না.গঞ্জে পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে আদালতে সন্ত্রাসী সোয়াদের আত্মসর্মপণ,কোন ছাড় নেই : এসপি।

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ অবশেষে পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে আদালতে আত্মসর্মপণ করেছে সাংবাদিকদের উপর হামলাকারীদের প্রধান আসামী চিহ্নিত সন্ত্রাসী সোয়াদ। সোমবার ( ২০ জানুয়ারী ) সকালে নিজেকে আত্মসর্মপণ করে জামিন চাইলে আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে। এছাড়াও বিজ্ঞ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা খাতুন তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

এদিকে এ ঘটনার পর থেকে সন্ত্রাসী সোয়াদ ও তার অন্যান্য সহযোগীরা শহরেই ঘুরে বেড়াচ্ছে এমন তথ্য জানা যায়। তবে ঘটনার পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও তাকে অদৃশ্যকারণে গ্রেফতার করতে পারেনি নারায়ণগঞ্জ সদর থানার পুলিশ। এতে করে সাধারণ মানুষ ও সাংবাদিক মহলের মাঝে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত গেফতার সহ সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে হয়েছে মানববন্ধন ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান। প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে আদালতে চলে আসলো অথচ পুলিশ সন্ত্রাসীকে গেফতার করতে পারেনি, কি কারণে? সাংবাদিককে হত্যার চেষ্টাকারী ছাড় পেয়ে গেলে সাধারণ মানুষ আস্থা রাখবে কি করে?

স্থানীয়দের দাবী, দ্রুত যেন এই সন্ত্রাসীকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হয়। এছাড়াও তার কাছে থাকা সন্ত্রাসী কার্যকলাপে ব্যবহৃত অস্ত্র গুলো উদ্ধার করা হয়। বের করা হোক সন্ত্রাসী সোয়াদকে দিয়ে মাদক কারবারীর বাকী শেল্টারদাতাদের। কারণ তার অত্যাচারে অতিষ্ট স্থানীয় ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, চাকুরীজীবী, শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষ। বিপুল অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসবাদ করা হলেই অনেক অজানা তথ্য ও মূল শেল্টারদাতাদের নাম বের হয়ে আসবে। অপকর্ম প্রতিরোধে একমাত্র পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদই ব্যপক ভূমিকা রাখতে পারে বলে স্থানীয় ও ভোক্তভোগীরা মনে করছে।

আরো জানা গেছে, আটক হওয়া ২নং আসামী আব্দুর রহমানের মত অন্যান্য রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহারকারীরা সন্ত্রাসী সোয়াদকে দিয়ে নানা অপকর্ম করাতো। এম সার্কাস, হাজিগঞ্জ, নবীগঞ্জ, ঈশা খাঁ কেল্লা আশপাশে চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজী, ট্রলারে ডাকাতি, মারামারী সহ অধিপত্য বিস্তারে সোয়াদ অস্ত্র দিয়ে মানুষকে হামলা করে আহত করায় অভ্যস্থ। সাংবাদিকদেও হামলার দেশীয় অস্ত্রটি দেয় ট্রলার ছিদ্র ও মানুষকে আঘাত করার জন্যই ব্যবহৃত হত। জড়িত রয়েছে বিভিন্ন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে। মাদক বিক্রি ও সেবন সহ তার নৈরাজ্যের কাছে সাধারণ মানুষ আতংকিত ও অসহায়। এরআগেও তাকে বিভিন্ন অপরাধে পুলিশ গ্রেফতার করেও ছেড়ে দেয় বলে জানায় স্থানীয়রা। এ ব্যপারে নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম (পিপিএম) বলেছেন, বিষয়টি আমি অবগত আছি। নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসিকে রিমান্ড আবেদনের নির্দেশ দিয়েছি। অপরাধীদের জন্য আমাদের পুলিশের পক্ষ থেকে কোন ছাড় নেই।

প্রসঙ্গত, এরআগে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারী) সোনারগাঁ লোক ও কারু শিল্প মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর আগমনীতে পেশাগত দায়িত্ব পালনে যাচ্ছিল সাংবাদিকরা। পথিমধ্যেই শীতলক্ষ্যা নদী পার হতে হাজীগঞ্জ ঘাট থেকে ফেরিতে উঠে আহত তিন সাংবাদিকসহ স্থানীয় ও জাতীয় গন্যমাধ্যমে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক। ফেরি চালু হবার পর দেখা যায় এক শিশুকে মারধর করছে সন্ত্রাসী সোয়াদ নামের যুবক সহ অন্যান্যরা। তাতে প্রতিবাদ জানিয়ে শিশিুটির অভিভাবককে বিচার দেয়ার পরার্মশ দেন আনন্দ টিভির নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি এবং নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ এর সম্পাদক সৈয়দ সিফাত আল রহমান লিংকন। কিন্তু এতে উত্তেজিত হয়ে সাংবাদিক লিংকনকে শারিরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।

একপর্যায়ে দস্তাদস্তি হলে আগে থেকেই রক্ষিত করা ধারালো একটি গেতি শারস (রাস্তা কাটার যন্ত্র) নিয়ে এসে এলোপাথারি কোপ দিতে থাকে। পরবর্তিতে জীবন রক্ষার্থে তাকে প্রতিহিত করে আহত হন সাংবাদিক লিংকন। এসময় সাংবাদিকের মোটর সাইকেল কুপিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ করা হয়। এসময় আরও আহত হন সাংবাদিক জামাল তালুকদার ও মিজানুর রহমান। একপর্যায়ে ঐ সন্ত্রাসীর হাত থেকে ধারালো শারস ছিনিয়ে নিয়ে তাকে আটক করা হয়।

তবে আবদুর রহমান ছাড়িয়ে নিয়ে সন্ত্রাসী সোয়াদকে পালাতে ট্রলারে উঠিয়ে দেয়। পরে হামলাকারীর অস্ত্রটি পানিতে ফেলে আলামত ধ্বংস করার চেষ্টা করে এবং সাংবাদিকদেরকে ঐ সময় আটকে রেখে হুমকী দিতে থাকে। ঐ সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে সন্ত্রাসী সোয়াদের সহযোগী আবদুর রহমানকে আটক করে আদালতে রিমান্ড চাইলে তা না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর র্নিদেশ দেয় বিজ্ঞ আদালত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here