না’গঞ্জ ফতুল্লার পঞ্চবটি বাসস্ট্যান্ডে ইজিবাইকে শিঁকল বেধে উৎকোচ আদায়।

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ সদরের ফতুল্লার পঞ্চবটি বাসস্ট্যান্ড। এই স্ট্যান্ডের পাশে মুজাফফর পেট্রোল পাম্পের পাশে একটি রেকার সকাল থেকে রাত অবধি অবস্থান করে। রেকারটির দায়িত্বে রয়েছে ট্রাফিক পুলিশের এএসআই তবিবুর। দিনের বেলা পুলিশ বক্সের সামনে সারি সারি ইজি বাইককে শিঁকল পড়ানো হয়। উদ্দেশ্য ইজিবাইক মালিক-চালকদের কাছ থেকে উৎকোচ আদায়। পঞ্চবটি বাসস্ট্যান্ডে ট্রাফিকের তবিবুরই যানবাহন চালকের কাছে আতংকের নাম। তার হাতে সবচেয়ে বেশি নিগৃহিত হয় ট্রাক ও ইজি বাইক চালকরা। প্রতিদিন এই স্ট্যান্ড ও এর আশপাশের সড়কগুলো থেকে অযথা ইজিবাইক আটক করেন তিনি।

উদ্দেশ্য টাকা হাতিয়ে নেয়া। প্রতিদিন গড়ে ১৫/২০টি ইজি বাইক আটক করে প্রতিটি থেকে ২ হাজার ১’শ টাকা আদায় করেন তিনি। সম্প্রতি রফিক নামের একজন ইজি বাইক চালক তবিবুরের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। তবে ইজি বাইক চালকের অভিযোগের পরেও তবিবুরের বিরুদ্ধে এখনো কোন ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ প্রশাসন। বহাল তবিয়তেই আছেন তিনি। এএসআই তবিবুর। পঞ্চবটিস্থ ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বে থাকা রেকারের দায়িত্বে আছেন তিনি। প্রতিদিন তার টার্কেট ১০টির উপরে ইজি বাইক আটক। আর এরপর সেগুলো থেকে উৎকোচ আদায়। উৎকোচের দাবিতে ইজিবাইকে লাগানো মোটা শিকল।

টাকা দিলে শিকল খোলে, আর না দিলে শিকলে আটকে থাকে ইজি বাইকসহ অন্যান্য যানবাহন। যানবাহন আটকের পর বাইক চালকদের কাছে চাওয়া হয় মোটা অংকের টাকা। তার চাহিদা মতো টাকা না পেলে তিনি সেগুলোকে পুলিশ লাইন্স মাঠে পাঠিয়ে দেয়। আর চাহিদা পূরণ হলে পঞ্চবটিস্থ পুলিশ বক্স থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। এমন অভিযোগ যানবাহন চালকদের। পঞ্চবটিতে যানবাহন চালকদের কাছে তবিবুর এক মহাতংকের নাম। পঞ্চবটিতে চলাচলকারী যানবাহন চালকরা বলেন, এএসআই তবিবুরের কারণে এই রুটে শুধু ইজি বাইকই নয় অন্যান্য চালকরাও আতংকে থাকেন। বলা নেই কওয়া নেই হঠাৎ করে তার মন মতো গাড়িগুলোকে আটক করেন তিনি।

এরপর পুলিশ বক্সের সামনে গাড়িগুলো রেখে শুরু করেন দরকষাকষি করা হয়। রেকার খরচ বাবদ চাওয়া হয় টাকা। কোন কারণ ছাড়াই প্রতিদিন ১৫/২০টি ইজি বাইক আটক করে তবিবুর। এছাড়া অন্য বাহনতো আছেই। তার এমন কাজে ট্রাফিক পুলিশের এসআই বা টিএসআই কোন শব্দ করেন না। কারণ তারাও অবৈধ ঠাকার ভাগ পায়। ইজি বাইক চালকরা নিতান্তই হতদরিদ্র হওয়ায় তারা ভয়ে তবিবুরকে টাকা দিতে বাধ্য হয়। টাকা না দিলে তবিবুর ও তার লোকজন ইজি বাইক চালকদের মারপিট করে বলেও অভিযোগ।

পঞ্চবটি বাসস্ট্যান্ডের একজন ট্রাক চালক বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ট্রাক থেকে তবিবুর বিভিন্ন অজুহাতে টাকা হাতিয়ে নেয়। এমনও হয়েছে, টাকা না পেয়ে একজন ট্রাক চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ বেশ কিছু কাগজপত্র আটকে রেখেছিল তবিবুর। পরে ৩/৪ দিন পর তবিবুর সেই চালকের কাছ থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা নিয়ে কাগজপত্রগুলো ফিরিয়ে দেয়। শুধুমাত্র রেকারের ভয় দেখিয়ে পঞ্চবটি স্ট্যান্ড থেকে তবিবুর দৈনিক কমপক্ষে ২৫/৩০ হাজার টাকা আদায় করে থাকে। রেকার ফি’র কথা বলে তবিবুর যে টাকা নেয় সেই টাকার রসিদও দেননা অনেক সময়। কিন্তু টাকা ঠিকই হাতিয়ে নিচ্ছে সে।

ট্রাক থেকে চাঁদাবাজী করার কারনেই পঞ্চবটিতে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যানজট লেগে থাকে বলেও দাবী করেন এই চালক গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে রফিক নামের একজন ইজি বাইক চালকের ইজি বাইক অযথাই আটক করেছিল তবিবুর। এরপর তার কাছে রেকার খরচ বাবদ চাওয়া হয় ২ হাজার ১’শ টাকা। কিন্তু হতদরিদ্র রফিক টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এরসময় রফিক ইজি বাইক মালিককে খবর দেয়। মালিক মনির ঘটনাস্থলে আসার পর তবিবুরের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এসময় সে রফিক ও মনিরকে মারপিট করে। এ ঘটনায় তবিবুরের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় বাইক চালক রফিক একটি লিখিত অভিযোগ করলে পরে তার ইজি বাইকটি ছেড়ে দেয় তবিবুর।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here