ভারতের সঙ্গে পানি চুক্তির বিষয়ের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাতেই সম্রাটকে গ্রেফতার: রিজভী।

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ জনগণের স্বার্থ জলাঞ্জলী দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভারতের সঙ্গে একতরফা চুক্তি করেছেন’ এমন অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার সাংবিধানিক শপথ ভঙ্গ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা হয়নি, একতরফাভাবে সবকিছু দিয়ে এসেছে।

রবিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ দাবি করেন। তিনি বলেন, চুক্তির বিষয়ে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাতে এতদিন পর সম্রাটকে গ্রেফতার দেখানোর নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে। সমুদ্র বন্দর, ফেনী নদীর পানি এবং জালানী সংকটময় দেশের গ্যাস ভারতের হাতে তুলে দেয়ার যে চুক্তি করা হলো, তা সুস্পষ্ট সংবিধান পরিপন্থী। চুক্তির ব্যাপারে সংসদসহ কোনো পর্যায়েই আলোচনা করেনি সরকার। তিস্তাসহ কোনো সমস্যার সমাধান করতে না পারলেও ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়েছে সরকার।

বিএনপির এই নেতা বলেন ভারত সফরের তৃতীয় দিনে গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীযুক্ত নরেন্দ্র মোদীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তিগুলোর খবর জেনে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। মনে হয়েছে এগুলো চুক্তি নয় যেন শেখ হাসিনা আরেকটি দাসখত দিলেন।

এর মাধ্যমে মুলত স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সমুদ্র বন্দর, ফেনী নদীর পানি এবং জ্বালানী সঙ্কটময় বাংলাদেশের গ্যাস ভারতের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও নিজেদের নিরাপত্তার কথা না ভেবে উপকূলীয় নজরদারির জন্য বাংলাদেশে রাডার স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তার বদলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পেয়েছেন ক্ষমতার মসনদে থাকার গ্যারান্টি আর ঠাকুর শান্তি পুরস্কার। তবে বাংলাদেশের জনগণের বদনসিব, বিনিময়ে বাংলাদেশ কিছুই পায়নি’ বলে উল্লেখ করেন রিজভী।

রিজভী বলেন, এই ফেনী নদীর পানির দামে কী ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতায় থাকাটা পাকাপোক্ত হলো? গত ১২ বছরে যা যা দিলেন তারপর আর বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের কিছু অবশিষ্ট থাকল? আসলে এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে জনগণ ও দেশের স্বার্থের কথা চিন্তা করতো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাতো রাতের অন্ধকারে বিনা ভোটে ক্ষমতা দখল করেছেন। তাই জনগণের প্রয়োজন নেই। দেশ বিক্রি করে হলেও ক্ষমতা তার প্রয়োজন। তাই সব দেশের প্রধানমন্ত্রীই বিদেশ সফরে কিছু না কিছু আনতে যায়। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে যান সবকিছু উজাড় করে দিয়ে আসতে!

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বিশাল লটবহর -লোক লস্কর নিয়ে ভারতে গিয়ে সবকিছু দিয়ে আসার প্রেক্ষিতে কবিগুরু রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের একটি কবিতার চরন যেন মিলে যাচ্ছে ‘যত চাও তত লও তরণী-পরে। আর আছে? আর নাই, দিয়েছি ভরে॥ এতকাল নদীকূলে যাহা লয়ে ছিনু ভুলে সকলি দিলাম তুলে থরে বিথরে এখন আমারে লহো করুণা করে। এ সময় নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে রিজভী আরও বলেন, নির্বাচনের নামে রংপুর-৩ আসনে প্রহসন হয়েছে আমরা এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করছি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক মুহাম্মদ মনির হোসেন প্রমুখ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here