নারীদের উদ্যোক্তা হিসাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে উদ্যমী ভূমিকা পালন করছে বিজয়ীর ফাউন্ডার : তানিয়া ইশতিয়াক খান

0
নারীদের উদ্যোক্তা হিসাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে উদ্যমী ভূমিকা পালন করছে বিজয়ীর ফাউন্ডার : তানিয়া ইশতিয়াক খান

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ  নিজস্ব প্রতিবেদক: নারীদের উদ্যোক্তা হিসাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে উদ্যমী ভূমিকা পালন করছে বিজয়ীর ফাউন্ডার তানিয়া ইশতিয়াক খান সাইদ হোসেন অপু চৌধুরী-চাঁদপুর নারীরা দেশের সম্পদ, এটি সর্বজনস্বীকৃত, কিন্তু বেশির ভাগ শিক্ষিত নারীরা যখন চাকরি নামে সোনার হরিণের পেছনে ছুটতে গিয়ে একটা সময় নিজেকে বেকার তালিকায় নাম লেখায়, তখন তারা সম্পদে রূপান্তর না হয়ে দেশের ও সংসারে বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।

এই সঙ্কটময় সময় অকুতোভয় এক নারী চাকরির পেছনে না ছুটে চাকরি দেয়ার পণ করে বসেন। উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করে যাচ্ছে নারী উদ্যোক্তাদের সর্ববৃহৎ সংগঠন বিজয়ী” নারী উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা তানিয়া ইশতিয়াক খান। ২০২০ সালে যাত্রা শুরু করা এ সংগঠনের বর্তমান সদস্য সংখ্যা ১১ হাজারে ছাড়িয়েছে। এটি পিছিয়ে পড়া নারীদের উদ্যোক্তা হিসাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে উদ্যোগী ও উদ্যমী ভূমিকা পালন করছে।

নারী উদ্যোক্তা সৃস্টি ও উদ্যোক্তাদের সার্বিক সহায়তা, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী, নিজ পরিচয়ে পরিচিত হওয়া ও নারী ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে চাঁদপুর পুরানবাজারে অবস্থিত খান’স ধাবায় ২০২০ সালের ২৬ শে ফেব্রুয়ারী বিজয়ীর স্বপ্নদ্রষ্টা সাংবাদিক আশিক খানের সার্বিক সহযোগিতায় চাঁদপুরের নারীদেরকে নিয়ে একটি নারী উদ্যোক্তা সংগঠন বিজয়ী প্রতিষ্ঠা হয়। দীর্ঘ দুই বছর ফ্রি প্রশিক্ষনসহ নানা সামাজিক কার্যক্রম করে ২০২২ ইং সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ মহিলা অধিদফতর থেকে “বিজয়ী” নারী উন্নয়ন সংস্থা নামে(রেজিষ্ট্রেশন নং- জেমবিককা/চাঁদ/ ১৫৩)) নিবন্ধন হয় এবং ২০২৩ সালে চাঁদপুর জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর উপ-পরিচালকের কার্যালয় থেকে যুউঅ/চাঁদ/২০২৩-০৩ নিবন্ধন সনদ গ্রহণ করে।

আমরা নহে দেবী, নহে সামান্য নারী আমরা নারী, আমরাই পারি, আমরাই বিজয়ী “বিজয়ী” (নারী উন্নয়ন সংস্থা) এই স্লোগান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে ধারন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে “বিজয়ী তৈরিতে বিজয়ী” নারীদের বিনামূল্যে হাতে কলমে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে বিভিন্ন হাতের কাজের প্রশিক্ষন দিয়ে তাদের তৈরি পণ্য প্রদর্শন ও বিপণনের সুযোগ করে দেয়ার মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল ও আর্থিক স্বাবলম্বীর পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন সংগঠনটি।

প্রতিষ্ঠার পর বিজয়ী থেকে প্রাপ্ত উল্লেখ যোগ্য প্রশিক্ষনগুলো হলো, উদ্যোক্তা হওয়ার উপায় ও ব্যবসা পরিচালনা কৌশল, বেসিক স্কিন কেয়ার এবং হেলদি লাইফ স্টাইল, অনলাইন নেটওয়ার্ক মাকেটিং, বেসিক কেক বেকিং, হ্যান্ড মেইড হেড পিস, হ্যান্ড পেইন্ট কাঠের জুয়েলারী, হ্যান্ড মেইড জুয়েলারী, বেসিক বাটিক তৈরি,বেসিক ব্লক তৈরি, বেসিক ব্রাইডাল মেক ওভার ও স্কিন কেয়ার, হ্যান্ড মেইড মেটাল জুয়েলারী, পিৎজা তৈরি, বেসিক কেক বেকিং, ফাস্টফুড, বিডীদ ক্রাফ্ট, ফ্লোরাল জুয়েলারী, বিডীদ হ্যান্ডি ক্রাফ্ট, হ্যান্ড মেইড হিজাব ব্রোজ, পেশাজীবি নারীদের  সুস্বাস্থ্য ও পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা, হ্যান্ড মেইড জুয়েলারি, বেসিক ব্লক, বেসিক বাটিক, বেসিক পিৎজা, ফ্লোরাল জুয়েলারী, হ্যান্ড মেইড এন্ড পেইন্ট কাঠের গহনা, বেসিক কেক বেকিং, বিডিট ক্রাফট, এ্যালিগেন্ট পার্টি মেকওভার, কেক বেকিং, বেসিক ব্লক প্রশিক্ষন, বেসিক হ্যান্ড মেইড জুয়েলারি, নতুন উদ্যোক্তা তৈরি ও অনলাইনে ব্যবসা সম্প্রসারনের কৌশল, পোশাক তৈরি প্রশিক্ষন, শিল্প উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষন, আলুর বহুমুখী ব্যবহার কুকিং, বেসিক হেড পিস তৈরি, বেসিক এন্টিক জুয়েলারী তৈরি, বেসিক ব্লক প্রশিক্ষন, বেসিক ব্লক তৈরি, বেসিক জুয়েলারী ও চুড়ি তৈরি।

সংগঠনটি ভাল কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ হিসেবে সফল নারী উদ্যোক্তা সম্মাননা, রীন নাম করা নারী পদক, নতুন কুড়ি সম্মাননা পদক, শ্রেষ্ঠ নারী সংগঠক সম্মাননা পদক, শ্রেষ্ঠ নারী সংগঠন পদক, শ্রেষ্ঠ নারী সংগঠন সম্মাননা পদক প্রদান করেছে। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা তানিয়া ইশতিয়াক খান বলেন, নারী-পুরুষে ভেদাভেদ দূর, দেশকে এগিয়ে নেয়া এবং রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নে নারীর ক্ষমতায়ন জরুরি। নারীকে উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করতে দেশে নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং উদ্যোক্তা ব্যবসায়ীদের সহায়তার বিকল্প নেই। তারই ধারাবাহিকতায় বিজয়ী চাঁদপুরের নারীদের নিয়ে কাজ করা প্রথম ফ্রি প্রশিক্ষন বেইজ নারী সংগঠন।

চাঁদপুরসহ সারাদেশে নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি, সুষ্ঠুভাবে তাদের ব্যবসা পরিচালনা, সম্প্রসারণে সার্বিক সহায়তা প্রদান, দেশের অর্থনীতিতে নারীদের অবদান রাখাসহ নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করছে। করোনার সময় থেকে বিজয়ী এর উদ্যোগে প্রথম অনলাইন বেইজ ট্রেনিং শুরু হয় এবং করোনার প্রকোপ কমে আসায় জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হওয়ায় এখন বিজয়ী  অফলাইনে হাতে কলমে কাজ শিখানো আরম্ভ করে। এই ট্রেনিং গুলো সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করে আজ অনেক নারীই নতুন উদ্যোক্তা হয়েছেন। নারী উদ্যোক্তাদের প্রধান সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ করে যাচ্ছে বিজয়ী নারী উদ্যোক্তাদের অবশ্যই ব্যবসা শুরু থেকে  সফলভাবে পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষণ দিতে হবে। প্রশিক্ষনের কোন বিকল্প নেই।

২০২০ সাল থেকে নারীদের স্বাবলম্বী করতে বিজয়ী প্রতি নিয়তই নানা রকম ফ্রি প্রশিক্ষন প্রদান করে যাচ্ছে। অর্থের অভাব দূর করনঃ ব্যবসা পরিচালনা করতে অর্থের অভাব দূর করার লক্ষ্য বিজয়ী এর সহযোগিতায় নারীদের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে স্বল্প ইন্টারেস্ট লোনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। বিজয়ী থেকে প্রশিক্ষন প্রাপ্ত উদ্যোক্তাদের “বিজয়ী অ্যাওয়ার্ড” এর মাধ্যমে সনদপত্র ও সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। নতুন উদ্যোক্তাদের সাবলম্বী করতে বিজয়ী এর প্রেসিডেন্ট খালেদা ইয়াসমিন রুবির নিজ খরচে সেলাই মেশিন প্রদান করেন।

এছাড়া শুধু অনলাইন নয় অফলাইনে পন্য বিক্রয়ের জন্য মেলার আয়োজন করে সেখানে উদ্যোক্তাদের ফ্রি স্টল প্রদান করে অফলাইনে পন্য ডিসপ্লে ও সেলস এর ব্যবস্থা করে দিচ্ছে বিজয়ী। উল্লেখ্য, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে এবং অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীর মাধ্যমে নারীর সামগ্রীক ক্ষমতায়ন প্রক্রিয়া ত্বরাম্বিত করে লিঙ্গ সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের জন্য বাংলাদেশের সমাজ বাতাবরণের উপযোগী একটি অনন্য উদ্যোগ বিজয়ীর।

চাঁদপুর জেলার প্রতিটি উপজেলায় পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সম্প্রসারিত করে সমগ্র দেশব্যাপী একটি নারীবান্ধব আলাদা বিপণন নেটওয়ার্ক গড়ে তুলবে। উন্নত বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে একজন নারী শুধু গৃহিণী নয়, বরং নিজের সাহসী চেষ্টায় একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে অন্যের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সেই লক্ষ্যে কাজ করছে বিজয়ী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here