প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় নিখোঁজের দুই দিন পর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মুল আসামী গ্রেফতার হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাব-১১।র্যাব জানিয়েছে, উক্ত মামলায় আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-১১, সিপিসি-১ ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তের জের ধরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় র্যাব-১১, সিপিসি-১ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল গত ১৬ মার্চ রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন পাগলা রেলস্টেশন এলাকা থেকে মামলার অন্যতম প্রধান আসামী মোঃ বুলবুল শেখ@ রাকিব (২৪), পিতা- মৃত মোহাম্মদ আলী শেখ, সাং- বারদাড়িয়া, থানা- কচুয়া, জেলা- বাগেরহাট, এ/পি- তাগারপাড়, থানা- ফতুল্লা, জেলা- নারায়ণগঞ্জকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
এর পরবর্তীতে আসামীর দেয়া তথ্য মতে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন পূর্ব শাহী মহল্লা এলাকায় অন্য আসামী মোঃ সানাউল্লাহ (৫২) এর সাইফুল সাইকেল হাউজ দোকান থেকে ভিকটিমের চালিত মিশুক গাড়িটির বিভিন্ন খন্ডিত অংশ বিশেষ (মিশুকের স্টিলের বডি ০১টি, রিংসহ টায়ার ও টিউব ফিটিং চাকা ০৩ টি, ডিফারেন্সিয়াল ০১ টি, কন্ট্রোল বক্স ০১টি, মটর ০১টি, সকেট জাম্পার ০১ সেট, হ্যান্ডেল ০১টি, পাউডার ব্যাটারী ০১টি, কাঠের সীট ০১টি, কাঠের হেলনা সীট ০১টি এবং ক্যানোপি ০১টি) উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামী মোঃ বুলবুল শেখ@ রাকিব (২৪) এবং উক্ত মামলার অপর আসামী মোঃ পারভেজ (২৩) দুইজনই নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন মাসদাইর এলাকায় এ্যাডিশন অব ফ্যাশন, চৌধুরী কমপ্লেক্স মাসদাইর গার্মেন্টস কোম্পানীতে চাকুরি করত। গত ১২ মার্চ ২০২৪ উক্ত কোম্পানীতে চুরির দায়ে তাদেরকে কোন প্রকার বেতন-ভাতা না দিয়ে কোম্পানী হতে বহিস্কার করা হয়।
পরবর্তীতে তারা পরিকল্পনা করে তাদের একই এলাকার পরিচিত মিশুর চালক ভিকটিম মোঃ রাজু খান (১৯) কে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন পাগলা এলাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে ভাড়া ঠিক করে। তারা মিশুকে চড়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন পাগলা এলাকার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে সময় ক্ষেপন করে এবং নির্জন স্থান খোঁজ করতে থাকে। পরবর্তীতে একই তারিখ আনুমানিক রাত ০০.৩০ ঘটিকায় পিলকুনি বড় কবরস্থান সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠের পাশে নিয়ে গিয়ে অন্যতম প্রধান আসামী মোঃ বুলবুল শেখ (২৪) শ্বাসরোধ করে হত্যার উদ্দেশ্যে তার পরিহিত প্যান্টের বেল্ট খুলে অপর আসামী পারভেজসহ ভিকটিমের গলায় পেচিয়ে ভিকটিমকে মাটিতে ফেলে দেয়।
পরবর্তীতে পারভেজ (২৩) ভিকটিমের গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। মৃত্যু নিশ্চিত হলে দুইজনই মিলে ভিকটিমকে পাশের ডোবাতে ফেলে দেয় এবং তারা ভিকটিমের ভাড়াকৃত মিশুক গাড়িটি চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে গাড়ির রং পরিবর্তন করে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন পূর্ব শাহী মহল্লা এলাকায় একটি পুরাতন অটোরিক্সা ক্রয়-বিক্রয়ের দোকানে (সাইফুল সাইকেল হাউজ) আসামী মোঃ সানাউল্লাহ (৫২) এর নিকট ২৮০০০/- (আঠাশ হাজার টাকা) টাকায় বিক্রি করে। বিক্রিত টাকা বুলবুল@রাকিব (২৪) এবং পারভেজ (২৩) নিজেদের ভিতর ভাগাভাগি করে নেয়।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায় যে, আসামী মোঃ সানাউল্লাহ (৫২) চোরাই অটো ক্রয়-বিক্রয়ের চক্রের সাথে সংশ্লিষ্ট এবং সে চোরাই অটো ক্রয় করে রং পরিবর্তন করার পর বিভিন্ন অংশে ভেঙ্গে বিক্রয় করে থাকে। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।