নাসিক ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাদলের স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু

0
নাসিক ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাদলের স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু, আটক

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলের প্রথম স্ত্রী সাদিয়া নিঝুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। রোববার দুপুরে শহরের চাষাঢ়া রেললাইন থেকে নিঝুর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে এ রেললাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। শাহজালাল বাদলের সেভেন মার্ডারের ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর হোসেনের ভাতিজা। এর আগে নিঝু সংবাদ সম্মেলন করে তার স্বামী শাহ জালাল বাদলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছিলেন।

তবে পরিবারের দাবি, ছাদে হাঁটতে গিয়ে সেখান থেকে হয়তো মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে অথবা কোনোভাবে কিছু একটা হয়ে মারা গেছেন। নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ফরহাদ জানান, ময়নাতদন্তের পর বোঝা যাবে ঠিক কি কারণে তিনি মারা গেলেন। এদিকে এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে স্থানীয়দের দাবি, নিঝু তার স্বামী শাহজালাল বাদলের দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।

নিহতের মা ডালিয়া হায়দার জানান, সকালেও আমার সঙ্গে সে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলল। বললাম শসা খাও পেপে খাও, বলে এগুলো খেলে মোটা হয়ে যাবে। আমরা একসঙ্গেই ছিলাম। পরে আমি নিচে গেলাম, ও বলল ছাদে একটু হাঁটতে যাবে। এর কিছুক্ষণ পর ছাদের কিনারে যাওয়ার পরেই সে হয়তো পড়ে যায়। গতকালও ও আমাকে বলেছিল আম্মু আমি ছাদ থেকে পড়ে যেতে নিয়েছিলাম। তার মায়ের দাবি, পারিবারিকভাবে কোনো ঝগড়া বা কোনোকিছু হয়নি। ওর হাই প্রেসার, হাই ডায়বেটিস ছিল, এখন কি হয়েছে বলতে পারছি না।

এ ব্যাপারে কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল বলেন, আমি আমার অফিসে (নাসিক ৩ নং ওয়ার্ডের সিদ্ধিরগঞ্জের বটতলা এলাকায়) কাজ করছিলাম। তখনই আমার শ্বাশুড়ির ফোন আসে। উনি বললেন- তুমি তাড়াতাড়ি আসো, নিঝু ছাদ থেকে পড়ে গেছে। ওর সঙ্গে কোনো পারিবারিক কলহ ছিল না। এই চার পাঁচদিন আগেও ও আমার সঙ্গেই ছিল। আমার ছেলে এখানে ক্যামব্রিয়ান স্কুলে পড়ে, তাই ও এখানেই বেশি থাকে।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের ডেকে নানা বিষয়ে অভিযোগ করেন নিঝু। সাদিয়া নিঝু সে সময় বলেছিলেন, ২০০৭ সালে আমার সঙ্গে শাহজালাল বাদলের বিয়ে হয়। কিন্তু তিনি আমাকে স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করছেন। আমাদের একমাত্র ছেলে আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে হয়েছে। কারণ বাদল সন্তানদানে সম্পূর্ণ অক্ষম। তিনি আমার অনুমতি না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। তার চাচা, চাচাতো ভাই কাউকে সে প্রাধান্য দেয় না। তার মা ৪৫ দিন ধরে লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।

সে তার কোনো খরচ দেয়নি। বাদল মায়ের একমাত্র ছেলে। তার বাবা দুই বিয়ে করেছে। তার মা ৭ বছর ধরে লিভার ক্যান্সারে ভুগছিলেন। আমার প্রেগন্যান্ট অবস্থায় সে টালবাহানা শুরু করে। সেসময় থেকে তার ফোন ঘণ্টার পর ঘণ্টা ওয়েটিং থাকতো, বাসায় থাকতো না। আমার বাচ্চাটা খুব অসহায়। ১০ বছর ধরে আমাদের মাঝে স্বামী-স্ত্রীর কোনো সম্পর্ক নেই। আমার অন্যায় কি আমি জানতে চাই। যেহেতু সে জনপ্রতিনিধি, আমি জানতে চাই আমার সন্তানের দোষ কি? তিনি আরও বলেছিলেন, আমি নারায়ণগঞ্জের মেয়ে।

আমি জানতে চাই আমার সন্তানকে কেন এ বাসায় আসতে দেয়া হচ্ছে না। আমি কেন প্রতারিত হচ্ছি। আমার দুটি সন্তান মারা যাওয়ার পর এটা আমার একমাত্র সন্তান। আমরা অসহায়, আমাদের কোনো খরচ সে দিচ্ছে না। আমি বাসায় আসার পর থেকে সে আমার ফোন ধরে না। আর বাসায়ও আসে না। আমি এ বিষয়ে মামলা করব, আইনগত ব্যবস্থা নেব।

আমি চাই সমাজের সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সহযোগিতা করুক। তবে কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল সেসময় সাংবাদিকদের জানান, নিঝু নেশাগ্রস্ত। তাকে তার সুস্থতায় রিহ্যাব সেন্টারে পাঠানো হবে। তার বিষয়টি পারিবারিকভাবে সমাধানের চেষ্টা চলছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here