প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ জামায়াতে ইসলামীর সাথে ইসলামী আন্দোলনের রাজনৈতিক কোন আলোচনা হয়নি বলে উল্লেখ করেছেন চরমোনাই পীর সাহেব ও ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। জামায়াতে ইসলামীর সাথে সম্প্রতি হওয়া সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন মানবতার স্বার্থে সবার সাথে ঐক্য হতে রাজি আছে। তবে জামায়াতের আমীর ওই দিন অফিসিয়ালী চরমোনাই যায়নি।
রবিশালে ওনার একটা প্রোগ্রাম ছিল, সেখান থেকে সাক্ষাৎ করার জন্য তিনি চরমোনাই গিয়েছিলেন। যেহেতু তিনি একজন মেহমান হিসেবে সেখানে গিয়েছিন, তাকে শ্রদ্ধা- সম্মান ও আতিথেয়তা করেছি। তবে সেখানে কোন রাজনৈতিক আলোচনা হয়নি। সেখানে আমাদের শ্রদ্ধাভাজন আমীর বলেছেন, ইসলামের পক্ষে একটা বাক্স দিতে চাই। যদি ইসলামের পক্ষে একটা বাক্স দেই, তাহলে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খৃষ্টান সহ দেশের ৯২ শতাংশ লোক ইসলামের পক্ষে ভোট দেবে।
শনিবার (২৫ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের শিল্পকলা একাডেমীতে ইসলামী আন্দোলনের জেলা ও মহানগরের সম্মেলন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এনজিও’র কায়দায় নরম কথা বললে দেশ চলবে না। শাসকের কায়দায় কথা বলতে হবে। নরম নরম কথা বললে এদেশের মানুষকে শাসন করতে পারবে না। নরমও লাগবে গরমও লাগবে। তবে ইনসাফ ভিত্তিক নরম গরম লাগবে।
আর যদি জুলুম করেন বাংলাদেশের মানুষ আপনার বিরুদ্ধে আবারও আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়বে। ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানোর চেষ্টাও করবেন না। এটা করলে আপনারা ভুল করবেন। সংস্কার ব্যাতীত নির্বাচন হলে প্রশ্নবিদ্ধা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবাই শুধু নির্বাচন চায়। নির্বাচন চায়না এমন কোন রাজনৈতিক দল নেই। আমরা সাবই নির্বাচন মুখি। তবে নির্বাচন কবে দেবেন, কালকে? আগামীকাল যদি নির্বাচন দেন সেটা কি সুষ্ঠু হবে? গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হলে কি লাভ হবে।
সংস্কারের আগে যদি নির্বাচনে দেন সেই নির্বাচন তো প্রশ্নবিদ্ধ হবে। মানুষের আশা এবং আকাঙ্খার প্রতিফলন হবে না। বিচারে বিভাগের স্বাধীনতা চাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তন হওয়ার পরে অনেকের জামিন হয়ে যাচ্ছে। কোর্ট তো সেই আগের কোর্ট। জজ তো সেই আগের জজ আছেন। তাহলে এখন কিভাবে জামিন হচ্ছে। আবার অনেক আওয়ামী লীগের লোক গ্রেফতার হয়ে জামিনের জন্য মুভ করতে পারছেনা।
বিচারক কার ইশারায় বিচার করে। সরকারের ইশারায় এসব করে, এমনটা আমরা চাই না। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার চাই। বিএনপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপির সম্প্রতিকালের বক্তব্যের সাথে আগের বক্তব্যের মিল নেই। তারা আমাদেরকেও ফ্যাসিস্টের সহকারী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের আমলে বিতর্কিত কোন নির্বাচনে ইসলাম আন্দোলন অংশগ্রহণ করেনি। জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় নির্বাচনকে আমরা এক মনে করিনা।
বরং গত স্থানীয় নির্বাচনে সবাই অংশগ্রহণ করেছেন, কেউ নামে কেউ আবার বেনামে অংশগ্রহণ করেছেন, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সবাই অংশগ্রহণ করেছেন। আমরা সরাসরি ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। সেই নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর অনেকে চেয়ারম্যান হয়েছেন। বিএনপির হাজারো উদাহরণ করেছে যারা সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন অংশগ্রহণ করে নাই।
সুতরাং কেউ যদি মনে করে ইসলামী আন্দোলন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সহযোগি ছিল আমি মনি করি এটা তাদের তথ্যের ভুল রয়েছে। এই বক্তব্যটা দ্বিতীয়বার পর্যালোচনা করার দাবি জানাই। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলাম আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, ঢাকা বিভাগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, ইসলামী আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মুফতি মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ, জেলার সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ দ্বীন ইসলাম সহ প্রমুখ।