মতলব উত্তরে মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে বোরো আবাদে ব্যস্ত কৃষকরা

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ কামাল হোসেন খান,মতলব (চাঁদপুর) সংবাদদাতা: চাঁদপুরের মতলব উত্তরের মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে বোরো ধান রোপনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কৃষকরা। শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে মাঠে কাজ করে যাচ্ছে তারা। গত সপ্তাহ থেকে বোরো ধান রোপন শুরু করেছেন কৃষকরা। জেলার ৮টি উপজেলার মধ্যে মতলব উত্তর উপডজেলায় বোরো ধানের আবাদ হয় সবচেয়ে বেশি। এ বছর উপজেলায় ৯ হাজার ১ শ’ ৩০ হেক্টর জমিতে ৪০ হাজার মেট্টিকটন বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছেন। এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৫শ’ ৪০ হেক্টর জমিতে আবাদ সম্পন্ন হয়েছে।

মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজলার ১টি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নে বোরো রোপনের কাজ পুরোদমে এগিয়ে  চলছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ইতিমধ্যে ব্রি-৮৯ ও ব্রি-৮১,ব্রি-৭৪, , বিনা-১০ জাতের বীজ কৃষকদের বিতরণ করা হয়েছে। এ বছর নতুন জাতের ধান বিআর ৩, ব্রি-১৬, ব্রি-২৮, ব্রি-২৯, ব্রি-৫৮, ব্রি-৭৪, ব্রি-৭৫, ব্রি-৮১, ব্রি-৮৯ ও বিনা-১০, বিআর ১৪ জাতের ধান রোপন করছে কৃষকেরা। পুরাতন জাতের মধ্যে ব্রি-৩৯, ব্রি-২২ রয়েছে।এদিকে নানা সমস্যার মধ্যেও বোরো চারা রোপনের জন্য কোমর বেঁধেনেমে পড়েছেন চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা ধননাগোদা সেচপ্রকল্পের কৃষকেরা। কিছু প্রকল্প এলাকায় গভীর নলকূপের মাধ্যমেও সেচ দিয়ে বোরো ধানের চারা রোপনের কাজ চলছে।

সরজমিনে দেখা যায়, এ এলাকার কৃষক এখন বোরো ধান রোপন নিয়ে সবাই ব্যস্ত সময় পার করছে। উপজেলার কলাকানন্দা ইউনিয়নের হানিরপাড়, দশানী, মিলারচর, ছেংগারচর পৌর এলাকার ঠাকুরচর,ঘনিয়ারপাড়,আদুরভিটি,পালালোকদী,কলাকান্দা,তালতরী,মরাধন, ঝিনাইয়া, মিঠুরকানিন্দ, রাঢ়ীকান্দি, ইমামপুর,সাদুল্যাপুর,বাগানবাড়ি,নিশ্চিন্তপুর, দূর্গাপুর, নন্দলালপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের বোরোর আবাদ পুরোদমে শুরু হয়েছে। তবে কৃষি উপকরণের দাম বাড়ার ফলে চাষিরা ক্ষতির ভয়ে আবাদের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন। অপর দিকে ধানের দাম না থাকায় সবচেয়ে বিপাকে আছেন বর্গচাষিরা।কলাকান্দা ইউনিয়নের হানিরপাড় এলাকার চাষি মোঃ আঃ লতিফ মোল্লা (৬০) জানান, তিনি ৫কানি জমিতে বোরোর চাষ করেন।

প্রতি কানিতে তার শ্রমিক, বীজ ও কীটনাশক মিলে খরচ পড়ে ৭ হাজার টাকা। এ বছর তিনি বিআর ৩, ব্রি-১৬, ব্রি-২৮, ব্রি-২৯, ব্রি-৫৮,ও বিনা-১০, বিআর ১৪ জাতের ধানের চাষ করছে বলে জানান। কৃষি কার্ড থাকলেও কোনো সুবিধা পাননি বলে অভিযোগও করেন এ কৃষক। সেচ প্রকল্প থাকলেও প্রবল্প থেকে তিনিন কথনও পাননি। উপজেলার হানিরপাড়ের কৃষক হাসেম বেপারী, হানিফ, ছানাউল্লাহ ও ছেংগারচর পৌর এলাকার ঠাকুরচর গ্রামের কৃষক শাহজাহান খানসহ অন্যান্য কৃষকরা বলেন, এ উপজেলা কৃষি নির্ভরশীল এলাকা। আমাদের প্রধান কর্মই কৃষি। লোকসান হোক আর লাভ হোক আমাদের ধানের আবাদ করতে হবে। তবে সারের দাম কমিয়ে দেওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে কৃষকদের বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। কৃষি অফিস থেকে জানা যায়, সঠিক সময়ে বোরো ধানের চারারোপণ করলে ফলন ভালো হয়। চারা এলোমেলোভাবে না লাগিয়ে সারিবদ্ধভাবে লাগাতে হয়।

সুষম সার ব্যবহার করলে মাটির উর্বরতাবাড়ে। সাধারণ ইউরিয়া সারের পরিবর্তে গুটি ইউরিয়া সার ব্যবহার করলে অধিক কার্যকর ফল পাওয়া যায়। আধুনিক পদ্ধতিতে ধানের আবাদ করলে অধিক ফলন পাওয়া যায়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সালাউদ্দিন জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ৯ হাজার ১শ’ ৩০ হেক্টর জমিতে ৪০ হাজার মেট্টিকটন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এ বছর নতুন জাতের ধান বিআর ৩, ব্রি-১৬, ব্রি-২৮, ব্রি-২৯, ব্রি- ৫৮, ব্রি-৭৪, ব্রি-৭৫, ব্রি-৮১, ব্রি-৮৯ ও বিনা-১০, বিআর ১৪ জাতের ধান রোপন করছে কৃষকেরা। পুরাতন জাতের মধ্যে ব্রি-৩৯,ব্রি-২২ রয়েছে। এসব নতুন জাতের ধানে ফলন ভালো হবে বলে আশা করেন তিনি। তিনি আরও জানান, মাঠকর্মীরা কৃষকদের সব ধরণের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here