প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নিজস্ব সংবাদদাতা: ২৩ মার্চ সোমবার মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক,২নং সেক্টর কমান্ডার, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক তথা নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য কমান্ডার সিরাজুল ইসলামের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী।
এ উপলক্ষ্যে মরহুমের টানবাজারের মিনাবাজারের বাস ভবনে তার পরিবারের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে দিনব্যাপী পবিত্র কোরআন খান,বাদ মাগরিব হত দরিদ্রদের মাঝে ইফতার পরিবেশন এবং পরিশেষে মরহুমের বিদেহী রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠান। দোয়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য মরহুমের কণ্যা নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সহ-সভাপতি সামিয়া ইসলাম নেভিনা এবং তার জামাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাতি খন্দকার মাহমুদুল হাসান আরমান সকলের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম সিরাজ: এক সাহসী নেতার জীবন ও সংগ্রাম বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নাম—বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম সিরাজ। দেশপ্রেম, সংগ্রাম, ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি যে অবদান রেখে গেছেন, তা নারায়ণগঞ্জ তথা বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রারম্ভিক জীবন ও ছাত্র রাজনীতিসিরাজুল ইসলাম সিরাজ ছোটবেলা থেকেই সংগ্রামী মানসিকতার অধিকারী ছিলেন।
ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন এবং নারায়ণগঞ্জের প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা ছিলেন। তিনি জাতির সংকটময় মুহূর্তে নেতৃত্ব দিয়েছেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেছেন এবং জনগণের অধিকার আদায়ে লড়াই করেছেন।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহকুমার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার। তার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা নারায়ণগঞ্জ ও আশপাশের এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দুর্দান্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। সাহসিকতা, কৌশল ও দেশপ্রেমের এক অনন্য উদাহরণ ছিলেন তিনি।
যুদ্ধকালীন সময়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করে গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন পরিচালনা করেন, যা শত্রুবাহিনীর মনোবল ভেঙে দেয়। স্বাধীনতার পর ও রাজনৈতিক জীবন স্বাধীনতার পরও সিরাজুল ইসলাম সিরাজ দেশের কল্যাণে নিজেকে নিবেদন করেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা প্রথম যুগ্ম সম্পাদক। এছাড়া, তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
তার রাজনৈতিক জীবন ছিল জনগণের সেবা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য নিবেদিত।নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি জনগণের কল্যাণে কাজ করেছেন এবং এলাকার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তার সততা, কর্মনিষ্ঠা ও জনসেবার কারণে তিনি মানুষের হৃদয়ে বিশেষ স্থান করে নিয়েছিলেন।ব্যক্তিগত জীবন ও মৃত্যু সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ছিলেন একজন সৎ, নীতিবান ও জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত নেতা। ২০১২ সালের ২৩ মার্চ তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন।
তার মৃত্যুতে দেশ এক সংগ্রামী, দেশপ্রেমিক ও জননেতাকে হারায়। আজ তার ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা তাকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন। আমিন। সিরাজুল ইসলাম সিরাজ কেবল একজন রাজনৈতিক নেতা বা মুক্তিযোদ্ধা নন, তিনি ছিলেন গণমানুষের প্রিয় নেতা, যিনি সারাজীবন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় লড়ে গেছেন। তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে, তার আদর্শ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।