হঠাৎ গতিপথ বদলেছে ঘূর্ণিঝড় “আসানি” অন্ধ্র প্রদেশে রেড অ্যালার্ট জারি

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ হঠাৎ গতিপথ বদলেছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় আসানি। এরপরই ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের উড়িষ্যা বা পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে নয় বরং ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের দিকে। এখন সেটি স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ কারণে অন্ধ্র প্রদেশে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। খবর এনডিটিভি।

বিশাখাপত্তনম ঘূর্ণিঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পরিচালক সুনন্দা বলেছেন, গতিপথ বদলে ঘূর্ণিঝড়টি কাকিনাড়া উপকূল স্পর্শ করতে পারে। এরপর সেটি আবার কাকিনাড়া ও বিশাখাপত্তনমের মধ্যকার সমুদ্রে চলে যাবে।মঙ্গলবার রাতে তিনি বলেন, অন্ধ্র প্রদেশে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা ও রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। এর আগে ঝড়ের গতিপথ উত্তর-পশ্চিম দিক দেখাচ্ছিল। কিন্তু গত কয়েক ঘণ্টায় এটি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে। ঝড়টি এখন অন্ধ্র উপকূলের খুব কাছে।

এর আগে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের (আইএমডি) পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, ঝড়টি ক্রমাগত শক্তি হারিয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে বঙ্গোপসাগরের দিকে এগোবে। কিন্তু সেটি স্থলভাগে আঘাত হানার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছিল তারা। তবে ঝড়ের গতিপথ বদলে যাওয়ায় পূর্বাভাসও পরিবর্তন করা হয়েছে।

সুনন্দা বলেছেন, আগামী কয়েক ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড় আসানি উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে এবং অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলের কাছাকাছি চলে যাবে। বুধবার সকালে সেটি দিক পরিবর্তন করে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে কাকিনাড়া ও পূর্ব গোদাবরী উপকূল স্পর্শ করবে এবং তারপর পূর্ব দিকে বিশাখাপত্তনম উপকূলের দিকে সমান্তরালভাবে এগিয়ে যাবে। ভারতীয় এ কর্মকর্তা আরও জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কাকিনাড়া, গণগাভরম এবং ভীমুনিপতনম বন্দরে ১০ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করেছে আইএমডি।

এ ছাড়া, বিশাখাপত্তনম, পূর্ব গোদাবরী, পশ্চিম গোদাবরী, কৃষ্ণা এবং গুন্টুরসহ অন্ধ্র প্রদেশের জেলাগুলোতে রেড অ্যালার্টও জারি করা হয়েছে। এই অঞ্চলগুলোতে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এর ফলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও ক্ষয়ক্ষতির সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। এছাড়াও কাঁচা বসতবাড়ি, কাঁচা রাস্তা, কৃষি জমিও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।

এসময়ে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বাইরে বের না হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অঞ্চলগুলোতে। আসানির প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা না থাকলেও বেশ কিছু অঞ্চলে জারি করা হয়েছে সতর্কতা। এর পাশাপাশি অতি ভারী বৃষ্টির কারণে পানি জমতে পারে এমন জায়গাগুলো এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে ইতোমধ্যেই বিশাখাপত্তনম বন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া, খারাপ আবহাওয়ার কারণে প্রায় ৩০টি বিমান বাতিল করা হয়েছে।এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বুধবার (১১ মে) সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে। নদীতে জোয়ারের পানি বেড়েছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের বেশ কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারা দেশেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি থেকে হচ্ছে ভারি বৃষ্টিও।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেলে অবস্থানরত সব লাইটার জাহাজকে সদরঘাট ও শাহ আমানত ব্রিজ এলাকায় যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৈরি আবহাওয়ায় মোংলা বন্দরে পণ্য বোঝাই ও খালাস কার্যক্রম ব্যাহত। সুন্দরবন সংলগ্ন সাগর-নদীতে মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকা এরইমধ্যে তীরে ফিরে এসেছে। ঘূণিঝড় আসানি ক্রমশ দুর্বল হয়ে শুধু ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আভাস দিচ্ছে আবহাওয়া অধিদফতর। তবে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় উপকূলীয় এলাকায় নেওয়া হয়েছে বাড়তি প্রস্তুতি। প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here