প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে কাঁচামাটিয়া নদী থেকে গত মঙ্গলবার (২২আগস্ট) ১০ মাস বয়সী লাইসা আক্তার ছোঁয়া নামে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় অপমৃত্যুর মামলা হয়। কিন্তু গতকাল রোববার নিজের সন্তানকে হত্যার কথা স্বামীসহ পরিবারের সদস্যদের জানায় নিহত শিশুর মা পপি আক্তার (৩০)। পরে ওই নারীকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন তাঁর স্বামী।
সোমবার (২৮ আগস্ট) ওই নারীকে আদালতে নেওয়া হলে তিনি সন্তানকে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁকে ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।পপি আক্তার উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের হীরাধর এলাকার জিয়াউল হকের স্ত্রী। গত মঙ্গলবার দুপুরে কাঁচামাটিয়া নদী থেকে ওই দম্পতির শিশু সন্তান ছোঁয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই দিনই শিশুটিকে দাফন করা হয়।নিহত শিশুর পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের হীরাধর এলাকার দশ মাস বয়সী শিশু লাইসা আক্তার ছোঁয়াকে ঘুম পাড়িয়ে মা পপি আক্তার উঠান ঝাড়ু দিচ্ছিল।
একটু পর বাবা জিয়াউল হক এসে মেয়েকে খাঁটের উপর না পেয়ে শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ঘরের পেছনে ২৫-৩০ ফুট দূরে কাঁচামাটিয়া নদীতে পার ঘেঁষে ঝোপের আড়ালে ভাসমান অবস্থায় মিলে শিশুটির মরদেহ পাওয়া যায়। পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।ঐ দিন নিহত শিশুর দাদা আবু সিদ্দিক বলেন, আমার নাতনী সবেমাত্র বসতে শুরু করেছে। ঠিক মতো হামাগুড়িও দিতে পারে না। এ অবস্থায় নদীতে পড়ে যাওয়া কোনো ভাবেই সম্ভব না।
তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। একই দাবি করে স্থানীয় বাসিন্দারা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের কথা জানান।নিহত শিশু ছোঁয়ার বাবাত মো. জিয়াউল হক বলেন, আমার মেয়েটি মারা যাওয়ার পর থেকে আমার স্ত্রীর অস্বাভাবিক আচরণে সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে আমার স্ত্রী স্বীকার করে আমার মেয়েকে সে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দিয়েছিল।
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বলেন লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে।গতকাল রোববার মামলা দায়েরের পর আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বিকেলে ওই নারীকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে মেয়েকে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর আদালতের নির্দেশে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।