কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তান কি যুদ্ধেই জড়াচ্ছে !

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ ভারতবর্ষ বিভাজনের পর থেকেই বিতর্কিত এবং বিশেষায়িত কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব। বিগত কয়েক দশকে তা যুদ্ধে রূপ নিয়েছে। কিছুদিন পরপর গোলাগুলিতে নিহতের ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু, সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা হারানোর ঘটনায় দুই দেশের বিবাদ আরও ঘোলাটে হচ্ছে।

পাকিস্তান সোজাসুজি পদক্ষেপ হিসেবে ভারতীয় হাই কমিশনকে বরখাস্ত করেছে, এমনকি যুদ্ধেরও প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর সার্বিক দিক বিচার করে পরিকল্পনামাফিক এগোচ্ছে ভারত সরকার। কিন্তু, প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, কাশ্মীর প্রশ্নে তবে কি সম্মুখ যুদ্ধে জড়াচ্ছে ভারত-পাকিস্তান? রাশিয়ান সংবাদমাধ্যম স্পুটনিক এক প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে এ ধারণা করছে।

১৯৪৭ সালের পর ভারতবর্ষ বিভাগ হলেও অমীমাংসিত থেকে গেছে কাশ্মীর ইস্যু। ভারত, পাকিস্তান এবং চীন সীমান্তে কাশ্মীরের অবস্থান থাকলেও এই জায়গা নিয়েই দ্বন্দ্ব ভারত-পাকিস্তানের। আর, গত ৫ আগস্ট ভারতীয় পার্লামেন্ট বিধানসভায় ‘বিশেষ মর্যাদা’ হারায়ে স্বায়ত্তশাসিত থেকে ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে যায় কাশ্মীর। ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার নির্বাচনী ইশতেহার পূরণে এমন সিদ্ধান্ত নিলেও পাকিস্তান বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখছে। এই কারণে পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনারকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আর দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ নজরদারি এবং সবদিক থেকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইতোমধ্যে ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য স্থগিত এবং রেলযোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে দেশটি। অর্থাৎ, সীমান্তবর্তী কাশ্মীরে এক রকম যুদ্ধের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তাছাড়া, ১৪৪ ধারার নিষেধাজ্ঞা এবং কারফিউ ভেঙে আন্দোলন-বিক্ষোভ করায় বেশ কয়েকজন নিহতসহ গ্রেফতার হয়েছেন ছয় শতাধিক কাশ্মীরি। আর, গত কয়েক দিনে বন্দি জীবন পার করছেন নিরীহরা।
চলমান পরিস্থিতিতে দেখা দিয়েছে পর্যাপ্ত খাদ্যের অভাব। এদিকে, এ বছরও কাশ্মীরের স্থানীয় এক তরুণের আত্মঘাতী হামলায় ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর ৪০ জওয়ান নিহত হন। পাকিস্তানভিত্তিক জইশ-ই-মোহাম্মদ ওই হামলার দায় স্বীকার করে। এ ঘটনার জেরে পাকিস্তানের বালাকোট শহরের বাইরে বোমা হামলা চালায় ভারত। পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালালে এক ভারতীয় পাইলট আটক হন। শান্তির নিদর্শন হিসেবে ইমরান খান তাকে ফেরত দেন।

এএফপি বলছে, ১৯৪৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত কাশ্মীর সীমান্ত নিয়ে দুই দেশের মধ্যে অন্তত ১৫টি মারাত্মক ঘটনা ঘটেছে যা দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ লাগাতে সক্ষম ছিল। সর্বশেষ এক ভারতীয় পাইলটকে ফেরত দিয়ে যুদ্ধ এড়াতে সক্ষম হয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু, এই ধাপে যুদ্ধে বেশি আগ্রহ পাকিস্তানেরই।

ভারতের পক্ষ থেকে লাখ লাখ সেনা মোতায়েন করা হলেও এখনো যুদ্ধের বিষয়ে কিছু বলছেন না বিধানসভা, রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং গবেষকরা। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের আগেই কার্যত কাশ্মীরকে পুরো বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন, মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধের পাশাপাশি বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের গৃহবন্দির পর গ্রেফতার প্রশাসন।

এছাড়া নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয় উপত্যকা-বেষ্টিত কাশ্মীরে। এখন ক্ষমতাসীন দল এবং বিধানসভার সদস্যদের ওপর নির্ভর করছে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সম্ভাবনা। যদিও পাকিস্তান ভারতকে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে পুনরায় ভাবার আহ্বান জানিয়েছেন। ভারতের পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় বিশ্ববাসীর মনেও একই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তবে কি এবার প্রত্যক্ষ যুদ্ধে জড়াচ্ছে ভারত-পাকিস্তান?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here