করোনা ভাইরাসের টিকা ৯৫ শতাংশ কার্যকর: দাবি ফাইজারের

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ ডেস্ক নিউজ: যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি ফাইজার শেষ ধাপের পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলের ভিত্তিতে এবার বলেছে, তাদের করোনা ভাইরাসের টিকা ৯৫ শতাংশ কার্যকর। বুধবার ফাইজার এ দাবি করে বলেছে, টিকাটি জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন পেতে তারা শিগগিরই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করবে।

জার্মান কোম্পানি বায়োএনটেকের সঙ্গে মিলে কোভিড-১৯ এর টিকা প্রস্তুত করছে ফাইজার। তাদের দাবি, শেষ ধাপের পরীক্ষায় তাদের টিকা সব বয়সের মানুষের দেহে সমান ভাবে কার্যকর বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। বড় ধরনের কোনও পার্শ্বপতিক্রিয়াও দেখা যায়নি। বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের মানুষের উপর এই টিকার চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষা চালিয়েছে ফাইজার। এর ভিত্তিতে কোম্পানিটি জানায়, তাদের টিকা ৬৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষদের ক্ষেত্রে ৯৪ শতাংশের বেশি কার্যকর। কোভিড-১৯ এই বয়সের মানুষদের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।

ফাইজারের এ ঘোষণার মাত্র দুইদিন আগে মডার্না তাদের কোভিড-১৯ এর টিকা ৯৪ দশমিক ৫ শতাংশ কার্যকর বলে জানিয়েছিল। গত সোমবার মডার্না তাদের শেষ ধাপের পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলের প্রাথমিক তথ্য প্রকাশ করে। ফাইজার ও মডার্নার চূড়ান্ত পরীক্ষার প্রাথমিক ফলাফল প্রত্যাশার চেয়েও ভালো হওয়া অবশ্যই পৃথিবীর জন্য দারুণ সুখবর।

গত বছর ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে সারা বিশ্বে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস এখন পর্যন্ত ১৩ লাখের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, আক্রান্ত সাড়ে পাঁচ কোটির বেশি। থমকে গেছে বিশ্ব অর্থনীতি, মানুষের দৈনন্দিন জীবনে নেমে এসেছে অস্বাভাবিকতা। বুধবার প্রকাশ করা ডেটায় ফাইজার জানায়, তাদের পরীক্ষায় ৪৩ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী অংশ নিয়েছে। যাদের মধ্যে ১৭০ জন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন। ওই ১৭০ জনের মধ্যে ১৬২ জন ‘প্লাসবো আর্ম গ্রুপ’ এবং আট জন ‘ভ্যাকসিন গ্রুপ’।

কোনও ওষুধের ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’ চলার সময় সেটির কার্যকারিতা পরীক্ষায় ‘প্লাসবো’ পরীক্ষাও করা হয়। অর্থাৎ, ওষুধের কার্যকারিতা পরীক্ষায় স্বেচ্ছাসেবকদের একটি দলকে যে ওষুধের পরীক্ষা চালানো হচ্ছে বাস্তবে সেটাই দেওয়া হয়। আরেক দলকে ‘ভুয়া ওষুধ’ দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের সত্যি ওষুধ দেওয়া হচ্ছে বলা হয়। এই গ্রুপকেই প্লাসবো বলে।

ফাইজার জানায়, তাদের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া যে ১৭০ জন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা গুরুতর হয়েছিল। ওই ১০ জনের একজনকে টিকা দেওয়া হয়েছিল, বাকিরা প্লাসবো দলের। এই টিকার খুব একটা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। টিকা দেওয়ার পর শরীরে খুব সামান্য উপসর্গ দেখা দিয়েছিল এবং দ্রুত সেগুলো ঠিক হয়ে যায়। ফাইজারের সিইও অ্যালবার্ট বরলা এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘বিশ্বে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ নতুন করে এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ রোগ থেকে বিশ্বকে রক্ষায় তাই দ্রুত একটি নিরাপদ এবং কার্যকর টিকা আবিষ্কার খুব জরুরি হয়ে পড়েছে।

ফাইজার ও বায়োএনটেক তাদের টিকার ডেটা যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বিশ্বের অন্যান্য দেশের ওষুধের নিরাপত্তা তদারকি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফাইজার এ বছরই পাঁচ কোটি ডোট টিকা উৎপাদন করতে চায়; যা আড়াই কোটি মানুষের জীবন রক্ষা করবে। ২০২১ সালের মধ্যে তারা আরও ১৩০ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here