প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মহেশপুর (ঝিনাইদহ)সংবাদদাতাঃ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর সারা দেশে জুলাই যুদ্ধে নিহত ও আহতের তালিকা তৈরী করেন নতুন সরকার। মহেশপুরে যাচাই বাচাই শেষে জুলাই যোদ্ধা হিসেবে ৩৯ জনের নাম গেজেটে চূড়ান্ত করা হয়।
কিন্তু ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে সম্মুখ ভূমিকা রেখে গুলিবিদ্ধ হয়েও জুলাই যোদ্ধা তালিকায় ঠাই হয়নি আব্দুর রাজ্জাকের। আব্দুর রাজ্জাক পৌর শহরের গাড়াবাড়ীয়া গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে। এদিকে গেটেজের ৩৯ জনের মধ্যে অনেকেই ভূয়া বলে অভিযোগ রয়েছে। জানাযায়, ৫ আগষ্ট সকালে ঝিনাইদহের মহেশপুরে পুলিশের সাথে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয় আন্দোলনকারীদের।
আন্দোলনকারীদের রুখতে গুলি ছুড়েন পুলিশ। এতে আন্দোলনকারীদের অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন। এসময় অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাকের হাতে ও কোমরের পিছন দিকে দুটি সটগানের গুলি লাগে। আব্দুর রাজ্জাকসহ গুলিবিদ্ধরা মহেশপুর হাসপাতালে গিয়ে গুলি বের করে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। দুপুরে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলে ফ্যাসিস্ট মুক্ত হয় স্বাধীন বাংলা। এরপর জুলাই যোদ্ধায় আহতের নামের তালিকা তৈরী শুরু হলে মহেশপুর পৌরসভা থেকে ফরম নিয়ে পূরণ করে সকল কাগজপত্রসহ মহেশপুর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কাছে জমা দেন আব্দুর রাজ্জাক।
যাচাই বাচাই শেষে জুলাই যোদ্ধা হিসেবে ৩৯ জনের নাম গেজেটে চূড়ান্ত করা হলেও ওই তালিকায় জায়গা হয়নি গুলিবিদ্ধ আব্দুর রাজ্জাকের। মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ার্ড বয় শাকিল বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে আব্দুর রাজ্জাক হাসপাতালে আসেন। হাতে ও কোমরের পিছন দিকে লাগা দুটি গুলি বের করে দেওয়া হয়। জুলাই যোদ্ধা তালিকায় থাকা আহত অমিত হাসান জানান, আব্দুর রাজ্জাক আমাদের সাথে আন্দোলনে ছিলেন। আন্দোলনের সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।
মহেশপুর পৌরসভার কর্মচারী মজনু জানান, হাসপাতালের রেজিস্ট্রারের ৪৮ নং ক্রমিকে আব্দুর রাজ্জাকের নাম থাকায় আমার কাছে ফরম দেওয়া হয়েছিলো। ফরমটি পুরণ করে জমা দেওয়ার জন্য আমি আব্দুর রাজ্জাকের কাছে পৌছে দিয়েছিলাম। আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে আমরা কয়েকজন মহেশপুর হাসপাতালে গিয়েছিলাম কিন্তু পুলিশ কেস বলে আমাদের চিকিৎসা দিতে অস্বকৃতি জানালে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে বাকবিতন্ডা হয়। এরপর চিকিৎসকরা আমাদের চিকিৎসা সেবা দেন।
হাসপাতালের রেজিষ্ট্রারে ৪৮ নং ক্রমিকে আহত হিসেবে আমার নাম রয়েছে। মহেশপুর পৌরসভা থেকে জুলাই যোদ্ধার ফরম সংগ্রহ করে সকল কাগজপত্রসহ আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে জমা দিই। এসময় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আমার কাছ থেকে প্রেসক্রিপশনের মুল কপি চেয়ে নেন। কিন্তু আহতদের তালিকা থেকে আমার নামটি বাদ দিয়ে দেওয়া হলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে আমি প্রেসক্রিপশেনর মুল কপিটি চাইলে তিনি আর ফেরত দেননি।
তবে চূড়ান্ত তালিকায় নাম থাকা ৩৯ জনের অনেকেই ভূয়া। প্রশাসনের সাথে যোগসাজসে অনেকেই এই সুবিধা নিয়েছে।উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাহমুদ বিন হেদায়েত সেতু বলেন, ডিসি অফিস থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আমার কিছু করার নেই। তার কাছ থেকে প্রেসক্রিপশনের মূল কপি নেওয়ার অভিযোগটি ভিত্তিহীন।





