নারায়ণগঞ্জ সাইনবোর্ড মিতালী মার্কেটের পাল্টা কমিটি, অনুমোদন পেলেই দখল

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড সাহেবপাড়ায় মিতালী মার্কেট দোকান মালিক সমিতির নেতৃত্ব নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে একটি চক্র। মার্কেটের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতকারী ওই চক্রটি নির্বাচিত কমিটির কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পাল্টা কমিটি গঠন করে শ্রম অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন করিয়ে মার্কেট দখল নিতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছে। অনুমোদন হলেই মার্কেট দখল নিয়ে দুই কমিটির মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হওয়ার অশঙ্কা করছে ব্যবসায়ীরা।

জানা গেছে, ১২ একর জমিতে গড়ে উঠা দেশের বৃহত্তম মিতালী মার্কেট দোকানদার সমিতির বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৬ হাজার ২৩৬ জন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই অনিয়ম দুর্নীতি, অন্যের জমি দখল আর লুটপাটের মহোৎসব চালায় মার্কেট পরিচালনাকারীরা। মামলা হামলা করে নিরীহ মানুষের জমি দখল করে গড়ে উঠা এই মার্কেটে দোকান কিনে চরম বিপাকে পরে হাজার হাজার ব্যবসায়ী। নেতৃত্বের বিরোধ আদালতে গড়ায়।

মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশনের প্রদত্ত রায়ে নির্বাচনের মাধ্যমে অত্র সমিতির কার্যকরী কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর ৫ সদস্যের আহবায়ক কমিটি গঠন করে নারায়ণগঞ্জ শ্রম অধিদপ্তর। ওই কমিটির আহবাক শামছুল ইসলাম তানভীর নির্বাচন কমিশনার হয়ে ২০১৮ সালের ১০ মার্চ নির্বাচন সম্পন্ন করেন। সে নির্বাচনে হাজী ইয়াছিন মিয়া সভাপতি ও হাজী ফেরদৌস আহমদ সাধারণ সম্পাদক হয়ে ২৯ সদস্যের কমিটি নির্বাচিত হয়।

নির্বাচিত কমিটি দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পর সাবেক কমিটির কিছু লোকজন মার্কেটের প্রায় ৭ কোটি টাকা আত্মসাত করার প্রমাণ মিলে। এ নিয়ে চলতি বছরের গত ১২ জুলাই সমিতির কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে টাকা আত্মসাতের ফিরিস্থি তুলে ধরেন সভাপতি ইয়াছিন মিয়া। মার্কেটের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলাও করা হয়।

অভিযোগ জানা গেছে, অর্থ লোপাটের অভিযোগ তোলার পর অপকর্ম আড়াল করতে উঠেপড়ে লাগে চক্রটি। সমিতির ৬ হাজার ২৩৬ জন সদস্যের মধ্যে মাত্র ৫ শতাধিক সদস্যের স্বাক্ষর নিয়ে বর্তমান নির্বাচিত কমিটির বিরুদ্ধে অনাস্থা দেয় জামান গ্রুপ। তারা জামান মিয়াকে আহবায়ক করে একটি মনগড়া কমিটি গঠন করে।

ওই কমিটি মাত্র ৫ শতাধিক সদস্য নিয়ে পাতানো নির্বাচনের আয়োজন করে। পাতানো নির্বাচনে মো.লোকমান খান সভাপতি ও জামান মিয়া সাধারণ সম্পাদক হয়ে ২৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি অনুমোদনের জন্য নারায়ণগঞ্জ শ্রম অধিদপ্তরে জমা দেয়। শ্রম অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর জামান চক্র মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

সূত্র জানায়, তাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে বিএনপি থেকে সদ্য আওয়ামীলীগে যোগদানকারী নাজিম উদ্দিন নাজু ও জয়নাল আবেদীন ফারুক। সূত্রটির দাবি, অস্ত্র দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ একাধিক মামলার আসামি নাজুর প্রশ্রয়ে জামান চক্র তথাকথিত কমিটি গঠন করে মার্কেট দখল করার নীল নকশা করছে। জানা গেছে ইন্দনদাতা নাজু ইয়াছিন মিয়ার নেতৃত্বাধীন কমিটির সহসভাপতি আবার লোকমান খান নেতৃত্বাধীন পাল্টা কমিটিরও সহসভাপতি।একই অধিদপ্তরের নির্দেশনায় একটি নির্বাচিত কমিটি থাকার পর আরেকটি কমিটি গঠন রহস্যজনক। তবে পাল্টা কমিটি গঠনকে ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন বর্তমান কমিটির লোকজন।

এ বিষয়ে জানতে পাল্টা কমিটির সভাপতি মো.লোকমান খানের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভর না হলেও সাধারণ সম্পাদক জামান মিয়া জানায়, ইয়াছিন মিয়ার কমিটির বিরুদ্ধে সমিতির ৫শতাধিক সদস্য অনস্থা দিয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়েছে। শ্রম অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন পেলেই আমারা মার্কেটে যাব।

বর্তমান কমিটির সভাপতি হাজী ইয়াছিন মিয়া জানায়, সমিতির গঠনতন্ত্র মোতাবেক যথাসময়ে নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন হবে। যারা বিজয়ী হবে তারা সমিতি পরিচালনা করবে। অনিয়ম করে কেউ আসতে পারবেনা। মার্কেটে আসতে হলে বিগত সময়ে যে কোটি কোটি টাকা লোপাট করেছে তার সঠিক হিসেব দিতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here