প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ উষ্ণতা লক্ষ্যমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি এবং ক্ষয়ক্ষতির স্বতন্ত্র তহবিলের দাবিতে বাংলাদেশ সরকারকে জোরালো অবস্থান নিতে হবে আসন্ন জলবায়ু সম্মেলন উপলক্ষে অধিকার ভিত্তিক নাগরিক সমাজের অভিমত ঢাকা, ১১ নভেম্বর, ২০২৩। আসন্ন জলবায়ু সম্মেলন (কপ ২৮) এ বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ১.৫ ডিগ্রিতে রাখার জোর পদক্ষেপ নেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারকে অবস্থান নেওয়ার দাবি জানিয়েছে অধিকার ভিত্তিক নাগরিক সমাজ।
আজ ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে তাঁরা এসব কথা বলেন। এছাড়াও ক্ষয়ক্ষতি বা লস এন্ড ড্যামেজের জন্য আলাদা স্বতন্ত্র একটি তহবিল গঠনেরও দাবি বাংলাদেশের জানানো উচিৎ বলে তারা অভিমত প্রকাশ করেন। কপ ২৮ জলবায়ু সম্মেলন: সরকার ও নাগরিক সমাজের অভিমত শীর্ষক সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে কোস্ট ফাউন্ডেশন, এন অর্গানাইজেশন ফর সোশিও ইকোনমিক ডেভেলামেন্ট [অঙঝঊউ], বাংলাদেশ ক্লাইমেট জার্নালিস্ট ফোরাম, ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক, সাউথ এশিয়া-বাংলাদেশ [ঈঅঘঝঅ-ইউ], সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট [ঈচজউ] কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ [ঈউচ], সেন্টার ফর রুরাল লাইভলিহুড [ঈঝজখ], ইক্যুইটি অ্যান্ড জাস্টিস ওয়ার্কিং গ্রুপ, বাংলাদেশ [ইক্যুইটিবিডি]), এলইডিআরএস, এলডিসি ওয়াচ।
ইক্যুইটিবিডি’র রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্সের সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমেদ, এবং এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এবং সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, মাননীয় সংসদ সদস্য। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক জিয়াউল হক ও মির্জা শওকত আলী, ওয়াটার কিপার্স’র শরীফ জামিল, সিপিআরডির মো. শামসুদ্দোহা, পিকেএসএফের ফজলে রাব্বি সাদেকী আহমেদ, সিএসআরএলের জিয়াউল হক মুক্তা, কানসা-বিডি’র সভাপতি রাবেয়া বেগমসহ আরও অনেকে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইক্যুইটিবিডি’র আমিনুল হক আমিনুল হক কপ ২৮ এর গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এই সম্মেলনে প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতি সংগ্রহ ও যাচাই করা হবে, আর এতে সেই চুক্তির অনেক লক্ষ্যমাত্রা পূরণের ব্যর্থতার চিত্র উঠে আসবে। তিনি উষ্ণতার লক্ষ্যমাত্র ১.৫ এর ভিতর রাখা এবং জলবায়ু অর্থায়নের লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় ধনী দেশগুলোর সমালোচনা করেন। তিনি লস এন্ড ড্যামেজের বিষয়ে একটি ঐকমত্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র এবং তার বন্ধৃ রাষ্ট্রগুলোর সমালোচনা করেন। জলবায়ু সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ দলের কাছে সম্মেলনে কয়েকি বিষয়ে জোর দেওয়ার সুপারিশ করেন, সেগুলো হলো: ১) কার্বন উৎগীরণকারী বড় দেশগুলোকে ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্য উদগীরনের লক্ষ্য নিয়ে তাদের জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা পুননির্ধারণ করতে হবে, ২) একটি স্বতন্ত্র লস এন্ড ড্যামেজ তহবিল গঠন করা, ৩) জলবায়ু অর্থায়নের একটি নতুন ব্যবস্থা যা হবে অনুদান নির্ভর, ঋণ নির্ভর নয় এবং অতি বিপদাপন্ন দেশগুলোকে রক্ষায় বিশেষ সহায়তা দিতে হবে।
সাবের হোসেন চৌধুরী ইউএনএফসিসিসি’র বর্তমান প্রক্রিয়ার বেশ কয়েকটি ঘাটতির কথা উল্লেখ করেন, যেমন- কোনও বিষেয়ে কোনও একটি দশ সম্মতি না দিলেই আর কোানও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। তিনি প্রক্রিয়াটি সংস্কারের সুপারিশ করেন, কারণ বিদ্যমান পরিস্থিতি বিশ্বকে একটি গভীর সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে এবং অর্জিত সাফল্য হ্রাস করছে। তিনি বলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ১.৫ ডিগ্রিতে রাখার লক্ষ্য পূরণের সাম্প্রতিক অবস্থার উপর বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে তথ্য সংগ্রহ খুব জরুরি। ব্যারিস্টার শামীম হায়দার বৈশ্বিক জলবায়ু আলোচনাকে বিশাল লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে সীমিত অর্জনসমৃদ্ধএকটি ডুবন্ত জাহাজ হিসেবে উল্লেখ করেন।
এর মূল কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এই সম্মেলনে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোতে খুব দায়সারাভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমাদের এমন সিদ্ধান্ত নিতে হবে যা সবাই গ্রহণ করবে। জিয়াউল হক বলেন, কার্বন নির্গমন হ্রাসকে সামনে রেখেই আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক বিকল্পগুলির উপর ভিত্তি করে জাতীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। ফজলে রাব্বি সাদেকী বলেন, জলবায়ু তহবিলের নামে অনে ক ঋণ আসছে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য ঋণের ফাঁদ তৈরি করছে।
শরীফ জামিল জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে কার্বন নির্গমনকারী বড়গ দেশগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। জিয়াউল হক মুক্তা এবং অন্যরা প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে জন্য একটি কাঠামোগত আইনী ব্যবস্থার সুপারিশ করেন।