প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ করোনা ভাইরাসের মধ্যে কারাবন্দিদের সঙ্গে বাইরের কারও দেখা করার সুযোগ না থাকলেও চলতি মাসের শুরুতে কারা কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় হলমার্কের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমেদের সঙ্গে এক নারীর একান্ত সাক্ষাতের ভিডিও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এমন অভিযোগে ডেপুটি জেলার মোহাম্মদ সাকলাইনসহ দুই জনকে প্রত্যাহার করেছে কারা মহা-পরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন।
শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) রাতে তাদেরকে প্রত্যাহার করে কারা সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয় বলে কারাকর্তৃপক্ষের একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সূত্র জানায়, গাজীপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে কারাবিধি লঙ্ঘন করে বন্দীর সঙ্গে এক নারীর একান্ত সাক্ষাতের অভিযোগ উঠায় তাদেরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
প্রত্যাহারকৃতরা হলেন- ডেপুটি জেলার মোহাম্মদ সাকলাইন, সার্জেন্ট আব্দুল বারী ও সহকারী প্রধান কারারক্ষী খলিলুর রহমান। একইসাথে তদন্তের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট যেকোনও উর্দ্ধতন কর্মকরতাদেরকেও অতি দ্রুতই প্রত্যাহার করা হতে পারে বলে সূত্রটি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়াও দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুরের অতিরিক্ত ডিসি (এডিএম) আবুল কালাম।
হলমার্ক গ্রুপের আড়াই হাজার কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারির মামলার অন্যতম আসামি তুষার কাশিমপুর কারাগারে আটক রয়েছেন। গত ৬ জানুয়ারি দুপুরে এক নারী কারাগারের কর্মকর্তাদের কক্ষ এলাকায় তুষারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় তাদের যাওয়া আসার দৃশ্য প্রধান ফটকের ভেতরের সিটিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোর ওই ভিডিও নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে শুক্রবার ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তবে কারা কর্মকর্তারা এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলতে চাননি।
ভিডিওতে দেখা যায়, বেলা পৌনে ১টার দিকে কারাগারের প্রবেশ পথে কর্মকর্তাদের কার্যালয় এলাকায় কালো পোশাক পরা তুষার ঘোরাফেরা করছেন। কিছু সময় পর বাইরে থেকে বেগুনি সালোয়ার-কামিজ পরা এক নারী সেখানে আসেন। কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার রত্না রায় ও ডেপুটি জেলার সাকলাইন কারাগারে থাকার সময়ই এ ঘটনা ঘটে।
ভিডিওতে দেখা যায়, বেলা ১২টা ৫৫ মিনিটে দুই ব্যক্তির সঙ্গে ওই নারী কারা কর্মকর্তাদের কক্ষ এলাকায় যান। সেখানে ডেপুটি জেলার সাকলায়েন ওই নারীর সঙ্গে কথা বলেন। এরপর কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যানসাকলায়েন। কিছুক্ষণ পর কারাবন্দি তুষার আহমেদ আসেন সেখানে।
অতিরিক্ত ডিসি আবুল কালাম বলেন, ওই ঘটনায় গত ১২ জানুয়ারি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত ডিসি (এডিএম) আবুল কালামকে প্রধান করে গঠিত ওই কমিটিতে গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবিবা ফারজানা ও মো. ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরী সদস্য হিসেবে আছেন।
অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক মো. আবরার হোসেন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা জানালেও দর্শনার্থীদের সাক্ষাতে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে কীভাবে এ ঘটনা ঘটল সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি। তিনি বলেন, ২১ জানুয়ারি তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তার সঙ্গে উপ-সচিব (সুরক্ষা সেবা বিভাগ) মো. আবু সাঈদ মোল্লাহ ও ডিআইজি (ময়মনসিংহ বিভাগ) মো. জাহাঙ্গীর কবির সদস্য হিসেবে আছেন।