শেষ ঠিকানা সবার একটাই, সাড়ে তিন হাত কবর: এড. জেসমিন সুলতানা

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ কুমিল্লা, ব্রাহ্মণপাড়ার মীরপুর গ্রামের পারিবারিক গোরস্থানে শায়িত হলেন আমাদের প্রিয় নেতা আব্দুল মতিন খসরু। প্রিয়জনেরা তাঁর দেহখানা পৌঁছানোর পূর্বেই সব ব্যবস্থা করে রেখেছেন। আমরা একটু ভাবি, কত সুন্দর অট্টালিকায়, এসি ঘরে, কতো শানসওকতে বসবাস করা মানুষটার আজ ঠিকানা সেই মাটির ঘরেই।

যেদিকে তাকাবে শুধুই মাটি উপরে একটু বাঁশের ছাউনী। তার উপরও মাটি ডানে , বাঁয়ে শিয়রে পায়ের দিকে বাঁশের উপরেও মাটি। বিছানা নেই, বালিশ নেই কিছুই নেই। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কিভাবে নিজ হাতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ছাই করা হয় তাও দেখেছি।

আল্লাহ বলেছেন এ মাটি থেকে তোমাকে সৃষ্টি করা হয়েছে, এ মাটিতেই তোমাকে রাখা হবে, আবার এ মাটি থেকেই তোমাকে উঠানো হবে। স্যারের মৃত্যুতে আইনজীবী পরিবার গভীর শোকে আচ্ছন্ন। পরিবারের কোনো সদস্যদের মৃত্যুতে যেমনি সবাই বেদনায় মুহ্যমান হয় আমরা ও তেমনি। মনকে প্রবোধ দিতে পারছি না। ২০২০-২০২১ সনে ১৩৮ জন আইনজীবীকে হারিয়েছি। অনেকে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। সবই আল্লাহ পাকের ইচ্ছা।

মৃত্যুর পরও আজ কতো সন্মানে ভূষিত হলেন স্যার। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অফ অনার দেয়া হলো। মহামান্য রাষ্ট্রপতি লকডাউন না হলে নিজেই উপস্থিত হতেন। তিনি ফুলের তোড়া দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়েছেন। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর পক্ষ থেকে, মাননীয় প্রধান বিচারপতি মহোদয়ের পক্ষ থেকে সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে, বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে স্যারের কফিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয়।

যার জন্ম হয়েছে মৃত্যুর স্বাদ তাকে নিতেই হবে। প্রতিটা মৃত্যুই আমাদেরকে একবার করে মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, আমাদের কখন কার ডাক আসে আল্লাহ জানেন। আমরাও ঐ অন্ধকার মাটির ঘর কবরের জন্যে প্রস্তুত হই। করোনা যেকোনো সময় ডাক দিতে পারে। দুনিয়ার বাহাদুরি দুই দিনের।

কতো ক্ষমতার অধিকারী মানুষটি আজ মাটির নিচে। আমরা হাত তুলে প্রতি ওয়াক্ত নামাজে মৃতদের কথা স্মরণ করি। সবার জন্য দোয়া করি আল্লাহ যেন উনার কবরের সওয়াল জবাব সহজ করে দিন। অত্যন্ত ধার্মিক, নামাজী ও সৎ একজন ব্যক্তি ছিলেন। পৃথিবীতে যেমন সন্মানিত ছিলেন আখেরাতেও তেমনি সন্মানিত করুন প্রভু। রোজার মাসে আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করি। মৃত্যুর কথা ভাবি। হিংসা দ্বেষ হানাহানি ভুলে যাই। সৎ, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চলি। শেষ ঠিকানা সবার একটাই। সাড়ে তিন হাত কবর।

লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here