প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে লাখো ভক্তের উপস্থিতিতে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিমা বিসর্জনে হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ নানা সম্প্রদায়ের মানুষকে অংশ নিতে দেখা গেছে। বুধবার (৫ অক্টোবর) শারদীয় দুর্গাপূজার শেষ দিন বিজয়া দশমীতে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। অতীতের মতো এবারও ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব পালন করেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানকে ঘিরে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে এদিন দুপুর ২টার পর থেকে জেলার সদর, উখিয়া, টেকনাফ, ঈদগাহ, চৌফলদন্ডী ছাড়াও নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে শোভাযাত্রা সহকারে প্রতিমা আসতে শুরু করে। প্রতিমায় ভরে যায় সমুদ্র সৈকতের অনুষ্ঠানস্থল।লাবনী পয়েন্টে বিকেল ৩টা থেকে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ। বিকেল প্রায় ৫টা পর্যন্ত সৈকতের বালুচরে রাখা প্রতিমাকে ঘিরে চলে ভক্তদের শেষ আরাধনা।
শুধু তাই নয়, নাচে-গানে এক অন্যরকম আনন্দমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় বিশ্বের দীর্ঘতম এ সৈকতে। অনুষ্ঠানকে ঘিরে সমাগম ঘটে পর্যটকসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লাখো মানুষের।আয়োজকরা জানান, শুধু সৈকতের লাবনী পয়েন্টে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা শতাধিক প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হচ্ছে। একই সময়ে রামুর বাঁকখালী নদী, চকরিয়ার মাতামুহুরী, টেকনাফের সাগর ও নাফ নদী, উখিয়ার ইনানী সৈকত এবং রেজু নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। রামু ও চকরিয়ায় আলাদাভাবে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কক্সবাজার সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলরাম দাশ বলেন, মা দুর্গার কাছে আমাদের বিশেষ প্রার্থনা ছিল প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে মানুষ যেন রক্ষা পায়। জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশ জানান, এ বছর জেলায় ৩০৫টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন হয়েছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে কক্সবাজার সৈকতে। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি উজ্জল কর জানান, দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান এটি।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছরও এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ লাখো মানুষের সমাগম হয়েছে। গত বছর করোনা মহামারীর কারণে এই উৎসবটি ব্যাপকভাবে পালন করা সম্ভব হয়নি।কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম জানান, তিন স্তরে নিরাপত্তা জোরদারের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব শেষ হয়েছে। শুধু সৈকত এলাকায় প্রায় কয়েকশ ফোর্স মোতায়েন করা হয়। যানজট নিরসনে সৈকতের কলাতলি থেকে আশপাশের সড়কগুলোতে ট্রাফিক পুলিশের বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সৈকতের লাবনী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে শুরু হয় বিসর্জনের আনুষ্ঠানিকতা। কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি উজ্জল করের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ, পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম ও র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক খায়রুল ইসলাম সরকার। কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।