প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মো: রফিকুল ইসলাম, ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি: ফরিদপুর জেলার বোয়ারমারীতে মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন ‘সুমন রাফি’ নামের এক উচ্চ শিক্ষিত যুবক। তিনি ফরিদপুর জেলার তিন উপজেলা বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা ও মধুখালীর বিভিন্ন অঞ্চলের অসহায়, হতদরিদ্র আর রক্তগ্রহীতাদের নিকট রক্তপ্রাপ্তির তিনি যেন এক নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল।
অনেক সেবামূলক কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকলেও রোগীদের কাছে রক্ত পৌঁছে দেওয়া অপরিহার্য। পুরো নাম হেদায়েতুর রাফি ওরফে সুমন রাফি। বাবা শওকত হোসেন মিয়া ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সর্ববৃহৎ ও ঐতিহ্যবাহী মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জর্জ একাডেমির নামকরা গণিত শিক্ষক ছিলেন। ভাই হায়াতুর রাফি নয়ন ঢাকায় জুয়েলারী ব্যবসার সাথে জড়িত। নিজেও ওই ব্যবসার অংশীদার। বোন শারমিন সুলতানা রিতা আমেরিকার সিটিজেনশিপপ্রাপ্ত।
ছোট ভাই-বোনের বিয়ে হলেও সমাজসেবার কাজে নিয়োজিত থাকায় সুমন রাফির এখনো বিয়ে করা হয়ে ওঠেনি। হেদায়েতুর রাফি ওরফে সুমন রাফি অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) ডিগ্রি অর্জন করার পর মার্কেটিংয়ে এমবিএ সম্পন্ন করেন। মজার ব্যাপার হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করার পরেও চাকরির জন্য তিনি কোথাও কোন আবেদন কিংবা চেষ্টা করেননি। মানবতার ফেরিওয়ালা খ্যাত সুমন রাফি ২০০২ সাল থেকে নিজ উপজেলা বোয়ালমারী এবং পার্শ্ববর্তী আলফাডাঙ্গা ও মধুখালি উপজেলার অসহায়, দরিদ্রদের জন্য মানবতার হাত প্রসারিত করেন। রোগীদের জন্য রক্তের ব্যবস্থা করা, দুস্থ রোগীদের ঔষধপত্রসহ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, এমনকি নগদ অর্থসাহায্য পর্যন্ত করে থাকেন। গত ২১ বছরে রোগীদের জন্য ৫ থেকে ৬ হাজার ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
এ যাবত তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,সরকারি খাসজমি এবং রাস্তার দুপাশে প্রায় ১৫-২০ হাজার ফলদ ও বনজ বৃক্ষেরচারা রোপণ করেছেন। মানবতার সেবায় নিয়োজিত দীর্ঘ এ সময়ে তিনি প্রতিবন্ধীদের হুইল চেয়ার, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের অর্থ সাহায্য, অসহায় অবহেলিত জনগোষ্ঠীর মৌলিক চাহিদার ব্যবস্থা, পাখিদের নীড়ের ব্যবস্থা, শীতবস্ত্র বিতরণ, মানসিক প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করা ও খোঁজখবর নেয়ার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন।
এছাড়া সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অন্যের জমি দখলের বিরুদ্ধেও সোচ্চার ছিলেন। মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, নারী নির্যাতন বন্ধে করণীয় সম্পর্কে সভা সেমিনারেরও আয়োজন করেন। শনিবার রাতে স্থানীয় একটি দৈনিকের কার্যালয়ে হেদায়েতুর রাফি ওরফে সুমন রাফি বলেন, এ যাবত আমি ত্রিশ হাজারেরও অধিক লোককে অর্থ সাহায্য করেছি। নিজের জুয়েলারি এবং ঠিকাদারি ব্যবসা থেকে উপার্জিত টাকা দিয়ে আমি এসব সাহায্য করি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইসলামিক আদর্শ, মানবতার প্রতি দায়বদ্ধতা আর ভালো কাজের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়ে এ সেবামূলক কার্যক্রমে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী লিটু সিকদার বলেন, মানবিক কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে সুমন রাফির এ সমাজসেবামূলক কাজ নি:সন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। তার এ কাজ অনুপ্রেরণা জোগাবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। নতুন বছর ২০২৪ সালের প্রথম দিনই বোয়ালমারীতে মাদরাসার শতাধিক এতিম, অসহায় শিক্ষার্থীসহ মানুষের মুখে খাবার তুলে দিযে এবং তাদের সাথে দুপুরে খাবার খেতে পারায় আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করেন। সুমন রাফি বলেন, আমি যেনো আগামী দিনগুলোতে অসহায় মানুষের পাশে থেকে তাদের সেবা করতে পারি, সবার কাছে সেই দোয়া কামনা করছি।