ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্যুর গুজব

0
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্যুর গুজব

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন মারা যাওয়ার গুজব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়ানো হচ্ছে। ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ ও পেজ থেকে এ গুজব ছড়ানো হচ্ছে। কিন্তু এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সোমবার দুপুর থেকেই ঢাবিতে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারীরা।

এই সংঘর্ষে শতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে সংঘর্ষে একজন নিহতের ঘটনা নিছক গুজব বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে চলা দিনভর সংঘাতের মধ্যে বিকেলে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল, ফজলুল হক মুসলিম হল ও অমর একুশে হলে বিভিন্ন কক্ষে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, ককটেল নিক্ষেপ, গুলি নিক্ষেপেরে মতো ঘটনা ঘটেছে।

একাধিক তরুণের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে বহিরাগতরা এ অস্ত্রবাজি ও ককটেলবাজি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রদলের লোকজন শহীদুল্লাহ হল ও ফজলুল হক হল এলাকায় গিয়ে গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করেছে। তারা বেশ কয়েকটি কক্ষেও ভাঙচুর চালায়। অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। রাত ৮টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েশ সদস্য শহীদুল্লাহ হল এলাকা ঘেরাও করে।

সেখানে পুলিশের একাধিক সাজোয়া যান ও জলকামান দেখা গেছে। ওই সময় পর্যন্ত হলের সীমানার ভেতর কোটাবিরোধীদের স্লোগান দিতে দেখা যায়। বাইরে স্লোগান দিচ্ছিল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এর আগে বিকেলে ওই এলাকায় মাথায় হেলমেট পরা এক তরুণকে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। তার পরনে ছিল কালো ফুলপ্যান্ট ও অনেকটা সাদা রঙের মধ্যে ছাপা ফুলহাতা শার্ট। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই যুবকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সোমবার দুপুরের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে জড়ো হচ্ছিল শিক্ষার্থীসহ বহিরাগতরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর ও আশপাশের এলাকায় যখন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়, তখনই কার্জন হলের বায়োক্যামেস্ট্রি গেইট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে বহিরাগতরা। এরপর হলগুলোতে ছাত্রলীগের পদধারী নেতাদের কক্ষ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটানো হয়। ওই সময়ে বেশ কয়েকজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেছে। তারা হলের ভেতরে অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি হলগুলোর ছাদেও অবস্থান নেয়।

তখন ছাদ থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু ইট পাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। পাশাপাশি হলগুলোর ভেতরে গুলিরও শব্দ পাওয়া যায়। শহীদুল্লাহ হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে তারা মধুর ক্যান্টিন ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছিলেন। ওই সময়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের নিয়ে শহীদুল্লাহ হলে ঢুকে টার্গেট করে ভাঙচুর চালায়।

এর মধ্যে তার ২৩২ নম্বর কক্ষসহ পদধারী নেতাদের কক্ষগুলো ভাঙচুর করে অস্ত্রধারী হামলাকারীরা। তার দাবি, এই হামলাকারীদের মধ্যে ছাত্রদলের লোকজন ছিল। তারা আগ্নেয়াস্ত্র, ককটেল নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেছে। হলের ছাদে গিয়ে অবস্থান নিয়ে বৃষ্টির মতো ইট ও ককটেল ছুড়েছে। অবশ্য ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গনেশ চন্দ্র সাহস  বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে তাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে এবং তারা আন্দোলনের সফলতা চাচ্ছেন।

কিন্তু অস্ত্রবাজি তাদের কাজ নয়। দিনভর ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেন, ছাত্রদল ক্যাম্পাসে যেতে পারে না, বাসায় থাকতে পারে না। এই অবস্থায় অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে যাওয়ার অভিযোগটি হাস্যকর। এদিকে একুশে হলের এক শিক্ষার্থী জানান, তাদের হলগুলোতে বহিরাগতরা হামলা করেছে, এ তথ্য পেয়ে তারা হলের সামনে যান।

কিন্তু তারা ভেতর থেকে অবস্থান নিয়ে থাকায় শিক্ষার্থীরা ভেতরে ঢুকতে পারছিলেন না। হলে অবস্থান নেওয়া লোকজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে বলে তারা তথ্য পেয়েছেন। সোমবার রাত সোয়া ৮টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, আন্দোলনকারী লোকজন শহীদুল্লাহ হলের ভেতরে অবস্থান করছে।

পুলিশ সদস্যরা হলের সামনে যাওয়ার পর দুপক্ষের মধ্যে যে মুখোমুখি উত্তেজনাকর পরিস্থিতি ছিল তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here