ফতুল্লায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মামুন হত্যা : বেরিয়ে আসছে থলের বিড়াল

0
ফতুল্লায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মামুন হত্যা : বেরিয়ে আসছে থলের বিড়াল

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মামুন হোসাইনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় একে একে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এই মামলার সন্দেহভাজন হিসেবে মো. জুয়েল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে শারীরিক নির্যাতন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলাটি ভিন্ন খাতে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়া মামলার বাদীকে ভুল তথ্য দিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে রিয়াদ চৌধুরী গংদের বিরুদ্ধে।  এ ঘটনায় সম্প্রতি জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে মামলার আসামিরা। তারা বর্তমানে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন।অভিযোগকারী হলেন- শাওন হাসান, রাকিব প্রধান, নয়ন, রতন হোসেন, শাহ আলম, জয়নাল ও রাসেল। অভিযুক্ত দুজন হলেন- বিএনপির বহিস্কৃত নেতা রিয়াদ মো. চৌধুরী ও নিয়াজ মো. মাছুম ওরফে ফর্মা মাসুম।

লিখিত অভিযোগে তারা জানান, ফতুল্লা থানায় মামুন হত্যার ঘটনায় মামলার বাদীকে ভুল তথ্য দিয়ে আমাদেরকে এই মামলায় আসামি করা হয়েছে। রিয়াদ মো. চৌধুরী ও নিয়াজ মো. মাছুম ওরফে ফর্মা মাসুমের ইঙ্গিতে আমাদের আসামি করা হয়ছে। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত চলছে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার কারণে হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিনে আছি। অত্র হত্যা মামলার ঘটনার ভিডিও ফুটেজে আমাদের কারো ছবি নাই। বিষয়টি তদন্ত করে আমাদের অব্যাহতি প্রার্থনা করছি।

মামলাটির খুনিকে শনাক্ত করার জন্য রিয়াজ চৌধুরী ও সোর্স নিয়াজ মাসুম গ্রেফতার করলে মূল রহস্য উদঘাটন হবে। এই মিথ্যা মামলা থেকে আমাদেরকে অব্যাহতি প্রদান ও ন্যায় বিচারে আপনার সহযোগিতা কামনা করছি। এছাড়া একই ঘটনায় এই মামলার সন্দেহভাজন আসামি মো. জুয়েল বেশ চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। ইলেকট্রিক শক দিয়ে মিথ্য স্বীকারোক্তি দেওয়ার অভিযোগ করেন তিনি। লিখিত অভিযোগে মো. জুয়েল বলেন, আমি একজন পেশায় ট্রাক চালক।

গত ১৬ মার্চ আমি আমার বোনের বাড়ি শরীয়তপুর বেড়াতে গেলে ফতুল্লা থানার এসআই (উপ-পরিদর্শক) শামীম হোসেন মামুন হত্যাকাণ্ডের (মামলা নং- ৯(২)২৫) ঘটনায় আমাকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে। পথিমধ্যে গাড়িতে আমাকে লাঠি দিয়ে ব্যাপক মারধর করে এবং মামুন হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে এ বিষয়ে ‘আমি কিছু জানিনা’ বললে সে আমার ওপর শারিরীক নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

পরবর্তীতে আমাকে থানায় নিয়ে হাত-পা বেঁধে ফের মারধর করে এবং আমার চেহারায় মরিচের গুরো দিয়ে দেয়। এমনকি তিনি আমার পুরুষাঙ্গে বিদ্যুতিক শক দিয়ে আমাকে আদালতে বলতে বলে, ‘আক্তার ও সুমন আমাকে দিয়ে এ হত্যার কাজ করিয়েছে।’ কিন্তু আমি এ কাজ করতে রাজি হইনি এবং আক্তার-সুমনকে চিনিনা। তাছাড়া এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সাথেও জড়িত নই।

এদিকে ফতুল্লা থানা পুলিশের হেফাজতে থাকার পরও রিয়াদ চৌধুরীর নির্দেশে বিশেষ পেশার পরিচয় দানকারী নিয়াজ মাসুম নামে এক ব্যক্তি আমার সামনে এস আই শামীমকে টাকা দিয়ে আমাকে মারধর করায়। এ সময় মারধর করে আমাকে এস আই শামীম বলে, ‘আদালতে আক্তার-সুমনের নাম না বললে আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করবে বলে হুমকি দেয়।’ পরে আমাকে আদালতে পাঠালে শারীরিক নির্যাতনের বক্তব্য মুখে শুনে রিমান্ড বাতিল করে আদালত।

এর পর আমি জামিনে বের হয়ে এসে বিভিন্ন মাধ্যমে শুনতে পাই ফতুল্লার রিয়াদ মো. চৌধুরী ও বিশেষ পেশার পরিচয়দানকারী পুলিশের সোর্স নিয়াজ মাসুম তাদের কন্ট্রাক্ট কিলার দিয়ে পরিকল্পিতভাবে মামুনকে হত্যা করে। তাদের দুজনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হবে।

এছাড়া এস আই শামীম বাদীকে ভুল বুঝিয়ে বিভিন্ন নিরিহ মানুষকে আসামি করে মামলা বাণিজ্য করে আসছে। জানা গেছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে ফতুল্লায় রেললাইনের ওপর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মামুন হোসাইনকে (৪০) গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

এ ঘটনার একদিন পর নিহতের স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জনকে আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় মো. জুয়েলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here