চাঁদপুর-২ আসনে বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিভাজন চরম আকার ধারণ করেছে

0
চাঁদপুর-২ আসনে বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিভাজন চরম আকার ধারণ করেছে

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নিজস্ব সংবাদদাতা: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে চাঁদপুর-২ আসনে (মতলব উত্তর-দক্ষিণ) বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিভাজন চরম আকার ধারণ করেছে। এতে করে জামায়াত ইসলামীসহ বিরোধী দলীয় অন্যান্যরা স্বস্তিতে রয়েছে। এ আসনে বিএনপির পক্ষ থেকে ধানের শীষে মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডক্টর জালাল উদ্দিন।

এ ঘোষণার পর থেকেই অভ্যন্তরীণ বিভাজন আরও বেড়ে গেছে। বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিতরা প্রায়ই বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ, মশাল মিছিলসহ নানা ধরনের কর্মসূচি ডাকছেন। এ নিয়ে বিভক্তি ও উদ্বেগ কাজ করছে তৃণমূল পর্যায়ের বিএনপি কর্মীদের মধ্যেও। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগে থেকেই নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠ চষে বেড়িয়েছেন ছয়জন প্রার্থী। তারা সবাই নিজ নিজ পক্ষে মনোনয়ন পাওয়ার জোর দাবিদার ছিলেন। তারা হলেন- সাবেক প্রতিমন্ত্রী মরহুম নুরুল হুদার ছেলে জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হুদা, ঢাকা মহানগর উত্তর (ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ) ড্যাব এর সভাপতি সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ওবায়দুর রহমান টিপু, মতলব দক্ষিণের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এম এম শুক্কুর পাটোয়ারী এবং বাংলাদেশ মেডিকেলের মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শামীম আহমেদ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮ সালেও মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন তানভীর হুদা ও শুক্কুর পাটোয়ারী। কিন্তু সেই নির্বাচনে এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন পান ডক্টর জালাল উদ্দিন। বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করার পর থেকেই চাঁদপুরের এই আসনটিতে সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ ও মশাল মিছিলের মতো কর্মসূচি শুরু করেন তানভীর হুদার অনুসারীরা। একই দাবিতে মাঠে নেমেছে এম এ শুক্কুর পাটোয়ারীর গ্রুপ ও সরকার মাহবুব আহমেদ শামীমের গ্রুপও। নির্বাচনী মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে তানভীর হুদা, শুক্কুর পাটোয়ারী ও সরকার মাহবুব আহমেদ শামীমের অনুসারীরা প্রায় প্রতিদিনই (মতলব উত্তর-দক্ষিণ) উপজেলার কোনো না কোনো স্থানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন।

এছাড়াও সমর্থকরা মশাল মিছিল করে বিএনপির প্রার্থী ডক্টর জালাল উদ্দিনের মনোনয়ন বাতিলের দাবি করেছেন। অন্যদিকে ডক্টর জালাল উদ্দিনের সমর্থকরা মনে করছেন, যোগ্য প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে চারপক্ষই এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে পুরোদমে। ধানের শীষের মনোনয়ন পাওয়া ড. জালাল উদ্দিন বলেন, মনোনয়ন প্রদানের আগে চাঁদপুর ২ আসনের সকল প্রার্থীদের সাথে এক বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সকলকে মনোনয়ন প্রাপ্ত ব্যক্তির পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানান এবং আমরা সকলে মনোনীত ব্যক্তির পক্ষে থাকার প্রতিশ্রুতি দেই।

পরবর্তীতে আমাকে মনোনয়ন দেয়া হলে একাধিক প্রার্থী ধানের শীষের পক্ষে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে আমার সাথে একাত্মতা পোষণ করেছে। এছাড়াও আমি অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের হাতে-পায়ে ধরে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করার আহ্বান করে যাচ্ছি। তবে যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে তারা কেউ বিএনপির নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। অপরদিকে অন্যান্য দলের নিজস্ব প্রচার-প্রচারণা বিএনপির মধ্যে বিরূপ কোন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে না বলেও মনে করেন তিনি।

চাঁদপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হুদা বলেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যে কাউকে মনোনয়ন দিতেই পারে। তবে দল যদি এলাকার মানুষের মনের চাওয়াটাকে বুঝতে পারে, তবে অবশ্যই মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার কথা চিন্তা করবে। চাঁদপুর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এম এ শুক্কুর পাটোয়ারী বলেন, বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন তালিকায় চাঁদপুর-২ আসনে তৃণমূলের আশা পূরণ হয়নি।

আমি আশা করব, বিএনপির নীতি নির্ধারকরা চাঁদপুর-২ আসন রিভিউ করে আমাকে মনোনয়ন দিবেন, কারণ আমি তৃণমূল পর্যায়ে থেকে ছাত্রদলের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী দলের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলাম। রাজপথে রক্ত ঝরিয়েছি, হামলা মামলার শিকার হয়েছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here