আবারও সড়ক অবরোধে তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা

0
আবারও সড়ক অবরোধে তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে অনশন কর্মসূচি চলার মধ্যে আবারও সড়ক অবরোধ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা না আসায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কলেজের সামনের সড়ক আটকে দেন তারা। শিক্ষার্থীরা বাঁশ দিয়ে মাহাখালী-গুলশান সড়ক আটকালে দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এতে ওই সড়কে আটকাপড়া গাড়িগুলো পরে অন্য সড়ক ঘুরে চলে যায় ।আন্দোলনকারীদের নেতা নায়েক নূর মোহাম্মদ বলেন, শনিবার বিকাল ৪টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের ঘোষণা না এলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় সড়ক অবরোধ করব বলে ঘোষণা দিয়েছিলাম। ‘এর অংশ হিসেবে এখন আমরা আপাতত ক্যাম্পাসের সামনের রাস্তা বন্ধ করেছি। শিক্ষার্থীরা আসছে, পরে আমরা মহাখালী, গুলশানে রাস্তা এমনকি উত্তর সিটি করপোরেশনের এলাকার বিমানবন্দরের রাস্তাও বন্ধ করতে পারি।ঢাকা উত্তর সিটিতে সড়ক অবরোধের ঘোষণা শুক্রবার রাতেই দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে শনিবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত তারা সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। তবে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি নিয়ে সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলন করার যৌক্তিকতা নেই’। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে চলমান আন্দোলনের বিষয়ে মন্ত্রণালয় তথা সরকার অবহিত রয়েছে। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাতটি কলেজের সমন্বয়ে একটি পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় গঠনে ইউজিসির চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গঠিত একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি কাজ করছে।

এক্ষেত্রে সরকারি তিতুমীর কলেজের বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।‘ইতোমধ্যে এই কমিটি তিতুমীর কলেজসহ সাতটি কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাদের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। এই কলেজগুলোর শিক্ষার সুযোগ সুবিধা ও মানোন্নয়নই বর্তমানে সরকারের প্রধান লক্ষ্য এবং এক্ষেত্রে করণীয় সকল বিকল্পই সরকারের বিবেচনায় থাকবে। এ অবস্থায় তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের ঘোষণা আদায়ে সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলন করার যৌক্তিকতা নেই।

সংশ্লিষ্ট সকলকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয় বা কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়, এমন কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার জন্য আন্দোলনকারীদের প্রতি আহবান জানানো হচ্ছে।বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরের দাবি নিয়ে অনেক দিন ধরেই আন্দোলন করে আসছেন তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীদের ‘তিতুমীর ঐক্য’র সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ, ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রশাসন গঠন করে ২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা, শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হলে অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করা।

এ ছাড়া ২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম আইন এবং সাংবাদিকতা বিষয় সংযোজন, অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বাড়াতে আসন সংখ্যা সীমিত এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিত করার দাবিও রয়েছে অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের। এর আগে গত সোমবার রাতে ‘তিতুমীর ঐক্য’র তরফে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামো গঠনে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়।

দাবি মানা না হলে বৃহস্পতিবার থেকে মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ঘোষণাও দেওয়া হয় তখন। সেইসঙ্গে মঙ্গলবার থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে ‘শাটডাউন তিতুমীর’ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।আন্দোলনকারীরা এর আগে ৭ জানুয়ারি শিক্ষালয়টির প্রধান ফটকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখা ব্যানার টানিয়ে দেন। একই দাবিতে গত ১৮ নভেম্বর মহাখালীর আমতলী, কাঁচাবাজার ও রেলক্রসিংয়ে শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন।

পরদিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ‘ক্লোজডাউন তিতুমীর’ কর্মসূচি দেন তারা। এরপর ৩ ডিসেম্বর তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে ওই কমিটি ‘যথাযথভাবে’ কাজ করছে না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here