প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ বুড়িগঙ্গা নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসব। মহালয়ার পর ১২ দিনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে আজ মর্ত্যলোক থেকে বিদায় নিলেন দেবী দুর্গা। এর মাধ্যমে পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটলো আজ।মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরের পর থেকেই ঢাকার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ থেকে প্রতিমা আসতে থাকে ওয়াইজঘাটের বিনাস্মৃতি স্নানঘাটে।
ঢাকের তালে নেচে-গেয়ে প্রতিমা নিয়ে আসেন তারা। বিষাদ-আনন্দ এক করে দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দিয়ে এ বছরের দুর্গাপূজা শেষ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।এর আগে শঙ্খ আর উলুধ্বনি, খোল-করতাল-ঢাকঢোলের সনাতনী বাজনার সঙ্গে দেবী বন্দনার গানের মধ্য দিয়ে প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রা সহকারে বুড়িগঙ্গা তীরের বিনাস্মৃতি স্নানঘাটে আসেন পূণ্যার্থীরা। ঢাকার বিভিন্ন পূজা উদযাপন পরিষদ হাজারো মানুষের শোভাযাত্রা নিয়ে বুড়িগঙ্গা তীরে আসে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মঙ্গলবার বিকেল ৪টা থেকে বিনাস্মৃতি স্নানঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া শুরু হয়। প্রথমে বিসর্জন দেয় ধানমন্ডি সর্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি। এর মাধ্যমে দেবীকে বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। হাজার হাজার ভক্তের উপস্থিতিতে ঢাক ও কাঁসর ঘণ্টা বাজিয়ে নৌকাযোগে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। বিনাস্মৃতি স্নানঘাটে টিপু সুলতান রোড মন্দির, মরণ চাঁদ গ্রান্ড সন্স, ঢাকেশ্বরী, রমনা কালি মন্দির, সিদ্ধেশ্বরী পূজামণ্ডপসহ ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন স্থানে উদযাপিত দুর্গাপূজার প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।
প্রতিমা বিসর্জনের সময় নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা দিয়েছে কোস্ট গার্ডের ডুবুরি দল, ফায়ার সার্ভিস,পুলিশ, র্যাবসহ সদরঘাটের নৌ-পুলিশ।মহানগর সর্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক রমেন মন্ডল জাগো নিউজকে বলেন এ বছর অত্যন্ত সুন্দরভাবে পূজা উদযাপন হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তায় আমরা মুগ্ধ। মহালয়ার পর থেকে আজ বিসর্জন পর্যন্ত কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন দুপুর থেকে বিনাস্মৃতি স্নানঘাটে পুলিশ মোতায়েন ছিল। শুধু পুলিশ না, র্যাব, নৌ-পুলিশ, কোস্ট গার্ড দায়িত্বে রয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫০টি মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। আনুমানিক রাত ২টা পর্যন্ত কার্যক্রম চলবে। আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সবসময় থাকবে।
গত ২০ অক্টোবর শুরু হয় এ বছরের শারদীয় দুর্গোৎসব। ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী পেরিয়ে দীর্ঘ ৫ দিনের পূজা-অর্চনা শেষে আজ বিজয়া দশমীর মাধ্যমে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলো। এদিন সকালে ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে দশমী বিহিত পূজা শুরু ও পূজা শেষে দর্পণ-বিসর্জন দেওয়া হয়। বিজয়া দশমীতেই দুর্গা কৈলাসে গমন করেন। তাই কন্যারূপী দুর্গাকে বিদায় জানাতে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন ভক্তরা।