প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মো: মাহফুজুর রহমান, গৌরীপুর ( ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের ১৪১নং আগপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে পানি উঠেছে। মাছের সঙ্গে ক্লাসরুমে ঢুকছে সাপ-ব্যাঙও। মাঠে শিশুরা সাঁতার কাটছে। প্রবল স্রোতে স্কুল মাঠে এলাকাবাসী ধরছেন মাছ। বিদ্যালয়ের আসা-যাওয়ার রাস্তায় এখন কোমড় পানি।
এছাড়াও সহনাটী ইউনিয়নের নজরুল ইসলাম স্মৃতি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্লাসরুমে পানি উঠেছে, গৌরীপুর রাজেন্দ্র কিশোর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের একপাশের দেয়ার প্রবল পানির স্রোতে ভেঙ্গে গেছে। কাপড় ভিজিয়ে স্কুলে গিয়ে জাতীয় পতাকা উড়ান ও শ্রেণিকক্ষের তালা খুলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জহিরুল ইসলাম। তিনি জানান, বৃহস্পতিবারের একদিনের অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় ক্লাসের ভিতরে পানি ঢুকেছে। ক্লাসের বেঞ্চ-টেবিল পানিতে ভাসছে। বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিকক্ষের শিশুদের উপকরণ নষ্ট হয়ে গেছে।
ধুরুয়া আগপাড়া গ্রামের মো. রাজিব মিয়া জানান, বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার রাস্তার ওপরে এখন কোমড় পানি। সহনাটী ইউনিয়নের বহেড়াতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুইটি পাল জানান, মাঠে পানি আছে। স্কুল কার্যক্রম চলমান। চারপাশের রাস্তার ওপরে পানি থাকায় অভিভাবকরা সন্তানদেরকে বিদ্যালয়ে পাঠাতে চাচ্ছেন না। রামগোপালপুর ইউনিয়নের বৈরাটি আমজত আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ও সড়কে হাঁটু পানি প্রবাহমান। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রোকিয়া ইয়াজদানি জানান, শিক্ষকগণ স্কুলে এসেছেন। তবে শিক্ষার্থীরা আসতে পারছে না।
সবগুলো সড়কের ওপরে পানির স্রোত থাকায় শিশুদের চলাচলও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। পাঁচাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আসা-যাওয়ার রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কান্দুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রভাতি বালা রক্ষিত জানান, বিদ্যালয়ের মাঠে ও রাস্তার ওপরে পানি। এলাকার অধিকাংশ বাড়িঘরে পানি থাকায় শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আসতে পারছে না। অভিভাবকও তাদের ছেলে মেয়েদের স্কুলে পাঠাচ্ছে না। এদিকে বন্যার কারণে রবিবার (৮ অক্টোবর) ৪৫টি বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ ছিলো।
বিদ্যালয়ের গুলো হলো পৌর শহরের পাছেরকান্দা, মাছুয়াকান্দা, পশ্চিমভালুকা, গাঁওগৌরীপুর, ঘোষপাড়া, তালে হোসেন খান, মুকুল নিকেতন, জাগরণী, সতিষা, নতুন বাজার, ইয়ারপুর, মাওহা নয়ানগর, সহরবানু বালিকা, নিজ মাওহা, পল্টিপাড়া, টেঙ্গাপাড়া, ভালুকাপুর, বড়ইবাড়ি, দৌলতাবাদ, কাশিচরণ, হিরনসনখিলা, আগপাড়া, বেরাটি, পাঁচাশী, কান্দুলিয়া, কাউরাট এম.এ জলিল, নন্দুরা, শাহবাজপুর, বায়রাউড়া, বোরহান উদ্দিন, গাভীশিমুল, উখাকান্দা, নোয়াপাড়া, তাত্রারাকান্দা, বলারকান্দা, গোগরা, তেরশিরা, বাহাদুরপুর ফিরোজা,গুজিখাঁ, নওয়াগাঁও।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আঞ্জুমান আরা বেগম জানান, ১০টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৪৫টি বিদ্যালয়ের মাঠ-ঘাট ও শ্রেণিকক্ষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোফাজ্জল হোসেন খান জানান, এ অঞ্চলের প্রায় শতবছরের রেকর্ডভঙ্গ করে বৃষ্টির পানিতে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। যেসকল বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, সেগুলোর তালিকা করা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের যাতায়াতের রাস্তাগুলোর বন্যার পানি নেমে গেলে অধিকগুরুত্ব দিয়ে সেগুলো মেরামত করা হবে।