প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ শফিউদ্দিন সবুজ বঙ্গবাজার থেকে : ভয়াবহ আগুনে শুধু মার্কেটই ছাই হয়ে যায়নি, সেই সঙ্গে পুড়ে ছাই হয়েছে তাদের ভবিষ্যতও। ছাই হয়ে যাওয়া মার্কেটের দিকে হতাশ হয়ে তাকাচ্ছেন তারা। মঙ্গলবার সকালে এই প্রতিবেদন লেখার সময় বঙ্গবাজারের উল্টো পাশের রাস্তার ফুটপাতে বসে ছিলেন বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী। তারা উদাস হয়ে দেখছিলেন ছাই হয়ে যাওয়া মার্কেট। তারা জানান, ঈদের আগে এই আগুনের তাদের যে ক্ষতি হয়ে গেলো সেটা পূরণ করা প্রায় অসম্ভব।
বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনা এই প্রথম নয়, এর আগেরও ৯০ দশকে ভয়াবহ এক আগুনে ছাই হয়েছিলো বঙ্গবাজার। সেই সময় এই মার্কেটটি পরিচিত ছিলো গার্মেন্টস পণ্যের মার্কেট হিসাবে। একমাত্র এই বাজারেই সে সময় বিক্রি হতো রপ্তানি করা পোশাকের বাড়তি অংশ। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আগুনে কয়েকশ দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। নিঃস্ব হয়ে গেছেন বহু মানুষ। পরিবারের ভরণপোষণ নিয়ে তাদের মাথায় হাত।
ঈদ করা দূরের কথা, কি করে সংসার ও জীবন চালাবেন, সেই চিন্তায় মাথা ঘুরছে অনেক ব্যবসায়ীর। বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ী ইব্রাহিম মাত্র দু’বছর আগে পোশাক ব্যবসার মাধ্যমে ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য ৪০ লাখ টাকা দিয়ে বঙ্গবাজারে একটি দোকান ভাড়া নেন। ঈদের আগে দোকানে তুলেন প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল। কিন্ত আগুনে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বলে জানান তিনি। আরেক ব্যবসায়ী জানান, তার দোকানেও প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল ছিলো। আগুনের খবর তিনি ছুটে প্রায় অর্ধেক পণ্য বের করতে পেরেছেন, কিন্তু সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। আগুন নেভানোর পানিতে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সেসব পোশাক।
অনেকেই জানিয়েছেন, আগুন তাদের সব আশা কেড়ে নিয়েছে। সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দোকান থেকে এক টুকরো কাপড়ও বের করতে পারেননি তারা। আবার অনেকে কিছু মালামাল বের করতে পারলেও সেগুলো পানি লেগে নষ্ট হয়ে গেছে। আগুনের ভয়াবহতার কারণে ব্যবসায়ীরা তাদের মালামাল উদ্ধার করতে পারেননি। আশেপাশের অনেক দোকান থেকেও অনেক মানুষকে তাদের জিনিসপত্র বের করতে দেখা গেছে। মালামাল রাস্তায় রেখেছেন তারা। আর আগুনে ব্যবসার পুঁজি হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকে।
বঙ্গবাজার থেকে মালামাল সরিয়ে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা মঙ্গলবার সকালে ৬টা ১০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। পরে ৬টা ১২ মিনিটে তাদের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পাঠায়। সংবাদ পাওয়ার পর আমাদের একের পর এক ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের ৫০টি ইউনিট কাজ করছে। আশপাশের বেশ কয়েকটি ভবনেও আগুন ছড়িয়ে পড়েছে বলে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি বিজিবি, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর সাহায্যকারী দল এবং একটি হেলিকপ্টার কাজ করছে।