প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ সিদ্ধিরগঞ্জ(নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে নির্মাণাধিন চারটি বহুতল ভবন মালিককে ৬ লাখ টাকা জরিমানা করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত। বুধবার (১২ জুন) দুপুর ২ টায় নয়াআটি মুক্তিনগর এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। নকশা বহির্ভূতভাবে এসব ভবন নির্মাণ করায় জরিমানা করা হয়েছে বলে জানান রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মনির হোসেন হাওলাদার।
স্থানীয়রা জানান, অভিযানের প্রস্তুতি যুদ্ধে যাওয়ার মত হলেও বাস্তবে কিছুই হয়নি। নির্মাণাধিন বহুতল ভবন ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নিয়ে কয়েকটি খোঁচা দিয়ে মালিকদের সঙ্গে দেনদরবার করেন রাজউক কর্মকর্তারা। দরকষাকষির পর বনি বনা হয়ে গেলে ভাঙার কাজ স্থগিত করে করা হয় জরিমানা। রাজউকের জুন-৬ এর নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলিক কার্যালয়ের অথরাইজড অফিসার মো. রাজিবুল ইসলাম জানান, নশকা বিহর্ভূতভাবে ভবন নির্মাণ করায় তিনটি ভবন মালিককে ১ লাখ করে ৩ লাখ আর একটি ভবন মালিককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভবনগুলো কোন একক মালিকানা নয়। প্রত্যেকটি ভবন ২০ থেকে ৭০ জন পর্যন্ত মালিক রয়েছে। এখনো ভবনগুলোর কোন নাম করণ করা হয়নি। তবে ১০ তলা দুটি ভবন মালিক হিসেবে পরিচিত অরুন মিয়া। অভিযান চলাকালে তিনি উপস্থিত ছিলেন না। অভিযান বিষয়ে ফোনে অরুন মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মালিক বলেন, রাজউকের অঞ্চলিক অফিসে গিয়ে অরুন মিয়াকে দেখা করতে বলা হয়েছিল।
তখন তিনি সব মালিকদের ডেকে বিষয়টি জানান। এর আগেও দুবার অফিসে ডেকে নিয়ে টাকা নিয়েছে রাজউক কর্মকর্তারা। তাই বেশিরভাগ মালিক টাকা দিতে রাজি না হওয়া অরুন মিয়া রাজউক অফিসে যায়নি। তাই অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। তিনি
আরো বলেন, রাজউক কর্মকর্তারা অভিযান চালিয়ে ভবনের কিছু অংশ ভেঙে দিয়ে দেনদরবার শুরু করে। তাদের চাহিদা পুরুন হলে তাৎক্ষণিক জরিমানা করে চলে যায়। পরে অফিসে গিয়ে টাকা দিয়ে ভাঙা অংশ মেরামত করা হয়।
দীর্ঘদিন ধরেই চলছে রাজউক কর্মকর্তাদের এমন বাণিজ্য। অভিযান প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা হাসান মজুমদার বলেন, অরুন মিয়ার দুটি ভবনের বর্ধিত অংশে একটি খোঁচা দিয়ে সামান্য ভেঙে ফেলা হয়। পরে চলে জরিমানা করার প্রক্রিয়া। একটি ভবনের জন্য ৩ লাখ আরেকটি ভবনের জন্য ১ লাখ টাকা জরিমানা করে অভিযান সমাপ্ত করা হয়।
অন্য একটি ভবন মালিকদের মধ্যে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আমাদের ভবনটি রাজউকের সব নিয়ম মেনে করা হচ্ছে। দুদিন আগে রাজউকের অঞ্চলিক কার্যালয়ে গিয়ে দেখা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। দেখা না করায় ক্ষিপ্ত হয়ে রাজউক কর্মকর্তারা ভবন ভেঙ্ েফেলার ভয় দেখিয়ে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন।
তবে আমাদের ভবনে কোন খোঁচা দেয়নি।অফিসে ডেকে নিয়ে অর্থ আদায়। ডাকে সারা না দিলেই অভিযান। ভবন মালিকদের এমন অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করেন অথরাইজড অফিসার মো. রাজিবুল ইসলাম। ভাঙা অংশ মেরামত করার পর রাজউক নিরব কেন জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান।