প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ পবিত্র ঈদুল আযহা মুসলমানদের সবচেয়ে বড় উৎসব। ঈদকে ঘিরে প্রতি বছরই দৌড়ঝাঁপ করতে হয় পশুর হাট-বাজারে। এবার রাজধানীতে ২০টি পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এরইমধ্যে হাটগুলোতে আসতে শুরু করেছে কোরবানির পশু। হাটগুলোতে এখন চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতির কাজ।
রাজধানীর শ্মশান ঘাট, দনিয়া গরুর হাটসহ কয়েকটি হাটে ঘুরে দেখা যায় কোরবানি পশু আসতে শুরু করেছে। কিন্তু হাটের প্রস্তুতি এখনো শেষ হয়নি। পোস্তগোলা শ্মশানঘাট হাট ঘুরে দেখা গেছে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অনেকে গরু নিয়ে হাটে উপস্থিত হয়েছে। গরুর পরিচর্যা করতে দেখা গেছে অনেককে। এখনো বিক্রি শুরু হয়নি। অপরদিকে হাটটিতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির কাজ।
এ হাটে টাওয়ার, লাইটিং, ছামিয়ানা টানানোর কাজ বাকি আছে যা ২-১ দিনের মধ্যেই সব শেষ হবে বলে জানিয়েছেন হাট সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা।তারা বলেন, আমাদের হাটের কাজ প্রায় সম্পন্ন। কিছু কিছু কাজ বাকি আছে। সেগুলো দুই-একদিনের মধ্যেই শেষ হবে।হাট শুরুর বেশ আগেই গরু নিয়ে আসা সম্পর্কে বিক্রেতারা বলছেন, রাস্তাঘাটে যানজটের কারণে অনেক সময় গরু আনতে দেরি হয়। ট্রাকে থাকা গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে, কোনো কোনো সময় গরু মারা যায়। আবার হাটে জায়গা পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়ে।
এসব বিষয়কে মাথায় রেখে এবার আগাম এনেছেন কোরবানির পশু।ফরিদপুর থেকে গরু নিয়ে এসেছেন সাইফুল হক। তিনি বলেন, রাজধানীর হাট গুলোর মধ্যে অন্যতম বড় হাট পোস্তগোলা শ্মশান ঘাটের এই হাট। এখানে দেরি করে আসলে ভালো জায়গা পাওয়া যায় না। তাই এবার একটু আগেই এসেছি। রাজধানী দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে চিটাগাং হাইওয়ে রোডের দুই পাশে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও গরুর হাট বসানো হচ্ছে। হাটটিতে ঘুরে দেখা গেছে সারি সারি বাসের খুঁটি গাড়া হয়েছে।
বৃষ্টির দিন, বৃষ্টি থেকে বাঁচতে সাইমানার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মোবাইল টাওয়ার বসানো হচ্ছে। হার্টের কাজ পুরোপুরি শেষ না হলেও এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গরু আসতে শুরু করেছে।হাটটিতে কাজ করছেন জসিম মিয়া তিনি বলেন, আমাদের এই হাটের কাজও প্রায় শেষ। কিছু কাজ বাকি আছে সেগুলো দুই-তিন দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। রাজধানীতে যে কয়টা বড় হাট আছে তার মধ্যে আমাদের এই হাটটাও। আমাদের এই হাটে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রচুর পরিমাণ গরু আসে।
তাই আমাদের কাজটাও একটু বেশি। তবে খুব দ্রুতই কাজ শেষ হয়ে যাবে।ওই হাটে গরু নিয়ে এসেছেন মামুন মিয়া। তিনি বলেন, আপাতত ১০টি দেশি গরু নিয়ে এসেছি আমার আরো দশটা গরু আসবে। এ ছাড়া হাটে দেরিতে এলে জায়গা পাওয়া কঠিন হয়। আগে আসায় গরুর যত্ন করা যায়। আর সুন্দর করে থাকার জায়গাও করে নেওয়া যায়। এসব ভেবে তিনি আগাম এসেছেন।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এলাকায় এবার বসছে ২০টি পশুর হাট। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণে সারুলিয়া স্থায়ী হাটসহ ১১টি এবং উত্তরে গাবতলী স্থায়ী হাটসহ ৯টি। ইতোমধ্যে দক্ষিণ সিটি ১০টি হাটের ইজারা চূড়ান্ত করেছে। আর উত্তর সিটি ৫টি হাটের ইজারা চূড়ান্ত করেছে।ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, গরুর হাটগুলোতে নিরাপত্তার পাশাপাশি অনলাইন গরুর হাটগুলোতেও বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছে ডিএমপির সাইবার টিম।
ঢাকার ভিতরে পশুর হাটে যারা (স্বেচ্ছাসেবীসহ হাট ইজারাদার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) কাজ করবেন তাদের সমন্বয় থাকবে। রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার।তিনি বলেন, পশুর হাটে অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির ব্যাপারে ডিবির টিম সজাগ থাকবে।
হাট ও হাটের আশপাশে এমন অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির ব্যক্তি দেখলেই সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি জাল টাকার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা তাদের জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন পশুর হাটগুলোতে রাখবেন বলে জানিয়েছেন।