর্থন করবে। অতীতেও করেছে। হেফাজত নেতারা বলেছেন, জামায়াতের সঙ্গে তাদের আদর্শিক পার্থক্য রয়েছে, কর্মসূচিতে সমর্থন চাওয়ার প্রশ্নই আসে না।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নেরেন্দ্র মোদির সফরের বিরুদ্ধে হেফাজতের বিক্ষোভ ও হরতালে সহিংসতায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সংসদে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এ সহিংসতায় বিএনপি ও জামায়াতের হাত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হরতালকে নৈতিক সমর্থন জানালেও সহিংস তাণ্ডবের দায় অস্বীকার করেছে জামায়াত। হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেছেন, তাদের কর্মসূচিতে জামায়াত ছিল না।

গোলাম পরওয়ার বলেছেন, যে কোনো ঘটনায় জামায়াতকে দায়ী করা প্রধানমন্ত্রীর পুরোনো রাজনৈতিক অভ্যাস। তার অধীনে অনেক নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে, তারা তদন্ত করে দেখুক কারা সহিংসতা করেছে। একটি ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত ছাড়াই জামায়াতকে দায়ীর মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করা হচ্ছে। অতীতে এর বহু প্রমাণ রয়েছে।

হেফাজতের হরতালকে যৌক্তিক বললেও সমর্থন জানায়নি বিএনপি। অতীতে হেফাজতের কর্মসূচি থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলতে দেখা গেছে দলটিকে। কিন্তু আদর্শিক মতপার্থক্য থাকার পরও জামায়াত সমর্থন দিচ্ছে। দলটির কর্মপরিষদের একজন সদস্য বলেছেন, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে যে দলই পথে নামবে, তাকেই সমর্থন করা হবে। ডান, বাম যে ঘরানার দলই সরকারের বিরুদ্ধে কার্যকর কর্মসূচি দেবে, জামায়াত তাতে সংহতি জানাবে। একই কারণে হেফাজতের কর্মসূচিতে সমর্থন, সহানুভূতি জানাচ্ছে।

 

নানা ইস্যুতে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসা হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হক বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব। তার প্রয়াত পিতা শায়খুল হাদিস আজিজুল হক দলের প্রতিষ্ঠাতা। এ দলটি ১৯৯৯ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের চারদলীয় জোটে ছিল। জামায়াতের বিরোধিতা করে তারা জোট ছাড়ে। ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটে যোগ দেয়। ব্লাসফেমি আইন প্রণয়নসহ পাঁচ দফা চুক্তি করে। পরে সমালোচনার মুখে ওই চুক্তি বাতিল করে আওয়ামী লীগ।

একাদশ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের জোট থেকে নির্বাচন করার চেষ্টা করেছিল খেলাফত। জামায়াতের সঙ্গে হেফাজতের এবং সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সম্পৃক্ততার কথা ২০১৩ সাল থেকেই শোনা যাচ্ছে তখন হেফাজত ১৩ দফা দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমে সংগঠনটি প্রথম আলোচনায় আসে। হেফাজতের সেই সময়কার দুই যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঈনুদ্দীন রুহি ও মুফতি মুহম্মদ ফয়জুল্লাহর সঙ্গে জামায়াত নেতাদের কথিত কথোপকথনের অডিও ‘ফাঁস’ হয়।

আহমদ শফীর মৃত্যুর পর কমিটি থেকে বাদ পড়ার পর এই দুই নেতা অভিযোগ তুলেছেন, হেফাজত জামায়াতের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। বর্তমান আমির মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীসহ বর্তমান নেতৃত্ব জামায়াতপন্থি। আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানীও একই অভিযোগ করেছেন। হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেছেন, কাউকে কোণঠাসা করতে জামায়াত-শিবির তকমা দেওয়া অনেক পুরোনো কৌশল।

ক’দিন আগেও বলা হতো- হেফাজত নাকি সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। কিছু মিডিয়াও তা লিখত। সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয় থাকলে তো পাখির মতো গুলি করে হেফাজত কর্মীদের হত্যা করা হতো না। সূত্র- সমকাল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here