গৌরীপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা সামছ উদ্দিনের একটি বীর নিবাস পাওয়ার আকুতি

0
গৌরীপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা সামছ উদ্দিনের একটি বীর নিবাস পাওয়ার আকুতি

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মোঃ মাহফুজুর রহমান,গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)প্রতিনিধিঃ সেদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরাসরি নির্দেশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে চারুয়াপাড়া ক্যাম্প আমরা দখল করেছিলাম। ঠিক এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সামছ উদ্দিন ।

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মইলাকান্দা ইউনিয়নের নওপাই গ্রামের সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সামছ উদ্দিন। জন্ম ১৬ই জানুয়ারি ১৯৪৯ সালে। পিতা: মৃত আব্বাস আলী , মাতা: মৃত জজের নেছা। শৈশব থেকেই ছিল বুকের মধ্যে অদম্য সাহস এবং দেশপ্রেম। এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেন ১৯৬৫ সালে নেত্রকোনা আঞ্জুমান স্কুল থেকে এবং ১৯৬৭ সালে গৌরীপুর কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন ।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ২০ বছর। সেদিন দেশকে স্বাধীন করার জন্য যুদ্ধের ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেলেন মুক্তিযোদ্ধা ট্রেনিংয়ে । ইন্ডিয়ার তুরা থেকে তিনি ট্রেনিং করেছেন । আর তিনি যুদ্ধ করেছেন ইন্ডিয়ার বাগমারা ১১ নাম্বার সেক্টর সেকশন কমান্ডার হিসাবে। এবং এই সাব সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মৃত: বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন চুন্নু।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সামছ উদ্দিন উনার যুদ্ধের স্মরণীয় ঘটনাগুলোর মধ্যে তিনি বলছিলেন বঙ্গবন্ধুর সরাসরি নির্দেশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ৩০ থেকে ৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধা চারুয়াপাড়া ক্যাম্প স্বাধীন করি এবং সেখানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করি । বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সামছ উদ্দিন তিনি আরো জানান সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন ছিল নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুরের বিজয়পুর ক্যাম্প স্বাধীন করার সময়।

ক্যাপ্টেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহানের নেতৃত্বে সেদিন জীবনের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি নিয়ে বিজয়পুর ক্যাম্প স্বাধীন করেছিলেন এবং পাক বাহিনীর ৭৯ সেনা কে হত্যা করা হয়েছিল। সেই অপারেশনের সময় সান্তোস নামে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছিল । বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সামছ উদ্দিন ১৯৭৪ সালে শ্যামগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্রিয়া শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। শিক্ষকতার জীবনেও তার ছিল গৌরবময় সাফল্য।

তিনি গর্ব করে বলেন আমার ছাত্র দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিসিএস ক্যাডার, প্রশাসনিক ক্যাডার ,ডাক্তার ,ইঞ্জিনিয়ার , এবং অনেক প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি আমার ছাত্র ।২০০৯ সালে শ্যামগঞ্জ হাই স্কুল থেকে অবসরে চলে আসে। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সামছ উদ্দিন ব্যক্তিগতভাবে তিনি এখনো একটি টিনশেডের ঘরে থাকেন। জীবনের শেষ সময়ে এসে তার এখন একটাই চাওয়া সরকারিভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যে বীর নিবাস তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে সেটার সুবিধা যেন তিনি পান ।

আর বীর নিবাসের জন্য বর্তমান গৌরীপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোঃ আব্দুর রহিম এর কাছে আবেদন জমা দিয়েছেন। এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুর রহিম বলেন, মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সামছ উদ্দিন উনার বীর নিবাস এই আবেদনটি আমরা হাতে পেয়েছি ।

তিনি বলেন ২০২২ সালে প্রথম দফায় ৩০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার বীর নিবাস তৈরি করা হয়েছে। সামনে যে বীর নিবাস এরজন্য অনুদান আসবে সেখানে আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সামছ উদ্দিনকে আওতা ভুক্ত করবো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here