প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি: সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে যাত্রীবাহী লেগুনা থেকে প্রকাশ্যে চলছে চাঁদাবাজি। হাইকোর্টের নির্দেশনা উপেক্ষা করে হাইওয়ে পুলিশের শিমরাইল ক্যাম্পের ইনচার্জ টিআই শরফুদ্দিনকে মাসোহারা দিয়ে রুট পারমিট ছাড়াই ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলছে অবৈধ লেগুনা। এসব লেগুনা থেকে চাঁদা আদায় করছে হাসানুজ্জামান পরশ ও আতিকুর রহমান ওরফে টেম্পু আতিক।
জানা গেছে, ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত দুই শতাধিক যাত্রীবাহী লেগুনা চলাচল করছে। শিমরাইল মোড় হাজী আহসান উল্লাহ সুপার মার্কেট ও প্রিয়ম টাওয়ারের সামনে মহাসড়ক দখল করে বানানো হয়েছে লেগুনা স্ট্যান্ড। এসব লেগুনার অধিকাংশ চালকই অপ্রাপ্ত বয়স্ক। তাদের নেই কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স। বেশিরভাগ গাড়ি লক্কর-ঝক্কর। নেই অবৈধ কোন কাগজপত্র ও রুট পারমিট। হাইওয়ে পুলিশকে ম্যানেজ করে মহাসড়কে দিব্বি চলছে এসব লেগুনা।
লেগুনা মালিক সূত্রে জানা গেছে, শিমরাইল এক্সপ্রেস লিমিটেড (এস,ই,এল) নামক কোম্পানির ব্যানারে চলছে লেগুনা। কোম্পানির এমডি হাসানুজ্জামান পরশকে চাঁদাবাজির অভিযোগে একাধিকবার গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায় থানা পুলিশ। চাঁদাবাজির একাধিক মামলার আসামি পরশ কিছুদিন জেল হাজত বাস করে জামিনে বের হয়ে আবার শুরু করে চাঁদাবাজি। পরশ ও আতিক শিমরাইল মোড়ে প্রতিটি লেগুনা থেকে দৈনিক ৮০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে বলে অভিযোগ করেন একাধিক গাড়ি মালিক।
গাড়ি মালিকদের অভিযোগ, দৈনিক চাঁদা বাদেও মাসিক এক হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে গাড়ির সামনে গ্লাসে ষ্টিকার লাগাতে হয়। ষ্টিকার না লাগিয়ে গাড়ি চলাচল করতে পারেনা। ফলে বাধ্য হয়ে পরশকে চাঁদা দিয়ে গাড়িতে ষ্টিকার লাগাতে হয়। পরিসংখ্যান মতে দৈনিক দুই শতাধিক গাড়ি থেকে ৮০ টাকা করে ১৬ হাজার টাকার অধিক চাঁদা আদায় করছে পরশ ও আতিক। যা মাসে হয় ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার অধিক। এছাড়া ষ্টিকার বাবদ মাসে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে ২ লাখ টাকা।
এতে মাসে মোট চাঁদার পরিমান হয় ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা বেশি। জানতে চাইলে হাসানুজ্জামান পরশ ৮০ টাকা করে চাঁদা আদায়ের কথা স্বীকার করে বলেন, গাড়ি মালিকদের সম্মতি নিয়ে ৮০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। তার মধ্যে প্রতি গাড়ি বাবদ দৈনিক ৩০ টাকা করে দিতে হচ্ছে লাইনম্যানদের। তবে গাড়ির সংখ্যা দেড় শতাধিক বলে জানান পরশ। তার মধ্যে ৫০ টি গাড়ির মালিক প্রশাসনের সদস্য ও সাংবাদিক।
এসব গাড়ি থেকে কোন চাঁদা নেওয়া হয়না। চাঁদার টাকা কাকে দেই তা সব গাড়ির মালিক জানে। তাদের টাকা না দিলে সড়কে গাড়ি চলবেনা। গাড়ি চলাচল সচল রখতেই চাঁদা তুলে তাদের মাসোহরা দিচ্ছি। তারা কারা জানতে চাইলে পরশ বলেন, অনেকই আছে,হাইওয়ে পুলিশ, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতা কেউ বাদ নেই। আতিক বলেন, আমি একজন গাড়ির মালিক। চাঁদাবাজির সাথে আমি জড়িত নই।
লেগুনা থেকে মাসোহারা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে হাইওয়ে পুলিশের শিমরাইল ক্যাম্পের টিআই সরফুদ্দিন বলেন, মহাসড়কে লেগুনা চলাচলের কোন বৈধতা নেই। তবু আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে লেগুনা চলাচল করছে। আমরা প্রতিদিনই লেগুনা আটক করে ডাম্পিং করছি। মহাসড়কে যাতে লেগুনা চলতে না পারে সেজন্য আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি।