ঘূর্ণিঝড় মোখা শেষ রাতে আঘাত হানবে

0
ঘূর্ণিঝড় মোখা শেষ রাতে আঘাত হানবে

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মোখা কক্সবাজার থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। শনিবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে কক্সবাজারের উপকূলে আঘাত হানবে মোখা। ১০ নং মহা বিপদসংকেত অতিক্রম করতে পারে। বাংলাদেশের কক্সবাজার তৎসংলগ্ন এলাকায় ধেয়ে আসছে ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার গতিতে।

গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিশিষ্ট আবহাওয়াবিদ ও সাচকিচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ।তিনি বলেন, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, টেকনাফের ওপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি যাবে। পুরো ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যাবে। আমি গত ২৪ ঘণ্টায় বারবার বলছি পুরো ঘূর্ণিঝড় সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজরের ওপর দিয়ে যাবে।  ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দূরে আছে।

কখন ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানবে—এমন প্রশ্নের উত্তরে পলাশ বলেন, ‘আমি মনে করছি সেন্টমার্ন্টিনে রাত ৩টা থেকেই আঘাত হানা শুরু করবে। আর এর এক ঘণ্টার পর অর্থাৎ ভোর ৪টা থেকে টেকনাফে আঘাত হানা শুরু করবে।ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ কত হতে পারে- এ প্রশ্নের উত্তরে এই আবহাওয়াবিদ বলেন, ‘১৫০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানতে পারে। এটি বাংলাদেশের ওপর আঘাত হানা চতুর্থ শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হতে যাচ্ছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি কেমন হতে পারে- এ প্রশ্নের জবাবে পলাশ বলেন আমি আসলে চিন্তাও করতে পারছি না সেন্টমার্টিনের কী হবে। আমি এই প্রথম চাইব আমার পূর্বাভাস ভুল হোক।

কারণ আমি যেই কথাটা বলছি, ১৫ থেকে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হবে। আমি নিজেও জানি না কত মানুষ পানিতে ভেসে যাবে, আর কত প্রাণহানি হবে।আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৬ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে শনিবার রাতে বলা হয়েছে, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হবে। এরপর রোববার (১৪ মে) সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। আজ মধ্যরাত নাগাদ চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে।অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়,উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।উপকূলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

সংস্থাটি আরও জানায়, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে ভারী (৪৪-৮৮ মিমি) থেকে অতি ভারী (৮৯ মিমি) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here