বিপদসীমার উপরে তিস্তার পানি,কেটে দেয়া হতে পারে ফ্লাট বাইপাস

0
কেটে দেয়া হতে পারে ফ্লাট বাইপাস

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ ভারত থেকে প্রচণ্ড গতিতে পানি আসায় তিস্তা ব্যারেজ হুমকির মুখে পড়েছে। তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৩.১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারেজ রক্ষার্থে যেকোনো মুহূর্তে ফ্লাট বাইপাস সড়কটি কেটে দেয়া হতে পারে। ফলে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। রোববার (১২ জুলাই) রাত ১১টার দিকে তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, রাত ১১টায় তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫৩ দশমিক ১৫ মিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ মি.) বিপৎসীমার ৫৩.১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সকাল ১০টায় তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেলা ১২টায় পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। যে কারণে তিস্তার তীরবর্তী মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা তিস্তা ব্যারেজের সব কয়টি গেট খুলে দিলেও পানির গতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। ফলে তিস্তা পাড়ে লোকজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ফ্লাট বাইপাস কেটে দেওয়া হলে তিস্তার পানি লালমনিরহাটসহ ৫টি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে পড়বে। তাছাড়াও হাতীবান্ধা-বড়খাতা বাইপাস সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। যার ফলে যে কোনো সময় পাকা সড়কটি ভেঙে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

স্থানীয়রা জানান, অতিবৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলার তিস্তা ও ধরলা অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরম ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীরা। চারদিকে অথৈ পানির কারণে গবাদি পশুপাখি নিয়ে অনেকটা বিপাকে চরাঞ্চলের খামারি ও চাষিরা।

উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট এ বন্যায় পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, কুলাঘাট ও মোগলহাট ইউনিয়নের তিস্তা ও ধরলার নদীর চরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এর ফলে এসব ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দী।

পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তার তীরবর্তী এলাকার ব্রিজ, কালভার্ট ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। ভেসে যাচ্ছে শত শত পুকুরের মাছ। নষ্ট হয়েছে চাষিদের বাদাম, ভুট্টা ও সবজিসহ নানান ফসল। চরাঞ্চলের পানিবন্দী মানুষ শিশুখাদ্য ও নিরাপদ পানির সমস্যায় পড়েছেন। তিনদিন ধরে পানিবন্দী থাকলেও সরকারিভাবে কোনো ত্রাণ বা শুকনো খাবার এখনো পৌঁছায়নি পরিবারগুলোর অভিযোগ।

তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের ইনচার্জ নুরুল আমিন জানান, দুপুরের পর থেকে পানি বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে তীরবর্তী মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। পানি কখন কমে যাবে বলা যাচ্ছে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here