প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মোঃ মাহফুজুর রহমান,গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)সংবাদদাতাঃ ‘প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবেনা’ এই ঘোষণা শোনার পর কৃষক শেখ সাদী অনুধাবন করেন বোরো ধান কাটা হয়ে যাওয়ার পর প্রায় চার মাস অনাবাদি থাকে ফসলের জমি। বিষয়টি নিয়ে ভাবেন তিনি। ঠিক করেন এ বছর থেকে নিজের জমিতে আউস ধানের আবাদ করার।
নিজের জমিতে আউসের বীজতলা করে চারা তৈরীও করেন। সিদ্ধান্ত নেন নিজের জমি চাষের পাশাপাশি গ্রামের অন্য কৃষকদেরও চারা দিবেন আউস ধান আবাদ করার জন্য। নিজের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছেন ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার কড়মরিয়া গ্রামের কৃষক শেখ সাদী। নিজের বাড়িতে ৩৫ জন কৃষককে ডেকে এনে বিনামূল্যে আউসের চারা বিতরণকরাহয়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন্নাহার লিপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে চারা বিতরণ করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিমের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন গৌরীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, গৌরীপুর পাবলিক কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম মিন্টু, গৌরীপুর সাংবাদিক ঐক্য ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহাম্মদ, শিক্ষক জহিরুল হুদা লিটন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই বক্তব্যে কৃষক শেখ সাদী বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে।
এ বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়েই আমি নিজে বোরো চাষের পর চার মাস অনাবাদির সময়ে আউস আবাদ করার সিদ্ধান্ত নেই। গ্রামের অন্য কৃষকদের আউস আবাদ করতে বললে তারা আউসের চারার সংকটের কথা বলে। পরে আমি সিদ্ধান্ত নেই সব কৃষককে বিনামূল্যে চারা দিব। আজকে আমার সে ইচ্ছার বাস্তবায়ন হল। আমি কোন ধনী মানুষনা। নিজের ধান বিক্রির টাকায় আমি আউসের বীজ কিনে বীজতলা করি। আজকে মোট ৩৫ জনকে চারা দেওয়া হয়েছে। আশপাশের কৃষক ভাইদের আমার মোবাইল ফোন নাম্বার দেওয়া আছে।
চাইলে আরও অর্ধশতাধিক কৃষককে চারা দিতে পারব। চারা প্রদানঅনুষ্ঠানে কৃষিকর্মকর্তা লুৎফুন্নাহার লিপি বলেন, আমরা আউস উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের প্রণোদনা দিয়ে থাকি। আউশ আবাদ বাড়াতে কৃষক শেখ সাদীর উদ্যোগ খুব ব্যতিক্রম লাগলো। সাধারণত আমরা সরকারিভাবে বিনামূল্যে সার বা বীজ বিতরণের অনুষ্ঠানে যাই। আজ একজন কৃষক নিজের উদ্যোগে এমন অনুষ্ঠান আয়োজন করেছেন। আমি খুব আনন্দিত। এ বছর এ উপজেলায় ২২০ হেক্টর জমিতে আউশের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।