গুলশান কার্যালয়ে মারামারি ক্ষুব্ধ বিএনপির হাইকমান্ড

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ আসন্ন উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারকে ঘিরে গুলশানে চেয়ারপারসন কার্যালয়ের সামনে চার প্রার্থীর সমর্থকদের মারামারির ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিএনপির হাইকমান্ড। এ ঘটনায় শিগগিরই দলের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিএনপি।

গতকাল বিকালে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপির মতো সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সমর্থকদের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল গুলশান কার্যালয়ের সামনে। সেখানে প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে তা দুঃখজনক। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত শনিবার বিকালে গুলশান কার্যালয়ে ২৮ প্রার্থীর সাক্ষাৎকারকে ঘিরে প্রথম দফায় ঢাকা-৫ এর মনোনয়নপ্রত্যাশী নবীউল্লাহ নবী ও সালাহউদ্দিনের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি হয়।

এরপর শুরু হয় ঢাকা-১৮ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী এম কফিল উদ্দিন আহম্মেদ ও জাহাঙ্গীর হোসেন সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন। দুজনের মাথা ফেটে রক্ত বের হয়। কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও টঙ্গী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জানা যায়, সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে পার্লামেন্টারি বোর্ডের সদস্যরা এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সাক্ষাৎকারের শেষের দিকে বিএনপির হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়, যে ঘটনাটা ঘটল তা অনাকাক্সিক্ষত। আপনারা নিজেদের মধ্যেই মারামারি করতে পারেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে পারেন না। এখন গুলশান কার্যালয়ে এত নেতা-কর্মীর শোডাউন দেখা গেলেও আন্দোলন কর্মসূচিতে তারা কোথায় থাকেন? অনেকের ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় শিগগিরই তদন্ত কমিটি গঠন হবে।

যারা দোষী সাব্যস্ত হবেন, তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। এ প্রসঙ্গে ঢাকা-১৮ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী এম কফিল উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, আমার প্রায় ১৯ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। একজন ঢাকা মেডিকেলে। বাকিরা টঙ্গীসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিয়েছেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এ ঘটনার সময় আমরা ভিতরে ছিলাম। বাইরে সবার কর্মী-সমর্থকরা ছিলেন। কীভাবে এটা হলো তা বোধগম্য নয়। তবে এ ঘটনা অনাকাক্সিক্ষত, দুঃখজনক। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাক্ষাৎকার উপলক্ষে ঢাকা-৫, ঢাকা-১৮, নওগাঁ-৬ ও সিরাজগঞ্জ-১ এ চারটি আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দুপুর থেকেই গুলশান কার্যালয়ে মিছিল নিয়ে আসতে শুরু করেন।

তবে ঢাকা-১৮ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিন আহম্মেদ ও যুবদলের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী নিয়ে কার্যালয়ের আসেন। এ সময় নেতা-কর্মীদের হাতে ব্যানার, ফেস্টুন দেখা যায়। এ দুই নেতার কর্মী-সমর্থকরা কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় অবস্থান নিয়ে নিজ প্রার্থীর পক্ষে স্লোগান দেন। এক পর্যায়ে কফিল উদ্দিনের কর্মী-সমর্থকদের ওপর অতর্কিতভাবে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায় একদল যুবক। কফিল উদ্দিনের সমর্থকদের দাবি, এস এম জাহাঙ্গীরের লোকজন তাদের ওপর হামলা চালায়।

তবে জাহাঙ্গীরের পক্ষের নেতা-কর্মীরা দাবি করেন, তারা হামলা করেনি। এক পর্যায়ে এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হলে পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। লাঠিসোঁটা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আধা ঘণ্টা ধরে চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এতে অন্তত ১২ জন নেতা আহত হন। দুজনের মাথা ফেটে রক্ত পড়তে দেখা যায়। এ সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে উপস্থিত অন্য কর্মী-সমর্থকদেরও ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। পরে দলের সিনিয়র নেতারা পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।

খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনে। সাক্ষাৎকার শেষে কফিল উদ্দিন আহম্মেদ ও এস এম জাহাঙ্গীর কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছি। আমাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। একক প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে দলীয় যে কোনো সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নেব। নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ প্রসঙ্গে তারা বলেন, এ সময় আমরা কার্যালয়ের ভিতরে ছিলাম। বাইরে কী হয়েছে হাইকমান্ড খোঁজ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here