সাব্বির হত্যা মামলায় জাকির খান সহ ৮ জন খালাস, খুশিতে আনন্দ মিছিল 

0
সাব্বির হত্যা মামলায় জাকির খান সহ ৮ জন খালাস, খুশিতে আনন্দ মিছিল 

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ব্যবসায়ী সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলায় জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খান সহ ৮ জন খালাস পেয়েছেন। এই খবরে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা বিজয় মিছিল সহ মিষ্টি বিতরণ করেছে।মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মোমিনুল ইসলাম এই রায় দেন।

রায় ঘোষণার সময় জাকির খান সহ ৩ জন আসামি উপস্থিত ছিলেন। খালাস প্রাপ্ত ৮ জন হলেন -জাকির খান, জিকু খান, নাজির আহম্মেদ ওরফে নাজির, মোক্তার হোসেন ওরফে মোক্তার, জিকু খান, মামুন খান, জংগল ওরফে লিটন, মনিরুজ্জামান শাহিন ও মো. আবদুল আজিজ ওরফে বাচ্চু। তাদের মধ্যে মনিরুজ্জামান শাহিন ও আবদুল আজিজ ওরফে বাচ্চু মারা গেছেন। বিষয়টি  নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক কাইয়ুম খান বলেন, সাব্বির হত্যা মামলায় সবাই খালাস পেয়েছেন।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্র পক্ষের কৌঁসুলি আবুল কালাম আজাদ জাকির বলেন, সাব্বির হত্যা মামলায় ২১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত জাকির খান সহ ৮ জন আসামিকে খালাস দিয়েছে। এই মামলায় জাকির খানের নাম এজাহারে ছিলনা। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে জাকির খানের নাম দেওয়া হয়েছে। আসামি পক্ষের আইনজীবী রাজীব মন্ডল বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে সর্বমোট ৩৩টি মামলা আদালতে বিচারাধীন ছিল। এর মধ্যে ৩০টি মামলায় ইতিমধ্যে খালাস পেয়েছিলেন জাকির খান।

বাকি তিনটি মামলার মধ্যে দুটিতে জামিনে আছেন তিনি। আজ নারায়ণগঞ্জের ব্যাবসায়ী নেতা সাব্বির হত্যা মামলায় খালাস পাওয়ার পর তার মুক্তিতে আর বাধা নেই। আশা করি, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তিনি আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও সদর থানা বিএনপি যুগ্ন আহবায়ক দিদার খন্দকার বলেন, আমরা এই রায়ে খুশি হয়েছি। মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে আমাদের নেতা জাকির খান কে দীর্ঘ ১৭ বছর হয়রানি করেছে।

এই রায়ের মধ্য দিয়ে আজকে ঐ ষড়যন্ত্রকারীরা দাঁতভাঙ্গা জবাব পেয়েছে। এই খুশিয়ে আমরা মিষ্টি বিরতণ করেছি ও বিভিন্ন মসজিদে মসজিদে দোয়ার আয়োজন করেছি। এদিকে হত্যা মামলা থেকে বেকসুর খালাস পাওয়ার খবরে আদালতপাড়ায় আনন্দ মিছিল করছে ও মিষ্টি বিতরণ করেছে জাকির খানের নেতাকর্মীরা। প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার ।

এ হত্যাকান্ডের পর তৎকালীন জেলা বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব এবং নিহতের বড় ভাই তৈমুর আলম খন্দকার বাদী হয়ে সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নামে ফতল্লা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর মোট ৯ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়। পরবর্তিতে সিআইডির এএসপি মসিহউদ্দিন দশম তদন্তকারী কর্মকর্তা দীর্ঘ প্রায় ৩৪ মাস তদন্ত শেষে তিনি ২০০৬ সালের ৮ জানুয়ারী আদালতে ৮ জনকে আসামি করে চার্জশীট দাখিল করেন।

এতে মামলা থেকে সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন, তার শ্যালক জুয়েল, শাহীনকে অব্যাহতি দিয়ে সাবেক ছাত্রদল সভাপতি জাকির খান, তার দুই ভাই জিকু খান, মামুন খানসহ মোট ৮ জনকে আসামি উল্লেখ করা হয়। এ চার্জশিটে মামলার প্রধান আসামি গিয়াস উদ্দিনকে মামলা থেকে বাদ দেওয়ায় মামলার বাদী তৈমুর আলম খন্দকার চার্জশিটের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৪ জানুয়ারি আদালতে নারাজি পিটিশন দাখিল করেন।

নারাজি পিটিশনে তৈমুর আলম বলেছিলেন, ‘গিয়াসউদ্দিনই সাব্বির আলম হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক। গিয়াসউদ্দিন ও তার সহযোগীদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা একটি গোঁজামিলের চার্জশিট দাখিল করেছেন। এরপর থেকে ৫ বছরের অধিক সময় ধরে নারায়ণগঞ্জ বিচারিক হাকিম আদালতে (ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট) মামলার শুনানি চলে আসছিল।

গত ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে তৈমুর আলম খন্দকার আদালতে দাখিলকৃত না রাজি পিটিশনটি আবেদন করে প্রত্যাহার করে নেন। নারাজি পিটিশন প্রত্যাহারের কারণে সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন এখন আর মামলায় অভিযুক্ত নেই। ফলে সিআইডি ২০০৬ সালের ৮ জানুয়ারি আদালতে যে ৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছেন তার উপর ভিত্তি করেই মামলাটি পরিচালিত হয়েছে।

 
 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here