করোনায় মৃত্য মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ অনুষ্ঠানে মেয়রের প্রতি আহবান রাখলেন সেলিম ওসমান

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ  স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম ওসমান বলেছেন, করোনা এমন একটি রোগ যার এখনো পর্যন্ত কোন চিকিৎসা নেই। তবে আমাদের পবিত্র কোরানে এ রোগ থেকে বাচার যথেষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া আছে। আমাকে বাচতে হবে আমার জন্য যাতে পরিবারের সমাজের কোন ক্ষতি না।

নারায়ণগঞ্জে ৩০০ শয্যা হাসপাতাল আজকে ১৫০ শয্যা যেটা করোনা হাসপাতালে। এখানে কিছুই ছিল না। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শে আমরা আইসিইউ পেয়েছি, পিসিআর ল্যাব পেয়েছি। যার ফলে এই ভাইরাস যখন চলে যাবে তখন হয়তো হার্টের রোগীরাও বিনা চিকিৎসায় মারা যাবেন না। হাসপাতালটিতে এমন পরিস্থিতি হয়েছিল যেখানে দেখা গেছে আমি উপস্থিত থাকার পরেও লুটপাট হয়েছে। এসব কিছুর প্রতিবাদে একটি মানুষ ছিল যার মানুষ মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম। আমাকে সঠিক নির্দেশনা দেওয়ার মত একটি মানুষ ছিলেন যিনি আমিনুল ইসলাম।

আমার মুরুব্বি হিসেবে একজন ছিলেন তিনি আমার সাত্তার ভাই। আমাদের সদর এলাকা থেকে ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। অনেক বেচে থাকলেও আমরা একত্রে বসে দোয়া করতে পারছি না। আমাদের চিন্তা আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে নিয়ে। আপনারা জানেন আমার অনেক গুলো স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাথে সুসম্পর্ক আছে। ওরা লেখাপড়া করতে চায়। যাদের বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর বাবা বিদেশে আছে তারা কষ্টে আছে। এখানে আমাদের অনেকের মনে হতে পারে আমরা অনেক কষ্টে আছি। আমি বলবো আমরা কষ্টে নাই আমাদের সবার বয়স ৬০ বছরের উর্ধে আমরা এখনো আল্লাহর রহমতে বেচে আছি।

আমাদেরকে সাবধান হতে হবে। সচেতন হতে হবে, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। শুক্রবার ১০ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫ টায় বন্দর খেয়া ঘাট সংলগ্ন জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ডের উদ্যোগে করোনা মহামারিতে শহীদ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা সহ সদ্য প্রয়াত বীর মুক্তিযুদ্ধা যুদ্ধকালীন কমান্ডার আমিনুর রহমান এর স্মরণে আলোচনা দোয়া ও মিহাল মাহফিলে বীর মুক্তিযোদ্ধা এমপি সেলিম ওসমান এসব কথা বলেন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ইউনিট কমান্ডের উদ্যোগে জেলার সদর, বন্দর, আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ ও সোনারগাঁও উপজেলায় পৃথক পৃথক দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ডের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত বক্তব্য রাখেন জেলা ইউনিট কমান্ডের সাবেক কমান্ডার মেহাম্মদ আলী, নারায়ণগঞ্জ সদর উপেজলা নির্বাহীর কর্মকর্তা নাহিদা বারী, সদর উপজেলা ইউনিট কমান্ডের কমান্ডার শাহজাহান ভূইয়া জুলহাস, সাবেক কমান্ডার সামিউল্লাহ মিলন, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার নুরুল হুদা সহ দেড় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা দোয়ায় অংশ নিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশকে যখন লকডাউন করার তখন আমাদের এখানে সব খুলে দেওয়া হয়েছে।

যদি লকডাউন চালিয়ে যাওয়া হতো তাহলে দেখা যেত আমাদের পেটে ভাত জুটতো না। দুভিক্ষ দেখা দিতো। দুর্ভিক্ষ কি সেটা আমাদের তরুন প্রজন্ম বুঝবে না। যারা আমরা প্রবীন আছি তারা বুঝি দুভিক্ষ কি। যদি দুভিক্ষ দেখা দিত তাহলে করোনার থেকে না খেয়ে বেশি মানুষ মারা যেত। আমাদের অভ্যাসের কিছু পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের শ্রমিকদের বাচাতে হবে। ডাক্তার, পুলিশ, সাংবাদিক, তাদের মত আমাদের শ্রমিকরাও এক প্রকার যোদ্ধা যারা আমাদের বাচিয়ে রেখেছেন। আমাদের সবাইকে প্রথম নিজের জন্য এরপর পরিবারের জন্য এরপর আশেপাশের মানুষের জন্য কিছু করতে হবে। চিকিৎসা নিলে সুস্থ্য হয়ে যাবো নারায়ণগঞ্জের মানুষের এমন চিন্তাটাই সব থেকে বেশি ক্ষতির কারন হয়েছে।

সত্যিকার অর্থে আমাদের এখানে চিকিৎসা ব্যবস্থা তেমন ভাবে গড়ে উঠেনি। এর মধ্যে কেউ কেউ আবার দানবীর সাজার চেষ্টা করছেন। পত্রিকায় দেখি অমুক দল অমুক নেতা রাজনীতি করার চেষ্টা করছেন। রাজনীতি কিভাবে আগামীরা এমপি হবেন, কিভাবে চেয়ারম্যান হবে আমি ধিক্কার দেই তাদেরকে। যাদের রাজনীতির হেডলাইন পত্রিকায় দেখি। রাজনীতি বলে কিছু নাই। আমিও একটা দলের রাজনীতি করি। আমিনুল ভাইও একই দলের রাজনীতি করতেন। কিন্তু আমরা কখনোই রাজনীতি করার জন্য নারায়ণগঞ্জের মানুষের ক্ষতি করার চিন্তা করতে পারি নাই। আমাদের রাজনীতি একটাই ছিল নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন। আমরা জীবন আমি এখন উৎসর্গ করে দিয়েছি। মরতে পারি কিন্তু যেন নারায়ণগঞ্জের মানুষের বাচার ব্যবস্থা করতে পারি।

তিনি আরো বলেন, আমি সকল ব্যবসায়ীদের কাছে সহযোগীতা চেয়েছি। ইতোমধ্যে ২ কোটি টাকার ফান্ড জমা হয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করবো। নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীরাই হাসপাতালের ভেতরে সাড়ে ৫ হাজার স্কয়ার ফিট জায়গায় ৬ তলা ফাউন্ডেশনে ৩ তিন তলা একটি নতুন ভবন নির্মাণ করবো। আমি জেলা প্রশাসকের কাছে অনুরোধ করবো হাসপাতালের ভেতরে আমাদের ডাক্তারদে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। আবার যারা নিরাপত্তা দিবে তাদেরকেও পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা দিতে হবে।

আমি ব্যক্তিগত ভাবে নারায়ণগঞ্জ বার একাডেমী স্কুলে ডাক্তারদের থাকা খাওয়া ব্যবস্থা করে দিয়েছি। হাসপাতালে দুর্নীতির কারনে এখন আমাদেরকে রোগীদের খাবারও দিতে হচ্ছে। কারন টেন্ডারটা সঠিক ভাবে হয়নি। আমি আপনাদের সবার সহযোগীতা চাই। তিনি আরো বলেন, আপনারা সবাই নিজে সাবধান হোন আশেপাশের মানুষকে সাবধান করেন। আমরা কোরানীর হাট নিয়ে কি করবো। সেদিন একটি সভায় আলোচনা করা হলে সেটি নিয়ে তর্ক বিতর্ক হয়। অথচ আমাদের অনেকের ভিসা থাকার পরও করোনার কারনে ওমরা হজ্জে যেতে পারছি না। হজ্জ বন্ধ রাখা হয়েছে।

মহামারির কারনে সব ধর্মেই কিছু না কিছু বাধা আসছে। সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের প্রতি অনুরোধ রেখে তিনি বলেন, আমি মেয়রের কাছে অনুরোধ রাখবো ফুটপাতে যারা হকার আছে তাদেরকে আগামী ঈদ পর্যন্ত সুযোগ দেওয়া হোক। কারন কোন মানুষই পারে না কোন মানুষের অসুবিধা সৃষ্টি করতে। তবে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। যাতে করে তারা যত্রতত্র দোকান নিয়ে না বসতে পারে সে বিষয়টা কঠোর ভাবে খেয়াল রাখতে হবে। কারন কখন কি হবে আমরা কেউ জানি না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here