একাধিক মামলার আসামী মীর রাসেল দুসসের চেয়ারম্যান হয়ে অপরাধের রাজত্ব কায়েম করছে।

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ  সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরে নানা অভিযোগসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলার আসামি ও অস্ত্র ব্যবসায়ী মীর রাসেল। বিগত কয়েকবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেও জামিনে বের হয়ে আবার শুরু হয় অপরাধ কর্মকান্ড। অস্ত্র ব্যবসার সাথে যোগ হয়েছে মাদক ব্যবসা।

তার এই রাজত্ব কায়েম করার জন্য রয়েছে একাধিক ক্যাডার বাহিনী। গড়ে তুলেছে দুসস নামক আন্ডারগ্রাউন্ড সংগঠন।  জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী এলাকার মীর আনোয়ার হোসেনের ছেলে মীর মাহবুব হোসেন রাসেল। মাদকাসক্ত মাদক বেপারীর সাঙ্গ-পাঙ্গদের নিয়ে সংগঠিত করেছে দুরন্ত সত্যের সন্ধানে ‘দুদস’ নামের একটি সংগঠন। এই ব্যানারের মাধ্যমে চলছে তার বিভিন্ন ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ড।

নিজের গড়স সংগঠনের নিজেই চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন। সন্ত্রাসীদের নিয়ে অস্ত্র ব্যবসা ছাড়াও বর্তমানে মাদকের ডিলার বলে জানায় এলাকাবাসী। চলতি বছরের (১০জুন) মাদক ব্যবসার অভিযোগে রাসেলসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রোমান নামের এক ব্যক্তি । পরে অভিযোগের কাগজ জেলা পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, অফিসার ইনচার্জ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশসহ বিভিন্ন দপ্তরে জমা দেয়া হয়।এছাড়াও রাসেলের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।

সন্ত্রাসী,মাদক কারবারি রাসেল বিভিন্ন সময় মাদকসহ আটক হয়ে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে এসে আবার তার অপকর্ম ও মাদক ব্যবসা অস্ত্র ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।  পুলিশের তথ্যমতে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর ধর্মতলা রোড থেকে সন্ত্রাসী রাসেলকে গ্রেফতার করে। এসময় তার কাছ থেকে পুলিশ বিদেশি (আমেরিকা) তৈরি সেভেন পয়েন এমএম পিস্তল গুলিসহ ও একটি চাইনিজ কুড়াল উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পুলিশ বাদী হয়ে একটি অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়। এই ঘটনার আগে ২০১২ সালে রাসেলসহ দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। তখন ডিবি পুলিশ জানিয়েছেন রাসেল মূলত একজন অস্র ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী। রাসেলের এসব অপকর্ম ও অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারের ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই মামলায় দীর্ঘদিন কারাভোগ করার পর জামিনে বেরিয়ে আসে রাসেল।

২০১৩ সালের ১০ নভেম্বর সন্ত্রাসী রাসেলসহ একটি গ্রুপ নাশকতা সৃষ্টির জন্য নারায়ণগঞ্জ আদমজী চিটাগাং রোডের পাঠানটুলি জৈনেক আলী আকবর মাদবরের সিমেন্টের দোকানের সামনে লাঠিসোটা নিয়ে ককটেল বোমা ফাটিয়ে এক অরাজকতা সৃষ্টি করে। এবং প্রধান সড়কের যানবাহন জোরপূর্বক থামিয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ও লাঠিসোটা দিয়ে বিভিন্ন গাড়ির গাস ভাঙচুর করে। তৎকালীন সময় অগ্রবাণী প্রতিদিন পত্রিকার ফটো সাংবাদিক আজাদ হোসেন ও কাজী মাসুদকে বেধড়ক মারপিট করেন এবং তাদের ব্যবহূত ক্যামেরা ভাংচুর করে।

এছাড়াও লিটন নামে এক রিকশা চালকের বাম পা রক্তাক্ত জখম করে কয়েকটি ককটেল বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে সন্ত্রাসী রাসেল গং। পরে ওই আহত রিক্সাচালককে খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করায় ওই দুই সাংবাদিক।  ফটোসাংবাদিক আমজাদ হোসেন খোঁজ নিয়ে সন্ত্রাসী রাসেলসহ ২৮ জনের নামে উল্লেখ্য এবং অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানায়। নাশকতার ঐ মামলায় আমজাদের উপর ক্ষুব্দ হয় সন্ত্রাসী রাসেল বাহিনী।

প্রতিশোধ নেওয়ার ফন্দি করতে থাকে সন্ত্রাসী রাসেল বাহিনী। এক পর্যায়ে গত বছরের ২৮ অক্টোবর রাতে সন্ত্রাসীরা তার কয়েকজন সহযোগীসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাঠানটুলি পানির কল এলাকায় আমজাদ হোসেনের বাড়িতে হানা দেয়। বাড়িতে ঢুকে রাসেল ও তার সহযোগীরা আমজাদ কে মারধর করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমজাদের মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। ঘরে ঢুকে আমজাদ হোসেনের ডিএসএলআর ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলে এবং ঘরের মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়।

পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসী রাসেল বাহিনী ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ঐ ঘটনায় সন্ত্রাসী ও অস্ত্র ব্যবসায়ী রাসেলকে প্রধান আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করে আমজাদ হোসেন।  এলাকাবাসী ও সাধারন মানুষ জানায়, আনোয়ার হোসেনের ছেলে মীর রাসেল একজন মাদক ব্যবসায়ী ও অস্ত্র ব্যবসায়ী। অস্ত্রসহ ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া রাসেল এখন অপরাধ জগতের মাফিয়া ডন। সে তার অপকর্ম আড়াল করতে দুরন্ত সত্যের সন্ধানে ‘দুসস’ নামক একটি ভুঁইফোড় সংগঠন বানিয়ে নানা সন্ত্রাসী
অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।

সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী এই রাসেলের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন সাধারণ এলাকাবাসী।  এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি কামরুল ফারুক এর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দুরন্ত সত্যের সন্ধানে ‘দুসস’ নামক একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান মীর রাসেলের নামে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় বিস্ফোরক মামলাসহ ২ টি মামলা রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here