প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি এককভাবে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করায় ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হয়েছে তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র দলগুলোর মধ্যে।বিএনপির ও সমমনা দলগুলোর নেতাদের সাথে কথা বলে যে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে তাতে শেষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১০-১২টি আসন মিত্র কিংবা সমমনা দলগুলোর জন্য ছেড়ে বাকি সব আসনেই দলীয় প্রার্থী দিতে পারে বিএনপি।
তবে এসব দলকে নিয়ে জোটবদ্ধ নির্বাচন হবে, নাকি আসনভিত্তিক সমঝোতা হবে- তাও এখনো চূড়ান্ত করেনি বিএনপি।দলটির নেতারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে বলেই মিত্র দলগুলোর অনেক শীর্ষ নেতার প্রত্যাশিত আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি।আর এটিই ক্ষুব্ধ করেছে বিএনপির দীর্ঘদিনের মিত্র হিসেবে পরিচিত কয়েকটি দলকে। আবার কোনো মিত্র দল মনে করছে আলোচনার মাধ্যমেই এসব বিষয়ের নিষ্পত্তি হওয়ার সময় ও সুযোগ একেবারেই ফুরিয়ে যায়নি।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সাথে নিয়েই এগুবে বিএনপি এবং এ জন্য দলের একটি কমিটিও কাজ করছে। ওদিকে নির্বাচনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতে ইসলামী তাদের আট দলীয় জোট নিয়ে আসন সমঝোতার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী সপ্তাহ নাগাদ তাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
কী বলছে বিএনপির মিত্ররা: সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রথম দফায় গত ৩ নভেম্বর ২৩৭ আসনের (পরে একটি স্থগিত করা হয়) প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করেছিলো বিএনপি। তখন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, পরে যথাসময়ে অন্যান্য আসনের প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। তিনি তখন বলেছিলেন, ‘আমাদের অ্যালায়েন্সের সঙ্গে যারা আছেন তাদেরগুলো এবং আমাদের দুই একটা ডিসিশন হবে, সেগুলো আমরা আরও পরে ঘোষণা করব। বাকিগুলো আমরা যথাসময়ে ঘোষণা করবো।
বিএনপির অবস্থান পরিবর্তন কেন:প্রথম দফায় প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর বিএনপির দিক থেকেই ইঙ্গিত ছিল যে তাদের মিত্র ও সমমনা দলগুলোকে বেশ কিছু আসন ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে দলটি।দলটির নেতাদের সাথে কথা বলে ধারণা পাওয়া গেছে যে, মূলত দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে বলে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা কিছু নেতাকে নির্বাচনে প্রার্থী করে ঝুঁকি নিতে চাইছে না দলের শীর্ষমহল। তবে এর পরিবর্তে তাদের নিয়ে কীভাবে এগোনো যাবে তা নিয়ে কাজ করছে দলের একটি কমিটি।
এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে বিএনপির দীর্ঘকালীন মিত্র লেবার পার্টি শুক্রবার সভা করে বিএনপির সাথে অগ্রসর না হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।‘এখানে প্রতীক কোনো বিষয় না। আমরা আমাদের প্রতীকেই থাকবো। বিএনপি একযোগে কাজ করলে আর কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়। কিন্তু বিএনপি কোনো আলোচনা না করেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে,’ লছিলেন দলটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ইরান। তবে হঠাৎ করেই বেশি আসনে করে দলীয় প্রার্থী দেওয়ার নীতি নেওয়ার পিছনে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করায় বিএনপির বিলম্বকেও দায়ী করছেন কোনো কোনো দলের নেতা।
তাদের মতে, জামায়াত সমমনা আট দলকে নিয়ে অগ্রসর হওয়ায় এখন আর কোনো ঝুঁকি নিতে চাইছেন না বিএনপির নীতিনির্ধারকরা, কেউ নিজ প্রতীকে জয়ী হয়ে আসতে না পারলেও যেন আসন হাত ছাড়া না হয় সেই ভাবনা হয়তো কাজ করছে তাদের মধ্যে।তবে দলটির সিনিয়র নেতা ও স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলছেন, নির্বাচনে জোট, প্রার্থী ও মনোনয়ন নিয়ে এসব সমস্যা খুবই স্বাভাবিক বিষয় বলে মনে করেন তারা। তিনি বলেন আমাদের একটি কমিটি এসব নিয়ে কাজ করছে। ধীরে ধীরে এসব সমস্যা কেটে যাবে। সবাইকে নিয়েই বিএনপি সামনের দিকে অগ্রসর হবে।





