প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে একাই রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডের চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রন করতে মরিয়া বহুল বিতর্কিত সালাউদ্দিন। এত মালিক সমিতির কমিটিতে বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা। যে কোন সময় ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। জানা গেছে, বিগত সময়ের কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে গত এপ্রিল মাসে রেন্ট-এ কার মালিক সমিতির ২১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
মো: সালাউদ্দিনকে সভাপতি, জসীম উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক ও শফি উদ্দিন মোল্লাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে গঠিত কমিটি অনুমোদন দেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া। অভিযোগ উঠেছে, সভাপতি সালাউদ্দিন কমিটির মতামত না নিয়ে একাই স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রন করতে চান। এনিয়ে কমিটিতে দেখা দেয় বিরোধ। ফলে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বহিরাগত ১৫ থেকে ২০ জন সন্ত্রাসী নিয়ে স্ট্যান্ডে গিয়ে চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রন নিতে চেষ্টা করে।
এখবর পেয়ে কমিটির অন্যান্য কর্মকর্তা ও সদস্যরা একত্র হয়ে সালাউদ্দিন বাহিনীকে ধাওয়া দেয়। স্ট্যান্ডে দেখা দেয় উত্তেজনা। খবর পেয়ে থানার উপপরিদর্শক হুমায়ূন কবির সঙ্গিয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গাড়ি মালিক জানান, সালাউদ্দিন বহুল আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের অন্যতম সহযোগী। তিনি একজন বিএনপি কর্মী। সাত হত্যার আগে নূর হোসেনের শেল্টারে সালাউদ্দিন রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ড মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হয়। এর পর থেকেই দাপটের সাথে চাঁদাবাজি শুরু করেন সালাউদ্দিন। অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে
বিভিন্ন চালকদের হাত করে রেন্ট-এ কারের গাড়ি দিয়ে মাদক পাচার শুরু করেন সালাউদ্দিন। এমনকি সে নিজের প্রাইভেটকার দিয়েও মাদক
পাচার করতেন। ইয়াবার চালান নিয়ে যাওয়ার সময় মুন্সিগঞ্জের সিরাজদীখান থানা পুলিশ সালাউদ্দিনের (ঢাকা মেট্রো-গ-২৫- ৩১৯৫) প্রাইভেটকারসহ চালককে আটক করেছিল। তাদের অভিযোগ, দেশের বিভিন্ন জেলার বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সখ্যতা রয়েছে সালাউদ্দিনের। এসব মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা পেয়ে সালাউদ্দিন তাদের কাছে গাড়ি ভাড়া দিয়ে আর্থিকসুবিধা ভোগ করে।
তার গাড়ি ছাড়াও (ঢাকা মেট্রো-গ-৩২-৩৬০০), (ঢাকা মেট্রো-চ-১৬-০১০১), (ঢাকা মেট্রো-গ-২৫-২৯২১), (ঢাকা মেট্রোগ-৩৩-৮৫৭৩), (ঢাকা মেট্রো-গ-৩৯-১২১০ নম্বর) গাড়ি ফেন্সিডিল ও ইয়াবাসহ র্যাব, থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটকহয়েছে। তার পরও নূর হোসেনের ভয়ে তাকে কেউ কিছু বলার সাহস পেত না। সাত হত্যার পর সালাউদ্দিনকে বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। এখন আবার সেই সালাউদ্দিনকে সভাপতি করে কমিটি করায় দেখা দেয় ক্ষোভ। তাকে মেনে নিতে পারছেনা গাড়ি মালিকরা।
তবু সালাউদ্দিন অদৃশ্য শক্তির ঈষারায় সভাপতি হয়ে ফের রেন্ট-কার স্ট্যান্ডকে চাঁদাবাজি ও মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে। জানতে চাইলে কমিটির সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন বলেন,স্ট্যান্টকে বিতর্কিত ও চাঁদাবাজি করতে নিষেধ করায় সালাউদ্দিন কমিটির কোন কর্মকর্তার মতামত না দিয়ে এককভাবেই চাঁদাবাজি অব্যাহত রাখার জন্য গাড়ি মালিকদের সাথে গোপনে গোপনে মিটিং করছে। বিষয়টি জানার পর বাধা দিলে তিনি তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে স্ট্যান্ডে মোহড়া ও চাঁদাবাজি করার চেষ্টা চালায়।
কমিটি গঠনের পর জানতে চাইলে সালাউদ্দিন বলেছিলেন, তিনি কমিটি গঠন ও সভাপতি হওয়ার বিষয়ে কিছু জানেন না। এখন নিজেকে সভাপতি দাবি করে বলেন, সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন আমাকে স্ট্যান্ডে যেতে দিচ্ছেনা। তাই আমি আমার অধিকার আদায়ের চেষ্টা করছি। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি গোলাম মোস্তফা বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি।
পরে রাতে দুইপক্ষকে থানা ডেকে এনে কোন ধরণের চাঁদাবাজি ও মারামারি করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা বলে সতর্ক করি। পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা সাপেক্ষে সমস্যা সমাধান করার নির্দেশ দিয়েছি।