প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মাত্র বিশ টাকা মূল্যের একটি কোকাকোলার পানীয় বোতল বিনামূল্যে না দেয়ায় নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়ায় তোফাজ্জল হোসেন নামে কোকাকোলা কোম্পানির এক কাভার্ডভ্যান চালককে কোকের বোতল দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে দুই যুবকের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে শহরের চাষাঢ়া বালুর মাঠ এলাকায় এ হত্যাকান্ড ঘটে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শাজাহান নামে এক যুবককে পুলিশ আটক করেছে। তবে ঘটনার পর থেকে মূল অভিযুক্ত যুবক সুমন পলাতক রয়েছে। নিহত তোফাজ্জল হোসেন (৫০) শহরের খানপুর রেললাইন এলাকার বাসিন্দা (মৃত মোসলেম চৌধুরীর ছেলে)। গত এক বছর যাবত তিনি কোকাকোলা কোম্পানির নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিস্ট্রিবিউটর শাখার গাড়িচালক হিসেবে কাজ করে আসছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত তোফাজ্জলের সাথে থাকা কোকোকোলা কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি সৌরভ জানান, চাষাঢ়ায় বিভিন্ন দোকানে মালামাল সরবরাহ করে কাভার্ডভ্যান নিয়ে বাুলরমাঠ এলাকায় প্রবেশ করেন তারা। এসময় রডের দোকান রাজা স্টিলের মিলের সামনে ওই দোকানের কর্মচারি শাজাহান ও পাশের দোকান রায়হান স্টিল মিলের মালিকের ভাই সুমন তাদের গাড়িটি থামায়। এসময় সুমন কাভার্ডভ্যান চালক তোফাজ্জলের কাছে বিনামূল্যে কোকাকোলা খেতে চায়।
সৌরভ বলেন, ড্রাইভার তোফাজ্জল ভাইয়ের কাছে যখন রডের দোকানের ওই দুই যুবক ফাও কোক খেতে চায় তখন তিনি বলেন যে আমাদের কোম্পানি থেকে এখন ফ্রি কোক দেয়া হয় না। এই ধরনের কোন নিয়ম নেই। এই কথা বলে ড্রাইভার তোফাজ্জল ফ্রি কোক দিতে রাজি না হওয়ায় সুমন ও শাজাহন মিলে তার কাভার্ডভ্যান থেকে কোকাকোলার বোতল নিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় তোফাজ্জলকে শহরের খানপুরে ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে সদর মডেল থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদরের জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরে স্বজনরা হাসপাতালে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং হত্যাকান্ডের বিচার চান।
নিহত তোফাজ্জলের দুই ছেলে শামীম ও সাকিব বলেন, আমার বাবা একজন নিরীহ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি কখনোই কারো সাথে কোন ধরণের ঝগড়া বিবাদে জড়ান না। সব সময় এগুলো এড়িয়ে চলতেন। তারপরেও আমার বাবাকে বোতল দিয়ে এভাবে পিটিয়ে হত্যা করলো। আমরা আমাদের বাবার হত্যাকারিদের গ্রেফতার করে সুষ্ঠু বিচার চাই।
সদর মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রিপন আলী খান সময় জানান, নিহতের শরীরে বোতল দিয়ে পিটিয়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত দুইজনের মধ্যে একজনকে আটক করা হলেও সুমন নামে মূল অভিযুক্ত যুবক এখনো পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আসাদুজ্জামান জানান, আটককৃত যুবক শাজাহানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়া এ ঘটনার মূল অভিযুক্ত যুবক সুমনকে গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ব্যাপারে কোকাকোলা কোম্পানির পক্ষ থেকে অভিযোগ দেয়া হয়েছে এবং মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।