ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন প্রস্তুতি নিন,দলের নেতা-কর্মীসহ দেশবাসীর প্রতি তারেক রহমানের আহ্বান

0
ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন প্রস্তুতি নিন দলের নেতা-কর্মীসহ দেশবাসীর প্রতি তারেক রহমানের আহ্বান

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন যাতে হয় সেই প্রস্তুতি নিতে দলের নেতা-কর্মীসহ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বুধবার (২৮ মে) বিকালে তারুণ্যের সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই আহ্বান জানান। এদিন বিকালে সাড়ে তিনটায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

এই সময় তুমুল করতালির মধ্যে নেতা-কর্মীরা তাদের প্রিয় নেতাকে অভিনন্দন জানালে হাত তুলে তাদের শুভেচ্ছা জানান তিনি। তারেক রহমান বলেন, “আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশের জনগণের সরাসরি ভোটে জবাবদিহিমূলক, জনগণের কাছে দায়বদ্ধ একটি সরকার দ্রুত দেখতে চাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে।

নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “নতুন প্রজন্মের প্রিয় ভাই-বোনেরা, আজকের এই সমাবেশ থেকে বলছি, প্রিয় দেশবাসী, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে যাতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তার প্রস্তুতি নিতে শুরু করুন। দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমি বলতে চাই, আপনারা জনগণের কাছে যান। তাদের প্রত্যাশা জানার চেষ্টা করুন, তাদের প্রত্যাশা বোঝার চেষ্টা করুন, জনগণের মন জয় করুন।

কারণ, জনগণই বিএনপির সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস। এরপর সমাবেশে উপস্থিতদের স্লোগান ধরিয়ে তিনি বলেন, “দিল্লি নয়, পিন্ডি নয়, নয় অন্য কোনো দেশ… সবার আগে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, প্রিয় সমাবেশ বলুন, প্রিয় দেশবাসী বলুন, দিল্লি নয় পিন্ডি নয়, নয় অন্য কোনো দেশ, সবার আগে বাংলাদেশ। তারেক রহমান অভিযোগ করেন আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে মনে হয় এরই মধ্যে টালবাহানা শুরু হয়েছে। কথিত অল্প সংস্কার আর বেশি সংস্কারের অভিনব শর্তের আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে আগামী নির্বাচনের ভবিষ্যৎ।তিনি বলেন, “জনগণ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে সংস্কারের আড়ালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভেতরে ও বাইরে কিছু ভিন্ন উদ্দেশ্য কাজ করছে।

তিনি বলেন, “পলাতক স্বৈরাচারের সময় আমরা দেখেছি, কীভাবে আদালতের রায় অবজ্ঞা করা হয়েছে। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, স্বৈরাচারের পরে যাদের কাছে মানুষ আইনের প্রতি সম্মান প্রত্যাশা করেছিল, তারাও সেই মানসিকতার পুনরাবৃত্তি করছে।তিনি অভিযোগ করেন, “ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করে আদালতের রায়ের প্রতি অবমাননা করা হয়েছে।

এটি আবারও স্বৈরাচারী মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ।দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন করেন, “যারা আদালতের নির্দেশকে অবজ্ঞা করে, তাদের কাছ থেকে আমরা কতটুকু সংস্কার আশা করতে পারি?তারেক বলেন নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান পুঁজি। গণতন্ত্রকামী জনগণ ও গণতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিপক্ষ বানানো উচিত নয়।

তিনি আরও বলেন, “যদি কেউ রাষ্ট্র পরিচালনায় থাকতে চান, তাহলে সরকার থেকে পদত্যাগ করে জনগণের কাতারে আসুন, নির্বাচন করুন। জনগণের রায় পেলে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিন।তারেক রহমান জানান, “নতুন প্রজন্মের প্রায় সাড়ে তিন কোটি ভোটার এখনও পর্যন্ত কোনো জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। পতিত পলাতক স্বৈরাচারের কাছে মানুষের অধিকার কিংবা নির্বাচন কখনও গুরুত্বপূর্ণ ছিল না।’

তিনি বলেন,তত্ত্বাবধায়ক সরকার অতীতে তিন মাসেই নির্বাচন করেছে, অথচ এখন ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও নির্বাচন নিয়ে কোনো দিনক্ষণ ঘোষণা নেই।ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরে তারেক বলেন, “বিএনপির আগামী দিনের রাজনীতি হবে নিরাপদ কর্মপরিবেশ, নতুন কর্মসংস্থান এবং বাস্তবায়ন ও দৃষ্টান্ত স্থাপনের রাজনীতি।তিনি জানান, ক্ষমতায় গেলে বিএনপি কর্মমুখী শিক্ষা, ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্পের বিকাশ, তথ্যপ্রযুক্তি-ভিত্তিক গ্রামীণ উন্নয়ন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি তৈরি, স্কুল-কলেজে কারিগরি ও তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা চালু, ক্রীড়া ও বিদেশি ভাষা শিক্ষার প্রসার, প্লাম্বিং-মেকানিক্স-মেডিকেল টেকনিশিয়ানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোর্স চালু এবং গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবায় হেলথওয়ার্কার গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে।

তিনি বলেন, “আমরা সরকারে না থাকলেও একটি দায়িত্বশীল গণতান্ত্রিক দল হিসেবে তরুণ প্রজন্মের সামনে বিএনপির কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরছি। ইনশআল্লাহ, আগামী জাতীয় নির্বাচনে জনগণ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিলে পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুবদলের সভাপতি এম মোনায়েম মুন্না। যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান এবং ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন এবং ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here