বরগুনা তালতলীতে ২১ গ্রামের মানুষের ভোগান্তি বাঁশের সাঁকো

0
বরগুনা তালতলীতে ২১ গ্রামের মানুষের ভোগান্তি বাঁশের সাঁকো

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মুঃ আঃ মোতালিব, তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি॥বরগুনার তালতলী উপজেলার পচাঁকোড়ালিয়া ইউনিয়নের কলারং ও
চরকগাছিয়া গ্রামের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের ওপর একমাত্র সাঁকোই ২১ গ্রামের মানুষের *সা। সাঁকোটি দিয়ে হেঁটে কোনো রকম পারাপার সম্ভব হলেও যানবাহন চলাচল নেই। এই ২১ গ্রামের মানুষের ভোগান্তির কারন বাঁশের সাঁকোটি।

জানা যায়, বরগুনা জেলার আমতলী ও তালতলী উপজেলার পচাঁকোড়ালিয়া, আরপঙ্গাশিয়া, চান্দখালী, কলারং, ঘোপখালীসহ ওই এলাকার একুশটি গ্রামের মানুষের উপজেলা সদরসহ জেলার অন্যান্য স্থানের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম কলারং থেকে চরকগাছিয়া বাঁশের তৈরি সাঁকোটি। ওই খালে খেয়া নৌকা দিয়ে বহু বছর পারাপার হলেও প্রায় ২৪-২৫ বছর আগে তাহা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর স্থানীয়রা উদ্যোগ নিয়ে ওই খালের ওপর দুই শত মিটার বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করেন। এরপর থেকেই স্থানীয় জনতা প্রতিবছরই এই সাঁকো মেরামত করে পারাপারের ব্যবস্থা করেন। খালের দুই পাড়েই রয়েছে কয়েকটি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

এসব প্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে হয়। এই এলাকার উৎপাদিত খাদ্য শস্য, কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন কাঁচামাল বাজারজাত করণ ও রোগীর জরুরি চিকিৎসার জন্য নড়বড়ে সাঁকোর ওপর দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। এতে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এসব এলাকার বাসিন্দাদের। একটি ব্রীজের অভাবে শিক্ষা, চিকিৎসা ও ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে এ অঞ্চলের ২১ গ্রামের মানুষ। এতে মারাত্মক ভোগান্তি পোহাতে হয় ওই এলাকার শিশু, নারী, বৃদ্ধ, রোগী ও গর্ভবতী নারীদের।স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই খালের ওপর সেতু নির্মিত হলে পাল্টে যাবে দুই পাড়ের হাজার মানুষের জীবনযাত্রা।

তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচন শেষ হলে তা আর বাস্তবায়ন না করায় এলাকাবাসী বাধ্য হয়ে নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে এ বাঁশের সাঁকো স্থাপন করেন।সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার পচাঁকোড়ালিয়া ইউনিয়নের কলারং থেকে চরকগাছিয়া গ্রামে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এ সাঁকো। গ্রামের শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসায় যাতায়াত করছে।

এ সাঁকো পার হয়ে প্রতিদিন পূর্ব চরকগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পাহলান বাড়ি কওমি মাদ্রাসা ও ড. মো. শহিদুল ইসলাম কলেজের ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীকে যাতায়াত করতে হয়।স্থানীয় শহিদুল ইসলাম বলেন, একটি সেতুর অভাবে আমাদের জমি থেকে উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজারজাত করতে খুবই কষ্ট হয়। ফলে বাধ্য হয়ে বিকল্প রাস্তা দিয়ে কৃষি পণ্য নিতে দ্বিগুণ খরচ।

এতে আমরা উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হই। তিনি আরও বলেন, এখানে সেতুর জন্য জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা উদ্যোগ নেননি তাই সেতু নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আলিফ রায়হান জানান, বাঁশের সাঁকো পার হয়ে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যেতে ভয় করে। তারপরও যেতে হয়।

প্রধানমন্ত্রী আমাদের পড়ালেখার কথা চিন্তা করে এখানে যেন একটি সেতু নির্মান করে দেন।পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, এখানে সেতু নির্মাণে আমাদের চেষ্টার কোনো কমতি নেই। এত গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি তারা গুরুত্ব দিয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলঅধিদপ্তরের (এলজিইডি)মাধ্যমে সেতু নির্মাণের সুপারিশ করা হবে।

তালতলী উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইমতিয়াজ হোসাইন রাসেল বলেন, একশ মিটারের চেয়ে বড় আকারের সেতু নির্মাণের জন্যআলাদা প্রকল্প প্রয়োজন। এই খালের ওপর সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব তৈরি করে সফট কপি ঢাকায় পাঠানো হবে। সেখান থেকে প্রক্রিয়া শেষে অনুমোদন হলে কার্যক্রম শুরু করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here