প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মু. আ. মোতালিব, তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ বরগুনার তালতলী উপজেলার কচুপাত্রা খালে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে কচুরিপানায় ভরে গেছে। এতে বিগত ৫০ বছরের দড়িটানা খেয়া চলাচল বন্ধ রয়েছে। একারণে বাদুরগাছা এলাকার তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর স্কুলে যাওয়া-আশা বন্ধ হয়ে গেছে। দুর্ভোগে পড়েছেন ঐ এলাকার প্রায় ১০ গ্রামের মানুষ।
দ্রুত কচুরিপানা অপসারণ করে ব্রিজ নির্মানের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।জানা যায়, উপজেলার শারিকখালী ইউনিয়নের বাদুরগাছা ও বেতমোর এলাকার মধ্যবর্তী কচুপাত্রা খালে বিগত ৫০ বছর যাবৎ ডিঙ্গি নৌকায় দড়ি লাগিয়ে এপার ওপারে টানা দিয়ে খেয়া চলাচল চালু রেখেছে। অসুস্থতা সহ বিভিন্ন প্রয়োজনে উপজেলার শারিকখালী ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষ বরগুনা জেলা, তালতলী উপজেলা ও পাশ্ববর্তী কলাপাড়া উপজেলায় যাতায়াত করত।
কলাপাড়া উপজেলা কাছাকাছি হওয়ায় ঐ এলাকার মানুষ কচুপাত্রা খালের এ দড়িটানা খেয়া পাড় হয়ে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় কাজ করতে যেত পার্শ্ববর্তী কলাপাড়া শহরে। এ ছাড়াও ঐ এলাকায় কোনো স্কুল কলেজ না থাকায় প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী ওপাড়ের স্কুল-কলেজে লেখাপড়া করতে যান। চলতি বছরের মে মাসের ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ঐ খালে কচুরিপানায় ভরে যায়।
ফলে তখন থেকে বন্ধ হয়ে যায় দড়িটানা খেয়া চলাচল। স্থানীয়, ইউনিয়ন পরিষদ বা সরকারী কোন উদ্যোগে অপসারণ করা হচ্ছে না কচুরিপানা।খেয়া পারাপার বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছে এই এলাকার মানুষ। এদিকে খালের ওপাড়েই স্কুল-কলেজ থাকায় তিন শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ রয়েছে।
যাতায়াত বন্ধ হওয়ার কারণে ওই এলাকার দিনমজুরদের দৈনিক কাজকর্ম বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছে অনেক পরিবার। তাই বাধ্য হয়ে নির্মাণের দাবি জানিয়েছে ১০ গ্রামের মানুষ। সরেজমিনে নিয়ে দেখা যায়,খালে কচুরিপানায় ভরে থাকায় গত এক মাস যাবত ঐ খালে খেয়া চলাচল বন্ধ রয়েছে। খেয়া পারাপার বন্ধ থাকায় অর্থ সংকটে পরেছেন ঘাটের দু’পাশের দিনমজুররা। কর্মহীন হয়ে পরেছে শতাধিক মানুষ।
স্কুলে যেতে পারছেনা ছাত্র-ছাত্রীরা। স্থানীয়রা আরও জানান, এ ঘাট দিয়ে পার্শবর্তী কলাপাড়া উপজেলায় যাওয়ার জন্য শারিকখালী ইউনিয়নসহ আশপাশের ১০-১২ গ্রামের মানুষ এই খাল পার হয়ে থাকেন। প্রতিদিন প্রায় তিন শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী, কয়েকশত শ্রমিকসহ হাজার হাজার ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ জীবন জীবিকার জন্য প্রতিদিন খাল পার হয়ে থাকেন।
খেয়া পারাপার বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থী, শ্রমিক, ব্যবসায়ীদের বাজার বা কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে প্রায় ২০-২৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে পার হতে হয়। এখন তারা পরেছেন চরম বিপাকে। ৫ম শ্রেনীর মানসুরা নামের এক স্কুল ছাত্রী বলেন, খেয়া পারাপার বন্ধ থাকায় গত ১ মাস পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারছি না। এখানে একটি ব্রিজ থাকলে ঝুকি নিয়ে আমাদের খেয়া পার হয়ে স্কুলে যেতে হতো না।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন, যাতে এখানে একটা ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। শারিকখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ফারুক খান বলেন, খালে কচুরিপানা থাকার কারণে খয়া নৌকা বন্ধ রয়েছে। খালটি অনেক বড় থাকায় এখানে বাশের সাকো দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এই দড়িটানা খেয়া পার হতে গিয়ে অনেক দূর্ঘটনা ঘটেছে। এমনকি এই খেয়া পারাপারের সময় স্কুল পড়ুয়া এক ছাত্রী মারাও গেছে।
তাই আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করছি যাতে এই খালে একটি ব্রিজ দেওয়া হয়। তাহলে এই এলাকায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী সহ ১০ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ কমবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, আপাতত কচুরিপানা অপসারণ করে খেয়া চলাচলের ব্যবস্থা করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে বলেছি। পরবর্তীতে ব্রিজের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।