প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নিজস্ব সংবাদদাতা : নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় রেষ্টুরেন্টে গুলিতে নিহত ম্যানেজার মো. কাজল (৫৫) এর লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন তার সহকর্মী ও এলাকাবাসী। এ সময় অভিযুক্ত আজহারসহ দোষীদের শাস্তির দাবি জানান তারা। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গ থেকে শহরের বাগে জান্নাত এলাকায় লাশ পৌঁছালে তার সহকর্মীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের আহাজারিতে আশপাশ এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
এলাকাজুড়ে শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পরে সহকর্মী ও এলাকাবাসী তার লাশ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। সুলতান ভাই কাচ্চি রেষ্টুরেন্টের কর্মচারী ইব্রাহিম বলেন, আমাদের ম্যানেজার কাজল অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। তার কোনো দোষ ছিল না। তাকে কোনো কথা ছাড়াই গুলি করে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই। দোষীদের ফাঁসি দাবি জানাই। কর্মচারী সোহাগ বলেন, আমাদের ম্যানেজারের মতো মানুষ হয় না। তাকে বিনা দোষে আজহার গুলি করেছে। আমরা তার ফাঁসি চাই। প্রসঙ্গত, গত রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে চাষাঢ়ার আঙ্গুরা প্লাজায় ‘সুলতান ভাই কাচ্চি’ নামে রেস্টুরেন্টে প্রকাশ্যে গুলি ছোড়েন ভবন মালিক আজাহার তালুকদার।
এতে রেষ্টুরেন্টের ম্যানেজার সফিউর রহমান কাজল ও কর্মচারী জনি গুলিবিদ্ধ হন। এর মধ্যে কাজলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ রাত সাড়ে ১১টার দিকে আজাহার তালুকদার ও তার ছেলে আরিফ তালুকদার মোহনকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। এঘটনায় রাতেই রেষ্টুরেন্টের মালিক শুক্কুর আলী বাদী হয়ে ভবন মালিক আজাহার তালুকদার ও তার ছেলে আরিফ তালুকদার মোহনকে আসামি সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে বলে আদালত মঙ্গলবার (৭ ফেব্রয়ারি) রিমান্ডের দিন ধার্য করে তাদের কারাগারে পাঠায়।
এদিকে সোমবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মো. কাজল মারা যান। অপরদিকে, মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলমের আদালতে আসামিদের হাজির করে তিনদিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত শুনানি শেষে দুইদিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। একই সাথে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে আদালতে ৩০২ ও ৩৪ দ্বারা সংযুক্ত করে হত্যা মামলার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা আবেদন করলে আদালতে তা মঞ্জুর করেন। নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক ওসি মো. আসাদুজ্জামান আসাদ এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার রাতেই ‘সুলতান ভাই কাচ্চি’র মালিক শুক্কুর জানান, ভবন মালিক আজহার তালুকদার এসে বলেন পানির বিল বাবদ আপনাকে ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। আমরা ১০ লাখ টাকা ঋত হয়ে গেছি। আমি বললাম ১০ টাকা কেনো দিবো? আমি তো আপনার কাছ থেকে দোকান নেই নাই। আমার বাড়িওয়ালা আপনার ভাই আজিজুল হক। তার কাছ থেকে আমি দোকান ভাড়া নিয়েছি। আর আমি তো পানির বিল প্রতিমাসে দিয়েই যাই। পানিসহ আমার ৮০ হাজার টাকা ভাড়া। পানির জন্য ৫ হাজার, আর ভাড়া ৭৫ হাজার।
এসব নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে আজাহার আমাকে খারাপ ভাষায় গালমন্দ করে। পরে আমিও গালি দেই। এরপর সে বলে দাড়া আসতাছি। একথা বলে সে চলে যায়। পরক্ষনে এসে সে গুলি করে। এতে আমার ম্যানেজারসহ ২জন আহত হয়।