প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ ফতুল্লায় মিশুক চালক ইউসুফ (৪০) কে রড দিয়ে খুচিয়ে হত্যা করে ব্যাটারী চালিত মিশুক ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার পথে তিন ঘাতককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- ফতুল্লা মডেল থানার দেওভোগ পানির ট্যাংকির আজিজের বাড়ীর ভাড়াটিয়া তোজাম্মেল হকের পুত্র মাহবুব (২৪), কাশিপুরের আক্তার হোসেনের পুত্র কাউছার (২২) ও দেওভোগ পানির ট্যাংকির মামুনের বাড়ীর ভাড়াটিয়া আমিন (২৩)। তারা সকলেই ইজিবাইক চালক ও মাদকাসক্ত।
পুলিশ রবিবার (১২ মার্চ) রাত দেড়টার দিকে ঘাতকদের গ্রেপ্তার করে এবং ভোর রাত ৪ টার দিকে লাশ উদ্ধার করে। হত্যাকান্ড ও ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঘটে শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টায় ফতুল্লা মডেল থানার চর কাশিপুর নাজিমুদ্দিনের বাড়ীর সামনের ফাঁকা রাস্তায়। নিহত ইউসুফ লক্ষিপুর জেলার কমলনগর থানার কালকিনি গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে।তিনি ফতুল্লার পশ্চিম দেওভোগ এলাকায় সুমন মহাজনের ইজিবাইক ভাড়ায় চালাতেন এবং তিন মেয়ে নিয়ে পশ্চিম দেওভোগ চুনকা আলী সড়ক খানকা মোড়ে ভাড়ায় বসবাস করতেন।
তিন মাস পূর্বে নিহতের স্ত্রী টিউমারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। নিহতের ছোট মেয়ে ইয়াসমিন(৭) জানায়, তার বাবা বিকেল পাচটার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে গ্যারেজে যায়। ভোর রাতে জানতে পারেন তার বাবা কে হত্যা করা হয়েছে। ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মহসীন জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা সকলেই ইজিবাইক চালক এবং তারা সবাই মাদকাসক্ত। তারা একই গ্যারেজের একই মহাজনের গাড়ী চালাতো। পূর্বপরিকল্পিতনুযায়ী শনিবার মাগরিব নামাজের পরপর গ্রেপ্তারকৃতরা তাদের গাড়ী গ্যারেজ মালিকের নিকট বুজিয়ে দিয়ে আসে।
রাত ১১ টার দিকে তারা পরিকল্পনানুযায়ী নিহতের মিশুক গাড়ী ভাড়া করে চর কাশিপুর যাওয়ার জন্য। চর কাশিপুর নাজিমুদ্দিনের বাড়ীর সামনের ফাঁকা রাস্তার সামনে গিয়ে তারা নিহত মিশুক চালক ইউসুফ কে গাড়ী থেকে নামিয়ে গলার মধ্যখানে রড ডুকিয়ে দেয়। একই জায়গায় একাধিকবার রড ডুকিয়ে দিয়ে আঘাতের মাধ্যমে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ ফেলে রেখে মিশুক গাড়ীটি নিয়ে চলে আসে। পরে তারা কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষধ সংলগ্ন ঘাতক কাউছারের বাড়ীর সামনে আসে।
এবং মিশুক গাড়ীতে থাকা ব্যাটারীগুলো কাউছারের বাড়ীর খাটের নিচে লুকিয়ে রেখে। রাত দেড়টার দিকে মিশুক গাড়ীটি রাস্তা দিয়ে ধাক্কা দিয়ে টেনে হিচড়ে নিতে থাকলে রাতের নিয়মিত ডিউটি করা কালীন সময়ে থানার উপপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন মোল্লার সন্দেহ হয় । তখন তাদের আটক করে পরিচয় এবং গাড়ির সমস্যা জানতে চায়। এতে তারা সন্দেহজনক কথাবার্তা বলায় তাদের মহাজনকে ডাকতে বলেন। পরক্ষনে মিশুক গাড়ীটির মালিক সুমন এসে জানান, আটক ৩ জন তার অন্য গাড়ির চালক তবে এ গাড়ির নয়।
তখন তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানান চালক ইউসুফ কে হত্যা করে চর কাশিপুর সড়কের নাজিমুদ্দিনের বাড়ীর সামনের ফাঁকা রাস্তায় লাশ ফেলে রেখে এসেছেন। রাত চার টার দিকে গ্রেপ্তারকৃতদের দেখানো স্থান থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের গলায় রড দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। শরীরের অন্য কোথাও আঘাতের চিহ্ন নেই। এ ঘটনায় হত্যা মামলা পক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।